1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগানিস্তান দাতা সম্মেলনে নতুন ধারণার অভাব

ফ্লোরিয়ান ভাইগান্ড/এসি৫ ডিসেম্বর ২০১৪

আফগান বেসরকারি সংগঠন এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংগঠনগুলির মধ্যে বিরোধ যতদিন চলবে, ততদিন পশ্চিমি দেশগুলির কাছ থেকে নতুন অর্থসাহায্য পাওয়া যাবে না, বলে মনে করেন ডয়চে ভেলের ফ্লোরিয়ান ভাইগান্ড৷

https://p.dw.com/p/1DzcE
Symbolbild Hilfsorganisationen in Afghanistan
ছবি: picture alliance/Tone Koene

যখন আর কোনো পন্থা থাকে না, শুধু তখনই একটি ওয়ার্কিং কমিটি সৃষ্টি করা হয় – কিংবা আরো উচ্চ পর্যায়ে – একটি সম্মেলন আহ্বান করা হয়৷ বিভিন্ন আফগান এনজিও, আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংগঠন এবং উচ্চপদস্থ রাজনীতিকরা দু'দিন ধরে শলা-পরামর্শ করলেন, বেসামরিক উপায়ে আফগানিস্তানের সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি কিভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, সে বিষয়ে৷ এক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল নতুন ধ্যানধারণার – যা বিশেষ দেখা যায়নি৷

১৩ বছর ধরে আফগানিস্তান আন্তর্জাতিক সাহায্য পাচ্ছে৷ আজও সে দেশ শতকরা ৯০ ভাগ বিদেশি সাহায্যের উপর নির্ভরশীল৷ আফগানিস্তানের নাম করলেই আজও মানুষ সর্বাগ্রে দুর্নীতি, অপরাধবৃত্তি ও রাজনৈতিক সহিংসতার কথা ভাবে৷ এই আফগানিস্তানই ছিল ন্যাটোর সবচেয়ে ব্যয়বহুল অভিযান, যা আর তিন সপ্তাহে পরে শেষ হচ্ছে – অথচ আফগানিস্তান আবার একটি নতুন হিংসার তাণ্ডবে ভেসে যাচ্ছে৷ ১৩ বছর ধরে সামরিক অভিযান এবং কোটি কোটি ডলার বেসামরিক সাহায্য কি তবে ব্যর্থ হয়েছে?

Deutsche Welle REGIONEN Asien Paschtu Dari Florian Weigand
ফ্লোরিয়ান ভাইগান্ডছবি: DW/P. Henriksen

পুরোপুরি নয়: বিভিন্ন স্কুল গড়ে উঠেছে, বিশেষ করে মেয়েদের জন্য৷ সজীব মিডিয়া, সেই সঙ্গে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের প্রসারের ফলে আফগানরা আজ বহির্বিশ্বের সঙ্গে অনেক বেশি সংযুক্ত৷ এবং আফগানরা দেখিয়েছেন যে, তারা গণতন্ত্র কামনা করেন এবং গণতন্ত্রে বাস করতে প্রস্তুত ও সক্ষম৷ সর্বাধুনিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন চলে সুদীর্ঘ ছয় মাস ধরে; দু-দু'বার ভোট হয়; দলে দলে সেই ভোটে অংশগ্রহণ করে আফগানরা তাদের মনোবল ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন৷ ভোটে যদি ব্যাপক কারচুপি ঘটে থাকে, তবে সেটা সাধারণ ভোটারদের দোষে নয়; সেজন্য দায়ী কাবুলের ক্ষমতাসীনরা এবং ভোটকেন্দ্রে তাদের দালালরা৷

তবুও দেখা যাচ্ছে যে, আন্তর্জাতিক দাতাদেশ ও প্রতিষ্ঠানগুলি যেন কিছুটা বিমুখ হয়ে পড়েছে: লন্ডন সম্মেলনে কোনো নতুন আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি৷ ওদিকে আফগান এনজিও এবং বিদেশি ত্রাণ সংগঠনগুলি ইতিমধ্যেই অনুভব করছে যে, আর্থিক সম্বল ফুরিয়ে আসছে৷ পশ্চিমি সরকারবর্গ আগের মতোই বিপুল অর্থ প্রদান করছে বটে, কিন্তু যুগপৎ সুশীল সমাজ ও গণতন্ত্রের প্রগতির জন্য প্রদেয় অর্থের পরিমাণ সীমিত করেছে৷ তার পরিবর্তে তারা এমন সব প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে, যা স্বদেশের করদাতা ও ভোটারদেরও স্বচ্ছন্দে প্রদর্শন করা চলে৷ জার্মানি যে নতুন অর্থসাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা-ও রাস্তাঘাট তৈরি, বৈদ্যুতিকরণ, হাসপাতাল তৈরি – এবং স্বভাবতই নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রকল্পের জন্য৷

এবং আফগান এনজিও-রা যতদিন শুধু তাদের সংকীর্ণ জগৎ ও স্বার্থের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকবে; যত কম অর্থেই হোক, তাদের অর্থবহ বা নিরর্থক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে – ততদিন পর্যন্ত এই পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন ঘটবে না৷ এখানে কোনো নারীকল্যাণ কর্মসূচি, ওখানে কোনো শান্তি আন্দোলন, এভাবে দাতাদেশ ও প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রতীত করা যাবে না৷ তার পরিবর্তে চাই একটি সামগ্রিক স্ট্র্যাটেজি, যা হয়ত বারংবার নতুন অর্থসংস্থানের চেয়েও বেশি প্রয়োজন৷ সেক্ষেত্রে লন্ডন কোনো প্রগতি আনতে পারেনি৷

অথচ একটি জীবনমুখী, উদ্যম ও ক্ষমতাশীল সুশীল সমাজ গড়ে তোলার উপর নির্ভর করবে, উদারপন্থী শিক্ষক, প্রযুক্তিবিদ অথবা সাংবাদিকরা দেশে থাকবেন, না দেশ ছেড়ে চলে যাবেন৷ আফগানিস্তানে প্রতিদিন যে পরিমাণ হিংসা চলেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এটা অসম্ভব মনে হতে পারে: কিন্তু সেই সুশীল সমাজ গড়ে তোলার প্রেরণা আজও রয়েছে৷ আমি সম্প্রতি কাবুল থেকে আগত এক তরুণ সহকর্মীকে প্রশ্ন করেছিলাম: অক্সফোর্ড থেকে ডিগ্রি নিয়েও তিনি আফগানিস্তানে ফিরছেন কেন? সরাসরি উত্তর এলো: ‘‘ওটা আমার দেশ বলে!''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য