1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডিজিটাল সহকারীও আড়ি পাতে?

১৬ মে ২০১৭

আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় সহকারী হিসেবে এতকাল শুধু স্মার্টফোনের রমরমা ছিল৷ এখন এসে পড়েছে আলাদা ভয়েস অ্যাসিস্টেন্ট৷ তবে সেই খিদমতগারের আবার কান পেতে সব কথা শোনার বদ অভ্যাস আছে৷ অতএব সাবধান৷

https://p.dw.com/p/2cymb
Symbolbild Spionage Spion
ছবি: picture alliance/ZB

কখনো সময় মনে করিয়ে দেবার নির্দেশ, কখনো টিভি চালানোর নির্দেশ – রোব্যার্টো মানসানো এমন হাঁকডাক দিয়েই নিজের সংসার চালান৷ হুকুম পালন করে ছোট্ট এক যন্ত্র৷ ‘হে গুগুল' বললেই ইচ্ছাপূরণ করতে প্রস্তুত সেটি৷ তিনি বলেন, ‘‘দৈনন্দিন জীবনের কিছু কাজ সহজ করতেই আমি এটা ব্যবহার করি৷ রেডিও চালানো, গান শোনা, টেলিফোন এলে গান থামানো – অথবা বাড়ি থেকে বেরোলে সব আলো নেভানোর কাজে৷''

অনেক মানুষ ‘গুগল হোম' বা ‘অ্যামাজন একো'-র মতো ডিজিটাল সহকারী কিনছেন৷ বিশেষ ‘কোড' দিয়ে চালু করা যায় এমন যন্ত্র৷ তারপর ক্লাউড কম্পিউটিং-এর মাধ্যমে প্রশ্ন বা নির্দেশ বিশ্লেষণ করে মোলায়েম নারীকণ্ঠ জবাব দেয়৷

ডিজিটাল সহকারী যখন আড়ি পেতে শোনে

কিন্তু সংগৃহীত তথ্য নিয়ে কী করা হয়? জার্মানির তথ্য প্রযুক্তি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ‘এভি টেস্ট' অ্যামাজন ভয়েস অ্যাসিস্টেন্ট ভালো করে পরীক্ষা করেছে৷ হ্যাকারদের হামলা থেকে সুরক্ষাররক্ষাকবচ আছে বলেই মনে হচ্ছে৷ কিন্তু তথ্য সংরক্ষণের প্রশ্নে বিশেষজ্ঞদের মনে সংশয় রয়েছে৷ আইটি নিরাপত্তা পরীক্ষক মাইক মর্গেনস্ট্যার্ন বলেন, ‘‘এক্ষেত্রে আমরা ঠিক জানি না, আসলে কী হচ্ছে৷ কোন তথ্য অ্যামাজন-এর কাছে যাচ্ছে, সেগুলি কীভাবে বিশ্লেষণ করা ও জমা রাখা হচ্ছে, কে জানে?''

আইটি পরীক্ষকরা জানতে পেরেছেন, যে যন্ত্রের মাইক্রোফোন মিউট করে রাখলেও তথ্য পাঠানো বন্ধ হয় না৷ ইন্টারনেট কোম্পানিগুলি যে তথ্য সংরক্ষণ করে, তা নতুন বিষয় না৷ কিন্তু ভয়েস অ্যাসিস্টেন্ট যন্ত্রের রেকর্ডিং ব্যবহারকারীর অনেক ব্যক্তিগত বিষয় ফাঁস করে দিতে পারে৷ এক বিশেষজ্ঞ বিষয়টি বুঝিয়ে বললেন৷ তথ্য সংরক্ষণ গবেষক মাক্সিমিলিয়ান ফন গ্রাফেনস্টাইন বলেন, ‘‘কণ্ঠের সুর শুনে সেই মুহূর্তে কোনো ব্যক্তির মানসিক অবস্থা ও আবেগ বোঝা যায়৷ আরেকটি দৃষ্টান্ত হলো, সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে নিয়মিত আচরণও বোঝা যায়, যেমন কোন সময়  সাধারণত আমি বাড়ি ফিরি৷''

শিশুরা এমন যন্ত্র ব্যবহার করলে বিষয়টি অন্য মাত্রা পায়৷ যেমন এক ব্রিটিশ পুতুলের নাম কায়লা, যা একইভাবে কাজ করে৷ ভয়েস অ্যাসিস্টেন্ট-এর বিক্রি কম হচ্ছে না৷ জার্মানিও এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়৷ কিন্তু যখন জানা গেল, যে কথোপকথন আড়ি পেতে শোনা যায়, তখন সবার টনক নড়লো৷ জার্মানির যে কর্তৃপক্ষ আড়িপাতার মোকাবিলা করে, তাদের হস্তক্ষেপে পুতুলটিকে বাজার থেকে বিদায় নিতে হয়েছে৷

তা সত্ত্বেও ভয়েস অ্যাসিস্টেন্ট-এর আকর্ষণ বেড়েই চলেছে৷ কিন্তু ব্যবহারকারী কীভাবে নিজস্ব তথ্য সংরক্ষণ করবেন? মাক্সিমিলিয়ান ফন গ্রাফেনস্টাইন বলেন, ‘‘সবার আগে আমি গোপনীয়তা সংক্রান্ত নীতি পড়ে দেখার পরামর্শ দেবো৷ তখন সে নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু পদক্ষেপ নিতে পারবে, যেমন যন্ত্রটি সবসময় চালু না রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷ তাছাড়া অতিথি এলে তাদের বলতে পারবে, আমরা যা কথা বলছি, তা কিন্তু এই যন্ত্র রেকর্ড করছে৷''

রোব্যার্টো মানসানো-ও এমন কিছু ব্যবস্থা নিয়েছেন৷ তিনি নিয়মিত গুগল-এর সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে ঢুকে নিজের কার্যকলাপের চিহ্ন মুছে দেন৷ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছেন তিনি৷ রোব্যার্টো বলেন, ‘‘যখন মনে করি, এই যন্ত্রের এখন কান পেতে শোনার কোনো প্রয়োজন নেই, মাইক্রোফোন বন্ধ করার সুযোগ সত্ত্বেও আমি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেই৷''

যারা গুগল হোম অথবা অন্য কোম্পানির সহকারীর প্রেমে পড়েছেন, তাঁদেরও সতর্ক থাকা উচিত, যাতে তথ্যের অপব্যবহারের সম্ভাবনা না থাকে৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান