1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অনলাইনে নিয়ন্ত্রণ আসছে

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১০ নভেম্বর ২০১৫

সাইবার বা অনলাইন হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে গত দেড় বছরে বাংলাদেশের সাইবার হেল্প ডেস্কে অন্তত ১২ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে, যার ৭৫ ভাগই ফেসবুকে হয়ারানির৷ সরকারের ধারণা, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করছে সন্ত্রাসীরা৷

https://p.dw.com/p/1H2fC
Symbolbild - Smartphone Stress
ছবি: picture-alliance/dpa

[No title]

বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোনো কাজ হয়নি৷ তাই সরকার এবার তা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিচ্ছে৷ এই নিয়ন্ত্রণের তালিকায় রয়েছে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ সহ আরো বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এবং অনলাইন অ্যাপস, বিশেষ করে কথা বলার অ্যাপস৷ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানায়, বাংলাদেশ এর আগে ফেসবুকসহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমকে ঢাকায় অ্যাডমিন প্যানেল বসানোর অনুরোধ করলেও, তারা তা করেনি৷ আবার আপত্তিকর ‘পোস্ট' এবং ‘অ্যাকাউন্ট' বন্ধ করার আবেদনেও সাড়া দেয়নি তারা৷

তাই এবার বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘সরকার টু সরকার' বা ‘গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট' (জি টু জি) র্পযায়ে চুক্তি করতে যাচ্ছে৷ বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এই চুক্তি করবে৷ চুক্তি হলে ফেসবুক, টুইটার ও ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদি বাংলাদেশ থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি৷

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই দু'দিন আগে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, জঙ্গিরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে অপরাধ করছে৷ তবে এর বাইরে হয়রানির পরিমাণও কম নয়৷ বাংলাদেশের জাতীয় দলের দু'জন ক্রিক্রেটারকে ফেসবুকে চরম হেনস্তা করা হয়েছে৷ এছাড়া নারীদের হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে অহরহ৷

অবশ্য এই নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রশ্ন আছে বিশ্লেষকদের৷ ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সরকার বেশ কিছু দিন ধরেই অনলাইনের ওপর নানা ধরণের নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা বলছে৷ এটা তারা বলছে সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনের কথা বলে৷ কিন্তু বাস্তবে, এর বাইরে সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে পুলিশ বা প্রশাসনের দক্ষতা কতটুকু – তা প্রশ্ন সাপেক্ষ৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘সরকারের নানা গোয়েন্দা ‘ডিভাইস' আছে অনলাইন নজরদারির জন্য৷ এমনকি তারা ভাইবার কথোপকথন রেকর্ডেও সক্ষম হয়েছে এর আগে৷ আমরা দেখেছি রাজনৈতিক নেতাদের টেলিফোন সংলাপ রেবর্ড করা হয়েছে, হচ্ছে৷ কিন্তু অপরাধীদের টেলিফোন কলের রেকর্ড আমরা পাচ্ছি না৷ নিহত প্রকাশক দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হককে টেলিফোনে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে, কিন্তু তাঁর কল রেকর্ড পায়নি পুলিশ৷''

Sheikh Hasina
‘‘জঙ্গিরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে অপরাধ করছে’’ শেখ হাসিনা বলেন৷ছবি: Reuters

জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার জানান, ‘‘আমি এত কথা বললাম এ জন্য যে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য যদি হয় মানুষের কন্ঠরোধ বা বাকস্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ করা, তাহলে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ অপরাধ শুধু অনলাইন কেন, নানা মাধ্যমেই হয়৷ তাই বলে সেই মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে তার কোনো মানে নেই৷ পুলিশ বা গোয়েন্দারা তাদের তৎপরতার মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনবে, এটাই আমরা চাই৷''

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুকে ব্যক্তির চরিত্রহনন, যৌন হয়রানি বা নানা ধরণের উসকানির দেয়ার মতো ঘটনা ঘটে৷ কিন্তু এ সব ঘটনায় জড়িতদের আটক হতে আমরা না দেখলেও, মন্ত্রী-এমপিদের নিয়ে কোনো কথিত আপত্তিকর ‘স্ট্যাটাস' দিলে আমরা সেই স্ট্যাটাস-দাতাদের আটক হতে দেখি৷''

ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন বাংলাদেশের ব্লগাররা

তাঁর মতে, ‘‘নিয়ন্ত্রণের চেয়ে আইন এ সব সাইবার অপরাধ দমনে কার্যকর হতে পারে৷ কিন্তু সাইবার অপরাধ দমনে যেসব আইন আছে, তা দিয়ে মানুষকে হয়রানি করা যায়, অপরাধীদের ধরা যায় না৷''

প্রসঙ্গ, সরকার অনলাইন সংবাদ-পত্র বা নিউজ পোর্টালকেও নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসছে৷ আগামী ১৫ই ডিসেম্বরের মধ্যে নিবন্ধনের আবেদন করতে হবে৷ এরপর তথ্য মন্ত্রণালয় তাদের নির্ধারিত নীতিমালার আলোকে নিবন্ধন দেবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান