1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অনিদ্রায় ভরসা ঘুমের ওষুধ

ব্রিগিটে ওস্টারাথ/আরবি২৩ অক্টোবর ২০১৩

ঘুমের ওষুধের খুব একটা সুনাম নেই৷ বলা হয় এসব বিপজ্জনক ও আসক্ত করে৷ কিন্তু অনিদ্রা যাঁদের নিত্যসঙ্গী তাঁদের কাছে ঘুমের ওষুধের দিকে হাত বাড়ানো ছাড়া আর কোনো গতি থাকে না৷ আর এরকম ঘটনা ঘটছে হামেশাই৷

https://p.dw.com/p/1A3v9
Autor Dan Race Portfolio ansehen Bildnummer 36770769 Land Deutschland
ছবি: Fotolia/Dan Race

আনে-মারিও একজন ভুক্তভোগী৷ ১৯ বছর আগে দেখা দেয় এই যন্ত্রণা৷ আনা মারির ভাষায়, ‘‘তা ছিল ১৯টি কষ্টকর বছর৷ অনিদ্রা যাঁদের হয়নি, তাঁরা তা বুঝবেন না৷'' মায়ের মৃতদেহ ছোঁয়ার পর থেকেই শুরু হয়৷ স্মরণ করে বলেন আনে মারি৷ ‘‘আমি জানতাম না মানুষের শরীর এত ঠাণ্ডা হয়৷ এটা ছিল একটা শক৷'' সারা রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেন আনা মারি৷ তারপর আরো অনেক রাত এইভাবে কাটে৷ ছোটেন ডাক্তারের কাছে৷ সেখানে অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি তিনি৷

এখন আনে মারির বয়স ৬৮৷ বাস করেন জার্মানির বন শহরের কাছে লোমার শহরে৷ সেখান থেকে এক ঘন্টার মধ্যেই প্রায় সব ডাক্তারের কাছে পৌঁছাতে পারেন তিনি৷ এইসব চিকিত্সকের কেউ তাঁকে সাহায্য করতে পারেননি৷

অবশেষে এক উপায় বের করেন তিনি৷ প্রতি রাতে চার ভাগের এক ভাগ ঘুমের ওষুধ খাওয়া শুরু করেন৷ ‘‘বছর দশেক আগে আমার মনে হয়েছিল, হয় এই ওষুধ তুমি খাও, নয় মৃত্যুবরণ করো৷ ঘুম পানাহারের মতই জরুরি'', বলেন আনে-মারি৷

Businesswoman sleeping at work © auremar #47175777
অনেক সময় রোগীরা পরদিন সকালে ক্লান্তি বোধ করেন৷ছবি: Fotolia© auremar #47175777

অনিদ্রার কবলে অনেক মানুষ

রবার্ট কখ ইন্সটিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, জার্মানির ২৫ শতাংশ মানুষের মধ্যে অনিদ্রার লক্ষণ দেখা যায়৷ অ্যামেরিকার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ক্রনিক অনিদ্রায় ভোগেন৷ এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর স্লিপ ডিসওর্ডার রিসার্চ'৷

একটি ক্লিনিকের স্লিপিং সেন্টারের প্রধান হান্স গ্যুনটার ভিস জানান, ‘‘রোগীরা শোবার ঘরে এসেও সব চিন্তাভাবনা দূর করতে পারেন না৷ দৈনন্দিন নানা ঘটনা তাদের মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে৷'' এছাড়া শারীরিক কারণেও অনিদ্রা দেখা দিতে পারে৷ যেমন থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের সমস্যাতেও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে৷

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া ঘুমের ওষুধ আছে কী?

গবেষকরা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া ঘুমের ওষুধ আবিষ্কার করার চেষ্টা করছেন৷ কয়েক দশক আগে বারবিচুরেট ঘুমের ওষুধ হিসাবে নাম করেছিল৷ কিন্তু এর উপাদান মানুষকে নির্ভরশীল করে৷ একটি দুঃখজনক ঘটনা থেকে ওষুধটির নাম ছড়িয়ে যায় বিশ্বব্যাপী৷ হলিউডের চিত্রতারকা মেরিলিন মনরো বেশি ডোজে এই ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেন৷

এরপর বাজারে আসে বেনজোডায়াজোপিন৷ এটাও মস্তিষ্কে এমন সংকেত পাঠায় যাতে ঘুম আসে৷ তবে এর উপাদান মস্তিষ্কের অন্যান্য অংশকেও প্রভাবিত করে, যেসব মানুষের অনুভূতি, নড়াচড়ার সমন্বয় ও মনমেজাজের জন্য জরুরি৷ এই ওষুধ এখনও পাওয়া যাচ্ছে৷ তবে এর চেয়েও ভালো একটি বিকল্প এসেছে বাজারে৷ এটির নাম জেড-ড্রাগ বলা হয়৷ এতে কিছু উপাদান রয়েছে, যেগুলির নাম জেড দিয়ে শুরু৷ এই ওষুধও ঘুম পাড়ায়, তবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম৷ এখন অনিদ্রার চিকিত্সায় সাধারণত এই ওষুধও দেওয়া হয়ে থাকে৷

ভেষজ ওষুধও কাজে লাগতে পারে

এছাড়া বালড্রিয়ান বা ভ্যালেরিয়ানার মতো ভেষজ ওষুধও ঘুমের ব্যাঘাত হলে সাহায্য করতে পারে৷ তবে সমস্যাটা হালকা হলেই কেবল এই ওষুধ কাজে লাগে৷ অনিদ্রা জেঁকে বসলে উদ্ভিজ ওষুধ তেমন কাজে লাগে না৷

আধুনিক ঘুমের ওষুধে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম থাকলেও পুরোপুরি মুক্ত নয়৷ অনেক সময় রোগীরা পরদিন সকালে ক্লান্তি বোধ করেন৷ গাড়ি চালাতে পারেন না৷ এই ধরনের ওষুধ দুই সপ্তাহের বেশি নিলে পরে ওষুধ ছাড়া আর ঘুমই আসে না৷ অনেকদিন পর হয়ত কাজই করে না ঘুমের ওষুধ৷

আনে মারি জানান, তিনি ঘুমানোর জন্য সবরকম চেষ্টা করেছেন কিন্তু সফল হননি৷ এজন্য ‘সেল্ফ হেল্প গ্রুপ'-ও গড়ে তুলেছিলেন৷ কিন্তু কিছুদিন পর অংশগ্রহণকারীরা আর আসতে পারেননি৷ ‘‘দিনের পর দিন না ঘুমিয়ে সন্ধ্যার সময় খুব ক্লান্ত থাকতেন তারা৷ তাই এই আসরে আসা সম্ভব হয়নি,'' জানান আনে-মারি৷

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, ঘুমের ট্যাবলেট সাময়িকভাবে নেওয়া যেতে পারে৷ কিন্তু স্থায়ী সমাধান হতে পারেনা৷ ওষুধ দিয়ে লক্ষণটা কমানো যায় কিন্তু অনিদ্রার আসল কারণ দূর করা যায় না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য