1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অস্থিরতার আশঙ্কা, ব্যাংককে জরুরি অবস্থা থাকছে

৬ জুলাই ২০১০

এখন শান্ত হলেও ফের অস্থিরতার আশঙ্কা করছে থাইল্যান্ড সরকার৷ সেজন্য জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরো বাড়ানো হয়েছে৷ যদিও মানবাধিকার সংগঠন এবং ব্যবসায়ী গোষ্ঠী জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে৷

https://p.dw.com/p/OBcV
উত্তপ্ত ব্যাংককছবি: AP

বিরোধীদের টানা অবরোধে গত এপ্রিল ও মে মাস জুড়ে উত্তপ্ত ছিলো থাইল্যান্ড৷ তখন সহিংসতায় মারা যায় অন্তত ৯০ জন৷ জরুরি অবস্থা জারি করে তখন কঠোর হাতে বিক্ষোভ দমন করা হয়৷ তার মেয়াদ বুধবার শেষ হওয়ার কথা৷ কিন্তু এর একদিন আগেই জরুরি অবস্থা আরো তিন মাস বহাল রাখার ঘোষণা দিলো সরকার৷ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি আবারো সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে৷ সে জন্যই এই পদক্ষেপ৷

নতুন সিদ্ধান্তের ফলে রাজধানী ব্যাংককসহ ১৯টি প্রদেশে জরুরি অবস্থা বহাল থাকবে৷ যা পুরো দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ৷ তবে আরো পাঁচটি প্রদেশে এতদিন জরুরি অবস্থা থাকলেও তা তুলে নেওয়া হচ্ছে৷ এর কারণ বলা হয়েছে, ওই প্রদেশগুলোতে সহিংসতার আশঙ্কা কম৷

Flash-Galerie Thailand flüchtende Menschen in Bangkok
রেহাই পাচ্ছে না কেউছবি: AP

যে সব স্থানে জরুরি অবস্থা থাকছে, সেসব স্থানে পাঁচজনের বেশি লোক জড়ো হতে পারবে না৷ এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনী সন্দেহভাজন যে কাউকে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়াই ৩০ দিন আটকে রাখতে পারবে৷ জরুরি অবস্থা পর্যায়ক্রমে শিথিল করার কথা সোমবারই জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী অভিজিত ভেজ্জাজিভা৷ তবে এর একদিন পরই দেখা গেলো বিপরীত পদক্ষেপ৷

বিরোধী লালশার্ট বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং অবিলম্বে সাধারণ নির্বাচন দাবি করে আসছে৷ তাদের অবরোধের মুখে দুই মাস আগে গোটা ব্যাংকক প্রায় অচল হয়ে পড়েছিলো৷ পরে সেনাবাহিনী নামিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটানো হয়৷

Proteste in Bangkok Thailand
বিক্ষোভ এখনো চলছেছবি: AP

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, সরকার জরুরি অবস্থা জারি করে বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে৷ জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর সমালোচনা করে থাইল্যান্ডের মানবাধিকার কমিশনের কর্মকর্তা নিরান পিথাকওয়াচ্চারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘এটা গ্রহণযোগ্য নয়৷ যখন সহিংসতা ছিলো, তখন না হয় জরুরি অবস্থা জারি করার একটা কারণ থাকে৷ এখনকার পরিস্থিতি তেমন নয়৷'' বিশ্বে সংঘাত-সহিংসতা পর্যবেক্ষণকারী সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপও জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার জন্য থাই সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷ একইসঙ্গে তারা সতর্ক করে বলেছে, নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া না হলেই বরং পরিস্থিতি অবনতির দিকে মোড় নিতে পারে৷

সাগর কূলের দেশ থাইল্যান্ড পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান৷ সারাবিশ্ব থেকেই পর্যটকরা যান দেশটিতে৷ তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পর্যটন শিল্প ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ তাই ব্যবসায়ীরা চান, জরুরি অবস্থা তুলে নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান৷ ভেজ্জাজিভা সরকার অবশ্য দাবি করে আসছে, লালশার্ট বিক্ষোভের পেছনে দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার হাত রয়েছে৷ ২০০৬ সালে সেনা অভ্যূত্থানে উৎখাত হওয়ার পর থেকে তিনি স্বেচ্ছানির্বাসনে রয়েছেন৷ সরকার যাই বলুক, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর, বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশই গ্রামের দরিদ্র জনগণ৷ এর পাশাপাশি নাগরিক অধিকার আদায়ে সোচ্চার মানুষ এবং বামপন্থীরাও আছেন বিক্ষোভকারীদের দলে৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম