1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আপনার শহরে দূষণের মাত্রা জানতে চান?

১ জুলাই ২০১৯

বায়ু দূষণ আজ গোটা বিশ্বে বড় সমস্যা৷ এ সংক্রান্ত তথ্যের উপর শুধু রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ বা বিজ্ঞানীদের একচেটিয়া কর্তৃত্ব নেই৷ কিছু স্যাটেলাইট বিশ্বব্যাপী দূষণের চিত্র সর্বসাধারণের নাগালে নিয়ে আসছে৷

https://p.dw.com/p/3LNaR
Brennender Plasikmüll
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Durand

২০১৮ সালের জুলাই মাসে গ্রিসের রাজধানীর প্রতি গোটা ইউরোপের নজর ছিল৷ প্রথমে পাইনউড বনে আগুন লাগে, তারপর শহরের কিছু এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে৷ প্রায় ৮০০ কিলোমিটার উচ্চতায় এক স্যাটেলাইট ধোঁয়া ও আগুনের উপর নজর রাখছে৷

স্যাটেলাইটে তোলা ছবির মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল যে এ ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবেই আগুন লাগানো হয়েছিল৷ উদ্ধারকর্মীরা ৮৩ জনের লাশ উদ্ধার করেন৷ ১৮৭ জন মানুষ গুরুতর আহত হয়েছিলেন৷

ভারতের বড় শহরে প্রতিদিন শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে দুষিত বায়ু লক্ষ লক্ষ মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করে৷ সেইসঙ্গে বিশাল মাত্রায় পার্টিকুলেট ম্যাটার বা বস্তুকণাও তাদের শরীরে ঢোকে৷ এর ফলে যে রোগব্যাধী হয়, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এ বিষয়ে নিখুঁত তথ্য পাওয়া যায়৷ চীনের রাজধানীতেও বস্তুকণার পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত মাত্রার তুলনায় দশ গুণ বেশি৷

এখনো পর্যন্ত মাটির মধ্যে যথেষ্ট পরিমাপ করা হয়নি৷ মহাকাশ থেকে তোলা ছবির মাধ্যমে জমির মধ্যে ক্ষতিকারক পদার্থের ঘনত্ব আরও নিখুঁতভাবে নির্ণয় করা সম্ভব৷ মানুষের সুরক্ষার জন্য গৃহিত পদক্ষেপ কাজ করছে কিনা, তাও বোঝা যায়৷ সে কারণে ২০১৩ সালে ইইউ কমিশন এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ এর আওতায় ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা একঝাঁক স্যাটেলাইট মহাকাশ পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিল৷

সেগুলির মধ্যে ‘সেন্টিনেল ফাইভপি' নামের এক স্যাটেলাইটও ছিল৷ পৃথিবীর বুকে বাতাসের মান পরিমাপ করতে সব রকম প্রাসঙ্গিক তথ্য সরবরাহ করাই সেটির দায়িত্ব৷ ২০১৭ সালের ১৩ই অক্টোবর সেই স্যাটেলাইট মহাকাশের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়৷

তারপর থেকে এই পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট ২৪ ঘণ্টা ধরে বাতাসের মান সংক্রান্ত তথ্য পাঠিয়ে চলেছে৷ ৮০০ কিলোমিটার উচ্চতায় সেটি দিনে ১৪ বার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে চলেছে৷ এই স্যাটেলাইট বস্তুকণা, মিথেন, ওজোন, কার্বন মোনোক্সাইড বা সালফার ডাই অক্সাইডের মতো নানা রাকম ক্ষতিকারক পদার্থ পরিমাপ করে৷

২০১৮ সালের মে মাসে সেন্টিনেল ফাইভপি হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের এক অগ্নুৎপাতের সাক্ষী হয়েছিল৷ বিশাল পরিমাণ সালফার ডাই অক্সাইড বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে৷ সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা এই প্রথম বিষাক্ত মেঘের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে সেই মেঘ কোথায় ছড়িয়ে পড়বে, সে বিষয়ে পূর্বাভাষ দিতে পেরেছেন৷ ফলে বিপর্যয়ের সময় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অনেক সুবিধা হয়েছে৷

এই স্যাটেলাইট আরও কিছু কাজ করতে পারে৷ দুর্গম অথবা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন জায়গা সম্পর্কেও তথ্য সরবরাহ করে এটি৷ যেমন বিশ্বের উত্তরতম শহর৷ সেখানে রাশিয়ার শিল্পক্ষেত্রের জন্য নিকেল প্রক্রিয়াকরণ করা হয়৷ স্যাটেলাইটের ছবির ভিত্তিতে বিশাল এলাকা জুড়ে সালফার ডাই অক্সাইডের দূষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে৷

গোটা বিশ্বের উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে৷ মানচিত্রে লাল অংশগুলি সালফার ডাই অক্সাইডের উচ্চ মাত্রা চিহ্নিত করছে৷ শুধুমাত্র পারস্য উপসাগর অঞ্চলে পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী দেশগুলিতেই এই সমস্যা নেই৷

ইউরোপের উপরও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে৷ সেন্টিনেল ফাইভপি স্যাটেলাইটের তোলা ছবি সবার জন্য বিনামূল্যে পাওয়া যায়৷ ফলে যে কেউ বায়ু দূষণের উৎস শনাক্ত করতে পারে৷

জার্মানির কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি কি বাতাসে অতিরিক্ত মাত্রায় সালফার ডাই অক্সাইড নির্গমন করে? ভবিষ্যতে কার্যত যে কেউ তার উপর নজর রাখতে পারে৷ জার্মানির শহরগুলির বাতাসে কি মাত্রাতিরিক্ত নাইট্রোজেন অক্সাইড রয়েছে? সেন্টিনেল ফাইভপি-র মতো স্যাটেলাইট বিশ্বের যে কোনো নাগরিককে পরিবেশের উপর নজর রাখার সুযোগ দিচ্ছে৷

ইয়োসেফিন কারোল/এসবি 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান