1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘অন্ধ আশাবাদ নিয়ে দেশের নেতা হওয়া যায় না'

১০ জুলাই ২০১৯

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হবার দৌড়ে বরিস জনসন ও জেরেমি হান্ট একমাত্র টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিলেন৷ ব্রেক্সিটের প্রশ্নে তাঁরা অবশ্য কোনো স্পষ্ট পথ দেখাতে বিফল হলেন৷ অ্যামেরিকার সঙ্গে উত্তেজনার বিষয়টিও উঠে এলো৷

https://p.dw.com/p/3LpsT
বরিস জনসন ও জেরেমি হান্ট
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Rousseau

ব্রিটেনের আগামী প্রধানমন্ত্রী কে হচ্ছেন, চলতি মাসের শেষেই তা জানা যাবে৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রার্থী তালিকায় অবশিষ্ট দুই ব্যক্তি এক টেলিভিশন বিতর্কে সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরলেন৷ দুজনেই রক্ষণশীল টোরি দলের৷ একজন প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আরেকজন বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ দুজনের সামনেই প্রধান চ্যালেঞ্জ ব্রেক্সিট৷ দুজনেই এই কঠিন বাস্তবের মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ব্রিটেনের জন্য সেরা সমাধানসূত্র তুলে ধরার অঙ্গীকার করছেন৷ কিন্তু তাঁদের মধ্যে কেউই এখনো পর্যন্ত ব্রেক্সিট সংক্রান্ত অপ্রিয় কিছু প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব দিতে পারেন নি৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও তাঁরা সেই খোলস থেকে বেরিয়ে এলেন না৷

টোরি দলের সদস্য ও ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মানদণ্ডে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন৷ যুক্তি ও তর্কের বদলে আবেগ, উৎসাহ ও জোরালো বার্তাকে সম্বল করেই তিনি সেই পথে এগিয়ে যেতে চান৷ এর আগে বার বার বেফাঁস মন্তব্য করে নিজের পায়ে নিজেই কুড়ুল মেরেছেন তিনি৷ তাই দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী হবার দৌড়ে তিনি সংবাদমাধ্যমকে সযত্নে এড়িয়ে চলেছেন৷ সে কারণেও মঙ্গলবারের টেলিভিশন বিতর্ক বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছিল৷ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট কৌতূক করে তাঁর সম্পর্কে বলেন, ‘‘বরিস আপনার কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আপনার দিকে তাকিয়ে এমনভাবে হাসবে, যে আপনি সেই প্রশ্নই ভুলে যাবেন৷'' তাঁর মতে, রাজনীতিক হিসেবে এই গুণের কদর করা গেলেও প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য এমন স্বভাব মানানসই নয়৷ শুধু ‘অন্ধ আশাবাদ' নিয়ে দেশের নেতা হওয়া যায় না, বলেন হান্ট৷

প্রার্থী হিসেবে এতদিন কোণঠাসা থাকলেও মঙ্গলবার জেরেমি হান্ট নিজেকে দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্ন নেতা হিসেবে তুলে ধরার কোনো সুযোগ হাতছাড়া করেন নি৷ নম্র স্বভাব, ক্ষুরধার যুক্তি, স্পষ্ট অঙ্গীকারের মাধ্যমে তিনি নিজেকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদের যোগ্য হিসেবে তুলে ধরেন৷ আগামী ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করতে তিনি বদ্ধপরিকর হলেও ইইউ ও ব্রিটেনের সংসদের অবস্থানকে খাটো করে দেখছেন না তিনি৷ তাই সব রকম সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত হয়ে তিনি ব্রিটেনকে ইইউ থেকে বার করতে চান৷

ব্রেক্সিটের প্রশ্নে ইইউ ও ব্রিটিশ সংসদ নতুন প্রধানমন্ত্রীর নীতি অগ্রাহ্য করলে আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা সম্পর্কেও প্রশ্ন তোলেন বিতর্ক অনুষ্ঠানের সঞ্চালক৷ কিন্তু জনসন ও হান্ট নিজেদের সাফল্য সম্পর্কে কোনোরকম সংশয়ের কারণ দেখছেন না৷ তবে বিরোধী লেবার দল নতুন প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে গণভোটের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে৷ সে ক্ষেত্রে দল হিসেবে লেবার ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে যাবার পক্ষে অবস্থান নিতে চলেছে৷

আন্তর্জাতিক মঞ্চে ব্রিটেনের মর্যাদা ও স্বার্থ তুলে ধরার প্রশ্নেও দুই প্রার্থীর মধ্যে সংঘাত দেখা গেল মঙ্গলবার৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প-এর ঘনিষ্ঠ ও অনুরাগী হিসেবে পরিচিত বরিস জনসন দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সংঘাতের প্রশ্নে স্পষ্ট অবস্থান এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন৷ অন্যদিকে জেরেমি হান্ট মঙ্গলবারই এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প-এর বক্তব্যের জোরালো বিরোধিতা করে লেখেন, যে ওয়াশিংটনে রাষ্ট্রদূত বাছাইয়ের এক্তিয়ার ব্রিটেনের হাতেই থাকবে৷

উল্লেখ্য, ওয়াশিংটনে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের কিছু মন্তব্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রোষে ফেটে পড়েছেন এবং একাধিক টুইট বার্তায় ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত, বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে, এমনকি রানি এলিজাবেথের বিরুদ্ধেও তোপ দাগছেন৷

এসবি/কেএম (এএফপি, ডিপিএ)