1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘‘আওয়ামী লীগ মনে হয় আর ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে না''

১৭ আগস্ট ২০১৫

তথ্য প্রযুক্তি আইনে গ্রেপ্তার হয়েছেন সাংবাদিক প্রবীর সিকদার৷ ফেসবুকে লেখার মাধ্যমে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সুনাম ক্ষুণ্ণের অভিযোগ তুলে একটি মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে৷

https://p.dw.com/p/1GGjC
Symbolbild Pressefreiheit
ছবি: picture-alliance/dpa/I. Langsdon

মামলার বাদি ফরিদপুরের এপিপি স্বপন পাল বাংলাদেশে ডিডাব্লিউর কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জীবনহানির আশঙ্কা প্রকাশ করে তার জন্য মন্ত্রীকে দায়ী করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন প্রবীর সিকদার৷ এভাবে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে মন্ত্রীর সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে৷

সিকদারের এই স্ট্যাটাসটি টুইটারে শেয়ার করেছেন একজন৷

এদিকে, অবিলম্বে সিকদারের মুক্তি দাবি করেছেন সাংবাদিক থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী সাধারণ নাগরিকরা৷ তাঁরা সাংবাদিক হিসেবে প্রবীর সিকদারের ক্ষুরধার লেখনীর প্রশংসা করে তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য সরকারের সমালোচনা করেছেন৷ কেউ কেউ আওয়ামী লীগ সরকারের এই পদক্ষেপে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন৷

শরিফুল হাসান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘প্রবীর সিকদারের মতন লোকেদের কণ্ঠ, লেখনি, হাত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলদেশকে গড়তে শক্তি যোগায়, সাহস যোগায়৷ এমন কণ্ঠগুলোকে দাবিয়ে দিয়েন না দয়া করে৷ নাইলে আপনাদের পতনের সময় কোনো প্রবীর সিকদার আর হাত বাড়িয়ে দেবে না৷ পা হারিয়েও জাগরণের গান গাইবে না৷''

প্রবীর সিকদার ২০০১ সালে দৈনিক জনকণ্ঠের ফরিদপুর প্রতিনিধি থাকার সময় সন্ত্রাসীর হামলায় গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু জীবনযাপন করছেন৷ তাঁর অভিযোগ, একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন লেখার কারণে মুসার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা ওই হামলা চালায়৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় সিকদার তাঁর পরিবারের ১৪ জনকে হারিয়েছিলেন৷

অমি রহমান পিয়াল তথ্যটি উল্লেখ করে বলেন, ‘‘মুক্তিযুদ্ধে এতগুলো স্বজন হারিয়েছেন, স্বাধীন দেশে চলাচলের পা হারিয়েছেন৷ নীতি এবং বিবেক হারাননি প্রবীর শিকদার৷ হারাননি সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলার অদম্য মনোবল৷ হারাননি লড়ে যাওয়ার স্পৃহা৷ এমন যোদ্ধাকে হারাতে হলে মিত্রের বেশেই তো পিঠে ছুরি মারতে হবে...৷''

ওফিউল হাসনাম রুহিন অবশ্য সিকদারের গ্রেপ্তারের একটি ইতিবাচক দিক খুঁজে পেয়েছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার তো মনে হয় প্রবীর সিকদার আটক হয়ে ভালোই হলো! এবার রাজাকার ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচারের দাবি জোরালো হবে! মন্ত্রী হলেই রাজাকারের গন্ধ গা থেকে মুছে যায় না! যেমন যায়নি মুজাহিদ, নিজামী, আব্দুল আলীম বা সাকার বেলায়!''

শরিফুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘‘কোন পথে যাচ্ছে বাংলাদেশ? যাদের স্বজনদের রক্তে এই দেশ, তারা আজ জেলে৷ আর যারা মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে ছিলো না তারা আজ ক্ষমতার দম্ভে আকাশ ছুঁতে চায়৷ এ কোন বাংলাদেশ?... মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি কি কিছুই দেখেন না? আপনি কী কিছুই শোনেন না? প্রবীর সিকদারররা কবে থেকে আপনার শত্রু হলো? ধিক্কার জানাই নোংরা এই রাজনীতির৷''

প্রায় একই ধরনের প্রশ্ন হাফিজুর রহমান মিতুর মনেও৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা যাচ্ছি কোথায়? আওয়ামী লীগ মনে হয় আর ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে না৷ স্বাধীনতাবিরোধী আর ইসলাম ধর্ম বিরোধী মৌলবাদী জঙ্গিদের সাথে লড়তে লড়তে মন্ত্রী, এমপিরা আজ ক্লান্ত৷ তাই তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাদী জঙ্গি প্রবীর সিকদার দাদাকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছে৷ এতে যদি ঐ ক্লান্ত মন্ত্রীদের ক্লান্তি দূর হয়৷ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সরকারের পুলিশ ব্লগার হত্যাকারী আর লম্বা লিস্ট তৈরিকারীদের ধরতে পারে না৷ কিন্তু নিরীহ প্রবীর সিকদারকে ধরে বেডাগিরি দেখায়৷''

বাপ্পাদিত্য বসু লিখেছেন, ‘‘স্বাধীন দেশে রাজাকার বিজয়ী হবে আর মুক্তিযোদ্ধা পরাজিত হবে – এটা অসহ্য৷''

সংকলন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য