1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কোটি কোটি টাকার লগ্নি-প্রস্তাব

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৩ জানুয়ারি ২০১৭

কলকাতায় দু'‌দিনের বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের শেষ দিনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি স্বয়ং জানিয়ে দিলেন যে, এই সম্মেলন ‘‌সুপার, সুপার, সুপার সাকসেস'‌!‌

https://p.dw.com/p/2WEeC
মমতা ব্যানার্জি
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলন ‘‌ডেস্টিনেশন‌ বেঙ্গল'‌ প্রথমদিনেই ৩০ হাজার কোটি টাকার লগ্নি প্রস্তাব পেয়েছিল৷ দ্বিতীয় দিন, সম্মেলনের সূচনা পর্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা করলেন, ২ লক্ষ ৩৫ হাজার ২৯০ কোটি টাকার লগ্নি-প্রতিশ্রতি এসেছে, বা সমঝোতাপত্র, অর্থাৎ ‘‌মেমোরান্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং'‌, বা এমওইউ সই হয়েছে৷ যদিও এটা সবারই জানা, যে লগ্নির প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবিক লগ্নি এক নয়৷ এমনকি এমওইউ সই হয়ে যাওয়ার পরও বহু লগ্নিকার শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে যান৷ এই বাংলার ক্ষেত্রেই তেমন ঘটনা বার বার ঘটেছে৷ সেটা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী জানালেন যে, গত দু'‌বছরের বাণিজ্য সম্মেলনে মোট ৪ লক্ষ ৯৩ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি এসেছিল৷ আর তার মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ৪০ শতাংশ৷ মমতা বলেন, সর্বভারতীয় নিরিখে ৪০ শতাংশ নেহাত খারাপ নয়৷ কিছু কিছু রাজ্যে তো প্রতিশ্রুতিই সার, কাজের কাজ কিছু হয় না!‌ এই কটাক্ষ ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাটের দিকে, যেখানে প্রচারের প্রাবল্য সত্ত্বেও বিনিয়োগ আসছে নাকি কম!‌

ডয়চে ভেলের মুখোমুখি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বাণিজ্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের শুরু করিয়ে দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী এদিন রওনা হয়ে যান উত্তরবঙ্গ সফরে৷ সম্মেলনের ভার দিয়ে যান রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের হাতে৷ তবে তার আগে মমতা ধন্যবাদ জানান সম্মেলনে উপস্থিত ২৯টি দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের৷ বলেন, এঁরা আসায় বাংলার জোর বাড়ল৷ প্রতিবেশী চীন বাংলায় বিনিয়োগ করতে রাজি হয়েছে৷ উৎসাহ দেখিয়েছে জাপান, রাশিয়া, নরওয়ে, ইটালি, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি৷ দৃশ্যতই খুশি এবং উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এই শিল্প সম্মেলন সুপার, সুপার, সুপার সাকসেস৷ এরপর সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলা৷ দেশি-বিদেশি শিল্পপতিদের উদ্দেশ্যে মমতার অভয়বাণী — নির্দ্বিধায়, নিশ্চিন্তে বাংলায় লগ্নি করুন৷ কোনো সমস্যা হলে সরকার আছে, ২৪ ঘণ্টায় সমাধান হয়ে যাবে৷

মুখ্যমন্ত্রীর পর অর্থমন্ত্রী সম্মেলন পরিচালনার ভার নিয়ে ওই ২,৩৫,২৯০ কোটি টাকার লগ্নি প্রস্তাবের বিস্তারিত হিসেব দেন৷ এর মধ্যে সবথেকে বেশি, ৬১,৭৬৫.‌৭ কোটি টাকা লগ্নির প্রস্তাব এসেছে প্রত্যক্ষ উৎপাদন এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে৷ তথ্য-প্রযুক্তি ও টেলিকম খাতে এসেছে ১৮,৫৪০.‌৭ কোটির প্রস্তাব৷ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য খাতে মিলেছে ১০,৬৪৯.‌৩৯ কোটি টাকা লগ্নির প্রতিশ্রুতি৷ এছাড়া শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধি, পর্যটন ও হোটেল শিল্প, স্বাস্থ্য পরিষেবা ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখা গেছে৷

অর্থমন্ত্রী এ দিনই জানিয়ে দেন, আগামী বছর ১৬ এবং ১৭ জানুয়ারি বাণিজ্য সম্মেলন হবে৷ রাজারহাটে নতুন কনভেনশন সেন্টার তৈরি হচ্ছে৷ তার কাজ সময়মতো শেষ হয়ে গেলে ওখানেই হবে সম্মেলন, যেখানে আনুমানিক ৩০০০ প্রতিনিধি যোগ দেবেন৷ আর তার আগে, ২৬ ও ২৭ নভেম্বর এশীয় বাণিজ্য সম্মেলন হবে কলকাতায়, যে সম্মেলন গতবার হল ব্যাংককে৷ ৭৫টি দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধি অংশ নিয়েছিলেন সেই সম্মেলনে৷ কলকাতায় এই মাপের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের গুরুত্বই আলাদা, বলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র৷ আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছেন তিনি৷ বাংলায় শিল্পায়নের জন্য একটি ‘কোর কমিটি' তৈরি করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, যে কমিটির চেয়ারম্যান হলেন রাজ্যের প্রথম সারির শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা৷ নতুন শিল্প-প্রস্তাব সরাসরি তাঁকেই মেসেজ করে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে৷ সম্ভবত সরকারি দীর্ঘসূত্রিতা এড়িয়ে শিল্পায়নে আরও গতি আনতেই এই নতুন ব্যবস্থা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান