1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আলো ও পানির সমন্বয়ে অপরূপ সৃষ্টিকর্ম

১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ফ্রান্সের ঐতিহাসিক মেৎস শহর অনেক পর্যটকদের আকর্ষণ করে৷ এবার এক অভিনব উৎসবের আওতায় ডিজিটাল শিল্পের মাধ্যমে শহরে অসাধারণ আবহ সৃষ্টি করা হয়েছে৷ ফলে নতুন করে শহর আবিষ্কারের সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3Pqti
Champs Elysees Paris 1860
ছবি: picture-alliance/akg

আলো যেন বাতাসে ভাসছে৷ ফ্রান্সের উত্তর পূর্বে মেৎস শহরে এক উৎসবে দর্শকরা এমন এক ইনস্টলেশন উপভোগ করার সুযোগ পেলেন৷ ফরাসি শিল্পী জোয়ানি ল্যম্যার্সিয়ে প্রায় আড়াই বছর পরিশ্রম করে ‘কনস্টলেশন' নামের এই আলোকসজ্জা সৃষ্টি করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘কনস্টেলেশন আসলে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডেরই প্রতিফলন৷ আমি নিজে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বিশাল ব্যাপ্তি সম্পর্কে অভিভূত৷ আমার ধারণা সবারই এই অনুভূতি হয়৷ তাছাড়া জ্যামিতিক কাঠামো ও সার্বিকভাবে জ্যামিতি সম্পর্কেও আমার আগ্রহ রয়েছে৷ এই শিল্পকর্ম তাই অনেকটা মহাকাশযাত্রার মতো৷ সেখানে অদ্ভুত জ্যামিতিক নক্সার সাক্ষাৎ পাওয়া যায়৷''

অতি সূক্ষ্ম পানির বিন্দুর পর্দার উপর এই ইনস্টলেশন প্রোজেক্ট করা হয়৷ মেৎস শহরের মাঝে মোসেল নদী থেকে সরাসরি সেই পানি আনা হয়৷ তাই এই সৃষ্টিকর্ম তার প্রদর্শনীস্থানের সঙ্গে জৈব প্রক্রিয়ায় যুক্ত বলা চলে৷ তবে সেটা ছিল বিশাল প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ৷ জোয়ানি ল্যম্যার্সিয়ে এর ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘অনেক পানির প্রয়োজন হয়৷ বিশাল বেগে সেই পানি বাতাসে নিক্ষেপ করতে হয়৷ পানির বিন্দু ভেঙে অতি ক্ষুদ্র করতে হয়, যাতে তা আলো ধারণ করতে পারে৷ তাছাড়া প্রতিটি ক্ষুদ্র বিন্দু ছোট লেন্সের মতো৷ সেগুলি বাতাসেই আলো ভেঙে দেয়৷''

মেৎস শহরে আসা জোয়ানির জন্য ছিল শিকড়ের টানের মতো৷ উচ্চশিক্ষার পর তিনি ফ্রান্স ছেড়ে ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তারপর ব্রাসেলসে বসবাস করেন৷ ২০০৪ সাল থেকে তিনি আলোকশিল্পী হিসেবে কাজ করছেন৷ গোটা বিশ্বে তাঁর প্রোজেকশন দেখানো হচ্ছে৷ নক্সা ও আকার-আকৃতি তাঁকে চিরকাল মুগ্ধ করেছে৷ আলোকেও তিনি মিডিয়াম হিসেবে গণ্য করেছেন৷

ডিজিটাল শিল্পীর কীর্তিতে মুগ্ধ পর্যটকরা

জোয়ানি মনে করেন, ‘‘আলোর মাধ্যমেই আমরা চারিপাশের বাস্তব উপলব্ধি করতে পারি৷ শব্দের মতো অন্যান্য উৎসও কাজে লাগানো যায়, কিন্তু আলোই মূল ভূমিকা পালন করে৷ ভিডিও প্রোজেক্টরের মাধ্যমে আলো বিকৃত করা সম্ভব৷ এমনকি প্রোজেকশনের মাধ্যমে আলোর কারচুপি ঘটিয়ে পরিবেশ ও বাস্তব বদলে ফেলা যায়৷''

মেৎস শহরের উৎসবে অনেক শিল্পী উপলব্ধি পরিবর্তন নিয়ে কাজ করেছেন৷ ফলে দর্শকরা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েছেন৷ উৎসবে ১০ লাখ দর্শক এসেছেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷

‘ডিজিটাল পাথর' নামের সৃষ্টিকর্মও ছিল এই উৎসবের অন্যতম সেরা আকর্ষণ৷ শহরের পুরানো অংশে প্রায় ২ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় ঘরে-বাইরে ১৪টি ইনস্টলেশনের সমন্বয়ে সেটি শোভা পেয়েছে৷

শহরের সংস্কৃতি বিষয়ক কর্মকর্তা আসেন লেকাদির এই উৎসবের দায়িত্ব পালন করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘কনস্টেলেশন মূলত ডিজিটাল শিল্পের উৎসব৷ সেই উৎসব উপলক্ষ্যে আমরা শিল্পীদের কাজ দেই এবং তাঁরাও তাঁদের সৃজনশীলতা উজাড় করে দিতে পারেন৷ আমরা পায়ে হেঁটে মেৎস শহরের আধুনিক ও ঐতিহাসিক অংশ ভ্রমণের কথা ভেবেছি৷ কিছু জায়গা বাছাই করে শিল্পীদের সেই সব জায়গা আবিষ্কার করে মানানসই শিল্পকর্ম সৃষ্টির আমন্ত্রণ জানিয়েছি৷''

বিষয় হিসেবে পানিকেও সেই সৃষ্টির পূর্বশর্ত রাখা হয়েছিল৷ ‘মেৎস শহরের কন্সটেলেশন' উৎসবে প্রযুক্তি ও কাব্যের অপূর্ব মিলন ঘটছে৷

ইয়েন্স ফন লার্খার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য