1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘আলীমের কারাদণ্ড'

সমীর কুমার দে, ঢাকা৯ অক্টোবর ২০১৩

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২৷ এর ফলে আলীমকে আমৃত্যু জেলে থাকতে হবে৷

https://p.dw.com/p/19wZE
Bangladeshis living in Stuttgart arranged a protest meeting in demonstrate solidarity with Shahbag protest. The Shahbag Mass Movement of 2013 in Bangladesh began on February 5, 2013 in Dhaka, Bangladesh, with the demand of capital punishment for Abdul Quader Mollah and all other accused war criminals of the 1971 Bangladesh Liberation War. *Adnan Sadeque, a NRB living in Stuttgart shared these photos with DW for online and facebook use.* zugeliefert von: Arafatul Islam
ছবি: Adnan Sadeque

জানিয়েছেন রাষ্ট্র পক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম৷একাত্তরে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগের নেতা হিসাবে তখন জয়পুরহাটে রাজাকার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাপক নিধনযজ্ঞ চালানো আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে বুধবার এই আদেশ দেন চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২৷ ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও শাহিনুর ইসলাম৷ আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে একাত্তরে হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, দেশত্যাগে বাধ্য করা এবং উসকানি ও সহযোগিতার ১৭টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনে রাষ্ট্রপক্ষ৷ এর মধ্যে ৬টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি৷ বাকি অভিযোগগুলোর ২টিতে সাক্ষী আদালতে উপস্থিত করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ৷এছাড়া একটি অভিযোগে আলীমকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷ তিনটি অভিযোগে তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড এবং অন্য চারটি অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷ সাজা হওয়া অপরাধগুলোর মধ্যে হত্যা, গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে৷

১৯১ পৃষ্ঠার রায় পড়ার সময় বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, প্রমাণিত হওয়া অভিযোগগুলোর প্রেক্ষিতে তাঁর সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত ছিল৷ কিন্তু বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷ বেলা পৌনে ১১টার দিকে আলীমের বিরুদ্ধে রায়ের সারসংক্ষেপ পড়া শুরু হয়৷ এর আগে সকাল পৌনে ১০টার দিকে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়৷ গত ২২শে সেপ্টেম্বর মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হওয়ায় রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছিলেন ট্রাইব্যুনাল-২৷ ওই দিনই রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে আবদুল আলীমের জামিন বাতিল করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল৷

Bangladesch Dhaka Proteste
তবে আবদুল আলীম যতদিন বেঁচে থাকবেন তাঁকে কারাগারেই কাটাতে হবেছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images

রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘‘বিচারপতিরা যেটা ভালো মনে করেছেন সেই রায়ই দিয়েছেন৷ রায়ে খুশি বা অখুশি কোনোটাই বলব না৷'' তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কিনা, সে ব্যাপারে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান এই আইন কর্মকর্তা৷

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতা শাহরিয়ার কবীর ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই রায়ে খুশি বা অখুশি হয়েছি কোনোটাই বলুব না৷ তবে ৫৮৫ জন মানুষকে হত্যা করেছেন আবদুল আলীম৷ একাত্তরে তিনি একজন আইনজীবী ছিলেন৷ ফলে তিনি যা করেছেন তা জেনে-বুঝেই করেছেন৷'' শাহরিয়ার কবীর আরও বলেন, সাজা যা-ই হোক এই বিচারের জন্য এতদিন আমরা অপেক্ষা করেছি৷ আসলে আদালত তাঁর পঙ্গুত্বের বিবেচনা করেই তাঁর মৃত্যুদণ্ড দেননি৷ তবে তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন তাঁকে কারাগারেই কাটাতে হবে৷ তিনি বলেন, শীর্ষ ১৫ জন যুদ্ধপরাধীর একজন এই আবদুল আলীম৷ তাই তার মৃত্যুদণ্ড হলেই বেশি খুশি হতাম৷

যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, আলীমের মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় আমরা ব্যথিত-ক্ষুব্ধ৷ তিনি বলেন, একাত্তরে আলীম যে অপরাধ করেছেন, তাতে তাঁর মৃত্যুদণ্ড ছাড়া আর কোনো শাস্তিই হতে পারে না৷ রাষ্ট্রপক্ষ যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন, সেই দাবিও জানান ডা. ইমরান৷ আবদুল আলীমের মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে শাহবাগে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণজাগরণ মঞ্চ৷ দুপুর থেকেই সেখানে চলছে মিছিল-সমাবেশ৷ ক্ষুব্ধ গণজাগরণ কর্মীরা মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন৷ সন্ধ্যায় মশাল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করবেন বলে জানিয়েছেন ডা. ইমরান৷

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২৭ মার্চ জয়পুরহাটের বাড়ি থেকে আলীমকে গ্রেফতার করা হয়৷ এর চার দিন পর তাকে এক লাখ টাকা মুচলেকায় ছেলে ফয়সাল আলীম ও আইনজীবী তাজুল ইসলামের জিম্মায় শর্তসাপেক্ষে জামিন দেয়া হয়, যার মেয়াদ পরে বাড়ানো হয় কয়েক দফায়৷ গত আড়াই বছর জামিনে মুক্ত আলীম আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বনানীতে তার ছেলের বাড়িতে অবস্থান করেন৷ সর্বশেষ ২২শে সেপ্টেম্বর তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য