1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অরণ্য সংরক্ষণে চ্যালেঞ্জ

২৮ ডিসেম্বর ২০১৬

মধ্য অ্যামেরিকার বেলিজ প্রাণিসম্পদ রক্ষার যথেষ্ট উদ্যোগ নিচ্ছে৷ কিন্তু তার বিপুল ব্যয়ভার বহন করা কঠিন৷ চোরাশিকারীদের হাত থেকে প্রাণীদের রক্ষা করাও এক বড় চ্যালেঞ্জ৷ এক উদ্যোগের আওতায় সেই প্রচেষ্টা সফল করে তোলার কাজ চলছে৷

https://p.dw.com/p/2UwOn
ছবি: Brianne Fischer

মধ্য অ্যামেরিকার দেশ বেলিজ-এর জঙ্গল নানা প্রজাতির প্রাণীতে সমৃদ্ধ৷ সেখানকার চিকিবুল জঙ্গলে চলছে খাদক ও খাদ্য হওয়ার লড়াই৷ প্রায় ১,৭০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার এই জঙ্গলকে বেলিজ-এর অলঙ্কার বলা হয়৷

ন্যাশানাল পার্ক রেঞ্জাররা জঙ্গলের সুরক্ষায় নিয়োজিত৷ বিপজ্জনক এই কাজের স্বার্থে তাঁদের অস্ত্র নিয়ে ঘুরতে হয়৷ ক্যামেরায় তাঁদের মুখ দেখানো নিষেধ৷ একমাত্র দলের নেতা আমাদের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত৷ পার্ক  ম্যানেজার ডেরেক চ্যান বলেন, ‘‘হ্যাঁ, আমার দিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে৷ আমি সৈন্য অথবা রেঞ্জারদের সঙ্গে টহল দিচ্ছিলাম৷ জঙ্গলে লোকে আমাদের দিকে গুলি চালিয়েছে৷ কখনো তাদের দেখা যায়, কখনো যায় না৷ প্রাণীদের সুরক্ষার কাজে এসে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়৷''

আমরা গুয়াতেমালা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে৷ সীমানা জঙ্গলের মধ্য দিয়ে চলে গেছে৷ প্রতিবেশী দেশের চোরাশিকারীরা বেআইনিভাবে বেলিজ-এ ঢুকে জঙ্গলে লুটপাট করে৷ তারা স্থানীয় গাছপালা ও প্রাণী মারে, চুরি করে, সোনার খোঁজ করে, বেআইনি মারিইয়ুনা প্ল্যান্টেশন চালায়৷ ডেরেক চ্যান বলেন, ‘‘এই পথে মানুষের কোনো কার্যকলাপ চলছে কিনা, তা দেখতে আমরা এসেছি৷ যদি দেখি কেউ নেই, তখন আর এখানে টহল দেবার প্রয়োজন নেই৷''

প্রাণিসম্পদ রক্ষায় নতুন উদ্যোগ

সদ্য কাটা ডালপালা দেখে বোঝা যাচ্ছে, যে সম্প্রতি এখানে কেউ এসেছিল৷ পায়ের ছাপও চোখে পড়ছে৷ বেশ গভীর সেই ছাপ৷ অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি ভারি কিছু নিয়ে হেঁটে গেছে৷ সম্ভবত জঙ্গল থেকে বেআইনি কিছু সঙ্গে নিয়ে৷ আজ রেঞ্জাররা অপরাধীকে ধরতে পারেননি৷

প্রাকৃতিক স্বর্গীয় পরিবেশে অপরাধ এক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা৷ সম্প্রতি গোলাগুলির সময়ে গুয়াতেমালার এক তরুণ নিহত হয়েছে৷ কয়েক সপ্তাহ আগে প্রাচীন মায়া সভ্যতার এক প্রত্নতাত্ত্বিক সাইটে এক পুলিশ কর্মীকে গুলি করা হয়৷ সরকার জঙ্গলের সুরক্ষায় অনেক বিনিয়োগ করেছে বটে, কিন্তু দেখা যাচ্ছে তা মোটেই পর্যাপ্ত নয়৷

বেলিজ চিড়িয়াখানায় দর্শকরা দেশের প্রাণিসম্পদের বৈচিত্র দেখার সুযোগ পান৷ সেখানে শুধু দেশীয় প্রাণী রাখা হয় – যেমন বেলিজ-এর জাতীয় প্রাণী টেপির৷ জাগুয়ারও রয়েছে, যা সাধারণত শুধু দেশের বনে-জঙ্গলেই দেখা যায়৷

হানা সেন্ট লিউস মার্টিনেস দেশের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বন পরিচালন দপ্তরে কাজ করেন৷ তিনি বায়োফিন নামের উদ্যোগের হয়েও সক্রিয় রয়েছেন৷ বেলিজ-এর প্রাণিবৈচিত্র কর্মসূচির আর্থিক ব্যয় নির্ধারণের লক্ষ্যে এই উদ্যোগ শুরু হয়েছে৷ হানা বলেন, ‘‘সুরক্ষার কাজ মোটেই সস্তার নয়৷ আমরা বনেজঙ্গলে প্রাণীদের বসবাসের জায়গার সুরক্ষার জন্য কখনো মূল্য ধরে দিই না৷ বায়োফিন এর ব্যয়ভার বিশ্লেষণ করে বায়োডাইভার্সিটি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সাহায্য করতে চায়৷''

চিকিবুল জঙ্গল এই প্রকল্পের অন্যতম মূল অঞ্চল৷ চালু হয়ে যাওয়া সংরক্ষণ প্রকল্পগুলির আর্থিক অবস্থা খতিয়ে দেখতে হানা পথে বেরিয়েছেন৷ তিনি ‘লাস কুয়েবাস' নামের গবেষণা কেন্দ্রে চলেছেন, যেখানে টিয়া জতীয় পাখির ব্রিডিং করানো হয়৷

এক ডজনেরও বেশি স্কার্লেট ম্যাকাউ পাখির বংশবৃদ্ধি করানো হয়েছে এখানে৷ জঙ্গলে চোরাশিকারিরা প্রায়ই তাদের বাসা ভেঙে লুটপাট করে৷ তাদের দেখাশোনা করার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের একজন চিকো৷ জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া পর্যন্ত সে পাখিদের দেখাশোনা করে৷ গবেষণা ও ফিল্ড অ্যাসিস্টেন্ট চিকো বলেন, ‘‘যথেষ্ট তহবিল থাকলে তাদের আরও বেশি করে জঙ্গলে রাখার চেষ্টা করতে পারি৷ জানি, তহবিল জোগাড় করা খুব কঠিন, তবে একেবারে অসম্ভব নয়৷''

অর্থাভাব সব জায়গায় বড় সমস্যা৷ বায়োফিন-এর হানা সেন্ট লিউস মার্টিনেস বলেন, ‘‘আমাদের খুবই উদ্ভাবনশীল হতে হয়৷ কোথা থেকে অর্থ আসছে, তা কী ভাবে চিহ্নিত করতে হয় এবং বায়োডাইভার্সিটি ম্যানেজমেন্ট-এর জন্য কোথা থেকে অর্থ আসবে, তা জানতে হয়৷''

চিকিবাল অরণ্যে এই উদ্যোগের সূচনা ঘটেছে৷ বেলিজ-এর ৪০ শতাংশ সংরক্ষিত এলাকা৷ তার সুরক্ষার ব্যয় কম নয়৷

কাটিয়া ড্যোনে/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান