অবশেষে ছাড়া পেল বিহারের পণবন্দি তিনজন পুলিশ কর্মী
৬ সেপ্টেম্বর ২০১০৯-দিন পণবন্দি থাকার পর বিহারের তিনজন পুলিশকর্মী বিনাশর্তে ছাড়া পাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের মাথাব্যথা আপাততঃ দূর হলেও মাওবাদীদের লাল সঙ্কেত খাঁড়ার মত ঝুলে রইল মাথার ওপর৷ বিহার বিধানসভার নির্বাচনের আর মাত্র মাস তিনেক বাকি৷ রাজ্যের ৩৮টি জেলার মধ্যে ৩১টি জেলা মায়াবাদী কবলিত৷ মাওবাদীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে ভয় পাচ্ছেন নীতিশ কুমার, পাছে মায়াবাদীরা নির্বাচন ভণ্ডুল করতে বড় রকম হামলা চালায় ভোটের সময়৷ আজ পাটনায় এক সংবাদ সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী সেই উদ্বেগ ব্যক্ত করে বলেন, এই ধরণের ঘটনার এটাই শেষ নয়, আরো হতে পারে৷ এজন্য তৈরি থাকতে হবে সবাইকে৷ শুধু পুলিশকে নয়, কেন্দ্রকেও৷ ভয়মুক্ত পরিবেশে ভোটের জন্য তিনি প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বলেছেন নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় সরকারকে৷ পাশাপাশি তিনি মাওবাদীদের সহিংসতা বর্জন করে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে এসে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সামিল হবার আহ্বান জানান৷
মায়াবাদীরা বিনাশর্তে কেন এদের ছেড়ে দিল, এর উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার ঝেড়ে কাশলেন না৷ শুধু বলেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে এবিষয়ে কোন চুক্তি হয়নি৷ জনসাধারণ এবং সর্বদলীয় বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলির আবেদনে সাড়া দিয়েই মাওবাদীরা পণবন্দীদের ছেড়ে দেয়৷ কিন্তু অন্যরা মনে করছেন, পণবন্দিদের পরিবারের মানবিক আবেদনেই তাঁদের ছেড়ে দেয়া হয়৷ ছাড়া পাওয়া একজন পণবন্দিও বলেন সেকথা৷
আজ সকালে লখিসরাই জেলার ছানান-কাজরা পাহাড়ি জঙ্গলে চোখ বেঁধে এনে এই তিনজন পুলিস কর্মীকে ছেড়ে দেয় মাওবাদীরা৷ উল্লেখ্য, এখানেই চতুর্থ পুলিশ কর্মীকে হত্যা করে ফেলে গিয়েছিল মাওবাদীরা৷ ২৯শে অগাস্ট পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মাওবাদীদের হাতে মারা যায় ৭জন পুলিশ, আহত হয় ১০জন৷ ৪জনকে পণবন্দি করে৷
বিহারে বিরোধী রাজনৈতিক দল আর জে ডি প্রধান লালু প্রসাদ মনে করেন, এর কৃতিত্ব নীতিশ কুমারের নয়, কৃতিত্ব মাওবাদীদের মানবিকতা৷ লোক জনশক্তি পার্টির প্রধান রামবিলাস পাসওয়ান বলেন, মাওবাদীদের মোকাবিলায় নীতিশ কুমার ব্যর্থ৷ উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের মত বিহারে যৌথ বাহিনী গঠনে রাজ্য সরকার কোন আগ্রহ দেখায়নি৷ বলেছে, বিকাশই এদের মোকাবিলার প্রধান হাতিয়ার৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন