আফগানিস্তান থেকে বিপুল অঙ্কের আর্থিক সাহায্য উধাও
১১ আগস্ট ২০১০সবার মনে একটাই প্রশ্ন৷ তা হল, এত টাকা এসেছে বিভিন্ন দেশ থেকে সাহায্য হিসেবে কিন্তু সেই বিপুল অর্থ গেল কোথায়? বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে কয়েক শ' কোটি মার্কিন ডলার শুধুমাত্র রাজধানী কাবুল থেকেই উধাও হয়ে গিয়েছে৷ গত তিন বছরে আর্থিক যত সাহায্য পাওয়া গিয়েছিল সে টাকার কোন হিসেবই পাওয়া যাচ্ছে না৷ টাকা কোথায়, কীভাবে খরচ করা হয়েছে তা কেউই জানেনা৷ আফগান অর্থমন্ত্রী ওমর জাখিলওয়াল পুরো বিষয়টির অনুসন্ধানের দাবি জানিয়েছেন৷ বলছেন,‘প্রায় ৪০০ কোটি টাকার হিসেব মিলছে না৷ গত তিন বছরে আমাদের কাছে খবর, কাবুল বিমানবন্দর থেকেই এই বিপুল অর্থ যেন বাতাসে মিলিয়ে গেছে৷'
অথচ কাগজে কলমে এই বিশাল পরিমাণ অর্থ আফগানিস্তানে পৌঁছেছে যে, তা কিন্তু নিশ্চিত৷ তার প্রমাণও রয়েছে৷ কিন্তু কোথায় সেই অর্থ? বলা হচ্ছে, সাহায্যের জন্য যত অর্থ আফগানিস্তান পেয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ দেশ থেকে বের হয়ে গেছে৷ কীভাবে ? ওমর জাখিলওয়াল আরো জানান, ‘এর বেশিরভাগই হচ্ছে দেশ পুর্নগঠনের জন্য বৈদেশিক সাহায্য৷ বিদেশি বড় বড় কোম্পানিগুলো আফগানিস্তান পুর্নগঠনের মোটা মোটা অঙ্কের চুক্তি পেয়েছে৷ কয়েকশ' মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই করেছে একেকটি কোম্পানি৷ তারাই এসব অর্থ বের করে নিয়ে গেছে৷ অথচ সে অনুযায়ী কাজ করা হয়নি৷ '
এসব ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর পশ্চিমা বিশ্বও বেশ ক্ষুব্ধ৷ কারণ, আফগানিস্তানের আর্থিক সাহায্য বের হয়ে দুবাইতে এসে আটকে যাবে তাও তারা কখনো ভাবেননি৷ প্রশ্ন করা হয়েছে, যাদের হাতে এই টাকা পৌঁছেছে তাদের কি এই অর্থের বেশি প্রয়োজন নাকি সেই আফগানের – যার ঘর-বাড়ি যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে গেছে, যার যাওয়ার জায়গা নেই, নেই এতটুকু মাথা গোঁজার ঠাই৷
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে এই অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে আফগান সরকারের যোগসূত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন৷ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের জরিপ অনুযায়ী দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে আফগানিস্তানের অবস্থান দ্বিতীয়৷
আফগান অর্থমন্ত্রী ওমর জাখিলওয়াল এ জন্যই দাবি জানিয়েছেন তদন্তের৷ কারণ, কাবুলের বাইরে এই সাহায্যের একটি কড়িও এসে পৌঁছায়নি৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়