1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আপনার মোবাইল ফোন সেট এখন একটি ‘মিনি-ব্যাংক’

২৬ এপ্রিল ২০১১

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৭ কোটি৷ সেই তুলনায় ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে এমন লোকের সংখ্যা অনেক কম৷ তাই যাদের অ্যাকাউন্ট নেই, অথচ মোবাইল ব্যবহার করেন তারাও এখন সীমিত আকারে হলেও ব্যাংকের সেবা ভোগ করতে পারবেন৷

https://p.dw.com/p/113rc
ছবি: AP

শেরপুর জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম বেতমারি৷ সেখানে বাস করেন সাইদ মিয়া৷ বাজারে তার একটি দোকান রয়েছে৷ সেখানে সবজি বিক্রি করেন তিনি৷ সাইদের একটি মোবাইল ফোন রয়েছে৷ যেটা দিয়ে তিনি ঢাকার বিভিন্ন বাজারের সবজির দাম জানতে পারেন৷ সেই অনুযায়ী তিনি তার ব্যবসার নানা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন৷ কিন্তু সাইদের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই৷ কারণ তার আশেপাশে কোনো ব্যাংকের শাখা নেই৷ তাছাড়া অ্যাকাউন্ট খোলা এবং সেটা ধারাবাহিকভাবে ব্যবহার করে যাবার মতো সামর্থ্যও তার নেই৷

সাইদের মতো এমন সবার সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক৷ তারা ১০টি ব্যাংককে ‘মোবাইল ব্যাংকিং' ব্যবস্থা চালুর অনুমতি দিয়েছে৷ ইতিমধ্যে সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিয়েছে বেসরকারি ডাচ-বাংলা ব্যাংক৷ সঙ্গে অংশীদার হিসেবে রয়েছে মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক ও সিটিসেল৷

মোবাইল ব্যাংকিং

এ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম ডাচ বাংলা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাসেম মোহাম্মদ শিরীনের কাছে৷ তিনি বললেন, এটা এমন এক ব্যবস্থা যেটা দিয়ে মানুষ ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট না থাকলেও শুধু মোবাইল ব্যবহার করেই টাকা জমা ও তোলার কাজ করতে পারবে৷ এজন্য কোনো ব্যাংকে যেতে হবে না৷ সিটিসেল বা বাংলালিংকের কাছাকাছি কোনো এজেন্টের কাছে গেলেই হবে৷ তাই বলে যে শুধু সিটিসেল বা বাংলালিংকের সিম ব্যবহারকারীরাই এই সুবিধা পাবেন তা কিন্তু নয়৷ অন্য সিম ব্যবহারকারীরাও এই সুবিধা পাবেন৷ এজন্য যেটা করতে হবে, সেটা হচ্ছে একটি সহজ ফর্ম পূরণ৷ আর তার সঙ্গে দিতে হবে ছবি আর জাতীয় পরিচয়পত্র৷

Flash-Galerie Mobile World Congress Barcelona 2011
ছবি: AP

কী কী করা যাবে?

ডাচ বাংলা ব্যাংকের ঐ কর্মকর্তা বলেন, শুধু টাকা জমা দেয়া বা তোলাই নয়, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, ইউলিটি বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা বিতরণ, রেমিট্যান্স দেয়া ও সরকারি অনুদান প্রাপ্তির মতো কাজও করা যাবে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে৷ আর এসব কিছু করতে খরচও খুব বেশি হবে না বলে জানিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তা শিরীন৷ তিনি বলেন, এই এপ্রিল মাস জুড়ে তারা নিজেদের মধ্যে এই ব্যবস্থাটা পরীক্ষা করে দেখছেন৷ সামনের মাস অর্থাৎ মে থেকেই সাধারণ মানুষ এই সেবা গ্রহণ করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷

বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য

কেন বাংলাদেশ ব্যাংক এই সেবা চালু করতে আগ্রহী হলো সেটা জানতে চেয়েছিলাম গভর্নর ড. আতিউর রহমানের কাছে৷ তিনি বললেন, ‘‘প্রথম উদ্দেশ্য হলো আমরা আরও দ্রুত অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছুতে চাচ্ছি৷ প্রচলিত ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে এখনো অনেকের কাছে সেবা পৌঁছানো যাচ্ছে না৷ কিন্তু বাংলাদেশের প্রায় সাত কোটি মানুষ মোবাইল ব্যবহার করছে৷ প্রত্যন্ত এলাকার একজন ছোট্ট দোকানিও মোবাইল ব্যবহার করে ঢাকার কারওয়ানবাজারের জিনিসপত্রের দাম জানতে পারছেন, যেটা একটা নতুন চিত্র৷ তাই আমরা মনে করছি, যদি এই ‘মোবাইল ব্যাংক'টাকে সীমিত আকারেও ব্যবহার করা যায় তাহলে অনেক মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে৷''

মোবাইল ব্যাংকিং চালুর সিদ্ধান্তের পর থেকে এটা কতটা নিরাপদ হবে সেটা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন৷ এ ব্যাপারে গভর্নর বলেন, ‘‘এটা নিরাপদ৷ কারণ ব্যাংক যেমন যে কোনো ডিপজিটরের টাকা নিরাপদ রাখে সেরকম মোবাইল ব্যাংকিং'এর মাধ্যমে যারা লেনদেন করবেন তাদের টাকার নিরাপত্তাও ব্যাংক দেবে৷ তারপরও যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে ব্যাংকই সেটার পূর্ণ দায়িত্ব নেবে৷''

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক