1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘অকেজো' বস্তুতে আমোদ

৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

প্রয়োজনের বস্তুকে অপ্রয়োজনীয় করে তুললেই কি তার মর্যাদা বোঝা যায়? গ্রিসের এক ডিজাইনার দৈনন্দিন জীবনের এমন সব বস্তুর মধ্যে রদবদল করে ঠিক সেই কাজই করছেন৷ অন্যদেরও তিনি এমন লাগামহীন কল্পনায় উদ্বুদ্ধ করছেন৷

https://p.dw.com/p/3P2Rc
DW Euromaxx - Designprojekt The Uncomfortable
ছবি: DW

ডিজাইনার ও স্থপতি হিসেবে কাটেরিনা কাম্প্রানি দৈনন্দিন জীবনের অনেক বস্তু অকেজো করে তোলেন৷ যেমন এমন এক ঝাঁঝরি, যা দিয়ে গাছে পানি দেওয়া সম্ভব নয়৷ অথবা এমন ঝাঁটা, যা দিয়ে ঘর সাফ করা যায় না৷ তিনি এমন এক হাঁড়িও সৃষ্টি করেছেন, চুলা থেকে যা নামাতে গেলে দেখা যাবে, যে দুটি হ্যান্ডেলই একই দিকে রয়েছে৷

এমন সব উদ্ভট সৃষ্টিকর্মের সার্থকতা ব্যাখ্যা করে কাটেরিনা বলেন, ‘‘মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমার লক্ষ্য৷ কিন্তু আমার মতে, অন্য একটি পর্যায়ও রয়েছে৷ আশেপাশের বস্তুগুলিকে উপেক্ষা না করাই এর উদ্দেশ্য৷ নির্দিষ্ট নিয়মনীতি অনুযায়ী সেগুলি ডিজাইন করা হয়েছে৷ সেই নিয়ম ভাঙলে মানুষ তখনই সেগুলির মর্যাদা টের পায়৷ আমাদের তাই সীমানা অতিক্রম করে ভাবতে হবে৷''

কাটেরিনা আসলে এথেন্সে স্থপতি হিসেবে কাজ করেন৷ সময় পেলেই তিনি ‘দ্য আনকমফর্টেবল' নামের ডিজাইন প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন৷ এর মধ্যেই ৩০টিরও বেশি বস্তু সেই সংগ্রহে জমা হয়েছে৷ এর মধ্যে কয়েকটি বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা হয়েছে৷

ইন্টারনেটে এমন সব অদ্ভুত বস্তু ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে৷ গ্রিসের এই ডিজাইনার এমন উদ্ভট সৃষ্টির কাজে মেতে থাকেন৷  যেমন তিনি এবার একটি টুথব্রাশ সৃষ্টি করেছেন, যা একেবারেই ব্যবহারের উপযোগী নয়৷ তবে এমন ‘পাগলামি'-র পেছনে যথেষ্ট পরিশ্রমও রয়েছে৷

অপ্রয়োজনীয় যত সৃষ্টি

কাটেরিনা বলেন, ‘‘মানানসই বস্তু বাছাই করাই সবচেয়ে জরুরি কাজ৷ সেটির নিজস্ব প্রয়োগ থাকতে হবে এবং দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় বস্তু হিসেবে সেটি উপেক্ষিত হবে৷ তারপর আমি কল্পনায় বস্তুটির ব্যবহার নিয়ে ভাবি৷ তার মধ্যে একটি পথ আমি বানচাল করে দেই৷ স্কেচ করার সময় যে আইডিয়া আমার মুখে সবচেয়ে বেশি হাসি ফোটায়, সেটি নিয়েই আমি কাজ চালিয়ে যাই৷''

বিভিন্ন ওয়ার্কশপে তিনি অন্যদেরও ব্যবহারের অযোগ্য বস্তুর ডিজাইন করতে শেখান৷ অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে তিনি সেই সব ‘অকেজো' আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করে বেশ মজা পান৷ কাটেরিনা তার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘ওয়ার্কশপের মাধ্যমে আমি আমার চিন্তাধারা ছড়িয়ে দেবার সুযোগ পাই৷ অন্যরা কীভাবে নির্দিষ্ট কোনো বস্তু নিয়ে কাজ করেন, সেটা দেখে আমি উদ্বুদ্ধ হই৷ এই সব আইডিয়া আমাকে প্রেরণা জোগায়৷''

অংশগ্রহণকারীরাও বাঁধাধরা ছকের বাইরে ভাবনাচিন্তা করতে ভালবাসেন৷ কেউ এই ওয়ার্কশপের পর বাসার অনেক বস্তুর মধ্যে হাস্যরস খুঁজে পান৷ কেউ বা দৈনন্দিন জীবনে অসম্ভব – এমন ভাবনাচিন্তার দিশা জেনে মুক্তির স্বাদও পেয়েছেন৷ কারণ সাধারণ পরিস্থিতিতে তো সবকিছুই চালু থাকে এবং মানুষের কাজে লাগে৷

কাটেরিনা কাম্প্রানি এর মধ্যেই গোটা ইউরোপে নিজের কাজের প্রদর্শনী করেছেন৷ তাঁর ওয়ার্কশপগুলিও ‘আনকমফর্টেবল' সংকলনের ছোটখানো প্রদর্শনী৷ এই প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘দ্য আনকফর্টেবল নামের প্রকল্প এমন এক সময়ে জন্ম নিয়েছে, যখন অনেক কিছুই আমার জন্যই অস্বস্তিকর ছিল৷ আমি ডিজাইনার হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সংকটে জর্জরিত গ্রিসে সেটা সহজ ছিল না৷ তখন আমি ডিজাইনার হিসেবেই অস্বস্তিকর সৃষ্টির পথে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম৷ সেটা ছিল আমার পরিস্থিতির বহিঃপ্রকাশ৷''

এমন অস্বস্তিকর সৃষ্টির কাজ অব্যহত রয়েছে৷ কাটেরিনা কাম্প্রানির মাথায় এমন অনেক ‘অকেজো' আইডিয়া রয়েছে৷

টেওডোরা মাভ্রোপুলস/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য