1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগানিস্তানের নারীরা কেমন আছেন?

২৪ অক্টোবর ২০১০

১৪ শ বছর আগেই ইসলামে নারী পুরুষকে কিছু কিছু ব্যাপারে সমান অধিকার দেওয়া হয়েছিল৷ তার মধ্যে রয়েছে কাজ করার অধিকার, ভোট দেওয়ার অধিকার এমন কী নিজের জীবনসঙ্গী খোঁজার অধিকারটিও নারীর রয়েছে৷

https://p.dw.com/p/PmGp
ছবি: AP

কিন্তু মুসলমান অধ্যুষিত দেশ আফগানিস্তানে তালেবান আমলে কী এই অধিকার রক্ষা করা হয়? হয় নি৷

অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান শাসনামলে আফগানিস্তানে নারীরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে৷ তাদের কাজ করা নিষেধ ছিল, কোন একজন পুরুষ ছাড়া বাড়ি থেকে বেডর হওয়া নিষেধ ছিল, নিষেধ ছিল কোন পুরুষ চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নেওয়া৷ মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে চলার সাথে সাথে এমন কী তাদেরকে চোখও ঢেকে চলতে বাধ্য করা হতো৷ তালেবান আমলের আগে যে সব নারী ছিলেন পেশায় চিকিৎসক অথবা শিক্ষক, হঠাৎই তাদেরকে বাধ্য করা হয়েছে ভিক্ষা করতে অথবা সংসার চালানোর জন্যে এমনকি পতিতাবৃত্তি বেছে নিতে৷

কিন্তু কেন? এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো আমরা দিতে পারবো না৷ তবে একটা প্রশ্নের উত্তর আমরা খুঁজতে পারি , আর তা হচ্ছে, তালেবান উৎখাতের পরবর্তী নয় বছরে কতোটা উন্নতি ঘটেছে আফগানিস্তানের নারীর জীবনে? আর এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই কথা বলেছি টি আই এম জাহিদ হোসেনের সঙ্গে ৷ পেশাগত কারণে তিনি প্রায় তিনটি বছর আফগানিস্তানে কাটিয়ে মাসখানেক আগে বংলাদেশে ফিরে গেছেন৷ আফগানিস্তানে নারীর অধিকার সম্পর্কে তিনি বললেন, ‘‘আমার অভিজ্ঞতা বলে, মেয়েরা সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত৷ তারা ঘরে, কর্মস্থলে সবজায়গায় উপেক্ষিত৷ এবং সমস্ত দায়ভারগুলো তাদের ওপরে বর্তায়৷ অনেক যুদ্ধ করে তাদেরকে বের হয়ে আসতে হয়, সব ঝুঁকি এবং সামাজিক নির্যাতনগুলো নারীদের ওপরে এখনও এবং সমানভাবেই বর্তমান৷

Frauen in Afghanistan Islam Burka NO Flash
ছবি: AP

শহরে মেয়েদের উপস্থিতি তুলনামুলকভাবে বেশি হলেও, যদি গ্রামের দিকে যান তাহলে সেখানকার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন৷ প্রকাশ্যে কোন মেয়েকে দেখা যাবে না৷ যেকোন শিক্ষিত বা চাকরিজীবী মেয়েকেও একজন পুরুষ সঙ্গী অবশ্যই সঙ্গে নিতে হবে এটি বাধ্যতামুলক৷ ‘মাহরাম' ছাড়া তারা কোথাও যেতে পারে না৷''

কয়েকশ বছর ধরেই আফগানিস্তানে নারী উপেক্ষিত, নিষ্পেষিত, নির্যাতিত এবং অবহেলিত৷ ইসলাম ধর্মে বলা থাকলেও, নারীকে তার ন্যায্য অধিকার দিতে অস্বীকার করা হয় আফগানিস্তানে৷ সরকারিভাবে ডিক্রি জারি করে নারীকে এই অধিকার দিতে অস্বীকার করা হয়, অথবা তাদের স্বামী, বাবা এবং ভাইরাই তাদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে৷ তবে আশার কথা, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই আফগানিস্তানের জাতীয় সেনাবাহিনীতে নারী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিলেন ২৯ জন৷ সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে গ্র্যাজুয়েশন পাওয়া এই মেয়েরা সবাই বলেছেন, আমরা দেশের সেবায় কাজ করতে প্রস্তুত৷ দেশটিতে নারীর বর্তমান অবস্থান এবং মাতৃমৃত্যুর হার নিয়ে জাহিদ হোসেন বললেন,‘‘ ইউএনডিপির একটা হিসাবে দেখা যায়, সেখানে প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যুর হার ১ হাজার ৯ শ৷ বিশ্বে মাতৃমৃত্যুর হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে যে কটি দেশে রয়েছে, তাদের মধ্যে একটি আফগানিস্তান৷ এই থেকেই বোঝা যায় মহিলাদের সার্বিক অবস্থাটা৷ পরিবর্তন কিছুটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ কিছু জায়গায় মেয়েদেরকে কাজ করতে দেখা যায় ইদানিং৷ সম্প্রতি পুলিশ বাহিনীতেও মেয়েদেরকে নিয়োগ করা হয়েছে৷ তবে শিক্ষার ক্ষেত্রে , এখনও এক মিলিয়নের বেশি মেয়ে স্কুলের বাইরে আছে৷''

প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক