1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘‘ফুটবল হ্যালেলুইয়া’’ প্রদর্শনী

৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪

ফুটবল যে শুধু খেলা নয়, বস্তুত একটা ধর্ম, সেটা কিন্তু সব ফুটবল ফ্যানরাই জানেন৷ তবে ধর্ম না বলে ‘কাল্ট’-ও বলা চলতে পারে একে৷ সেই কাল্ট-কে কেন্দ্র করে একটি নতুন এগজিবিশন শুরু হয়েছে আমস্টারডামে৷

https://p.dw.com/p/1DN6b
Fußball WM Finale Argentinien Deutschland
ছবি: Juan Mabromata/AFP/Getty Images

প্রিয় ক্লাবের জার্সি পরে কবরস্থ হওয়া; সেই কবর যদি আবার স্টেডিয়ামের কাছের গোরস্থানে হয়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা – এ সব তো ‘অন্তিম' ব্যাপার! ফ্যানের জীবদ্দশায় আসছে প্রিয় খেলোয়াড়ের ঘেমো জার্সি; কিংবা সেই প্লেয়ারের নাম ও নম্বর লেখা জার্সির ওপর মহানায়কের হস্তাক্ষর! বেদী ও প্রতিকৃতি সুদ্ধ ফুটবলের গির্জা – প্রার্থনা এবং গোল্ডেন বুট: সব কিছুই পাওয়া যাবে ‘‘ফুটবল হ্যালেলুইয়া'' প্রদর্শনীতে, যা কিনা আমস্টারডাম সেরে ‘ওয়ার্ল্ড টুরে' যাবে৷

আমস্টারডাম মিউজিয়ামের পরিচালক পল স্পিস-এর মতে বহু মানুষের কাছে ফুটবল ধর্মের জায়গা নিয়েছে, যে কারণে ‘‘স্টেডিয়ামগুলো ভর্তি, কিন্তু গির্জাতে মানুষ নেই''৷ ফ্যানদের ভাবসাব, আচার-আচরণও ক্রমেই আরো জটিল, আরো বিচিত্র হয়ে উঠছে: যেন খ্রিষ্টীয় গির্জার আচার-অনুষ্ঠানের অনুকরণে৷ তাই আমস্টারডামের এগজিবিশনে ঢোকার সময়েই আন্তর্জাতিক ফুটবলের ‘হিম' বা ‘অ্যান্থেম'-টি বাজে: ‘ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন'৷ দু'পাশে ফুটবলের দেবতা-উপদেবতাদের ছবি, সেই সঙ্গে ‘ধর্মবিশ্বাস' ও কুসংস্কারের নানা নিদর্শন৷

সুইজারল্যান্ডের বাসেল-এর ইতিহাস সংগ্রহশালা ও আমস্টারডামের মিউজিয়ামটি মিলে ট্রফি, ফ্যানদের মেমোরাবিলিয়া বা স্মারকদ্রব্য, ভিডিও, ফটোগ্রাফ ইত্যাদি সংগ্রহ করেছে৷ প্রদর্শনী চলবে ৪ঠা জানুয়ারি ২০১৫ অবধি৷ আর ফুটবল নিয়ে পাগলামির আদর্শ দেশ যদি কোথাও থাকে, তবে তা নিশ্চয় নেদারল্যান্ডস৷ কোনো আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা এলেই গোটা দেশ কমলা রঙে ভরে যায় – সেটাই জাতীয় ফুটবল দলের জার্সির রং কিনা৷ তবে ফুটবল নিয়ে মাতামাতিতে ইউরোপের বাকি দেশগুলোও কম যায় না৷

প্রতি সপ্তাহান্তে ফ্যানরা দূর-দূরান্তের ফুটবল স্টেডিয়াম অভিমুখে পাড়ি দেন, কেননা তাঁদের প্রিয় দল সেখানে খেলছে৷ স্পিস এই স্টেডিয়ামযাত্রীদের তীর্থযাত্রীর সঙ্গে তুলনা করেন৷ খেলোয়াড়দের খ্রিষ্টীয় সন্তদের মতো ভক্তি করা হয়৷ ক্যাথলিক গির্জার সন্ত হতে গেলে শত শত বছর অপেক্ষা করতে হয়, একাধিক ‘মিরাকল' বা আশ্চর্য ঘটনা ঘটাতে হয়৷ ফুটবলে একটা দারুণ গোল করলে কিংবা একটা পেনাল্টি বাঁচালেই সন্ত হয়ে ওঠা যায়: খ্রিষ্টীয় সন্তদের ‘রেলিক্স' বা স্মৃতিচিহ্নের মতোই সেই প্লেয়ারের পুরনো, ঘেমো জার্সি এবং অটোগ্রাফ পবিত্র, মহার্ঘ বস্তু হয়ে ওঠে৷

প্লেয়ারদের যে সব ডাকনাম দেওয়া হয়, তাতেও ধর্মীয় সংশ্লেষ থাকে: ওলন্দাজ খেলোয়াড় ইওহান ক্রয়েফ-কে তাঁর ফ্যানরা ডাকতেন ‘‘ত্রাণকর্তা'' বলে৷ সেইভাবেই লিওনেল মেসির নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘‘মেসাইয়া'' – অর্থাৎ প্রভুর বার্তা বহনকারী যিশু৷ আর মারাদোনা তো ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে হাত দিয়ে গোল করার পর সেটিকে ‘‘ঈশ্বরের হাত'' বলে অভিহিত করেছিলেন৷ নেপলস-এর একটি বারে মারাদোনার উদ্দেশ্যে যে প্রার্থনাবেদী সৃষ্টি করা হয়েছে, তার পাশের দেওয়ালে মারাদোনার কিছু চুলও লাগানো আছে৷ আমস্টারডামের এগজিবিশনে সেই বেদীটির একটি নকল রাখা হয়েছে বটে, কিন্তু মারাদোনার কেশ পাওয়া যায়নি!

এসি/ডিজি (ডিপিএ)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য