1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আসলেই কি খালেদা জিয়া অসুস্থ?

সমীর কুমার দে ঢাকা
৩১ মার্চ ২০১৮

নিয়ম অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে কারা কর্তৃপক্ষই সিদ্ধান্ত নেবে৷ তারা বলছে, তাঁর শারীরিক অবস্থার কোনো অবনতি হয়নি৷ অথচ বেগম জিয়ার বিদেশ যাত্রা নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য৷

https://p.dw.com/p/2vHu0
খালেদা জিয়া
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কি আসলেই অসুস্থ? কিংবা অসুস্থ হলে কতটা? এই প্রশ্নের নিশ্চিত কোনো উত্তর নেই রাজনৈতিক দল বিএনপি বা আওয়ামী লীগের কাছে৷ অথচ তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার বিষয়ে চলছে জোর আলোচনা৷

বর্তমানে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসান শুভ৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বাড়িতে থাকা অবস্থায় তাঁর শারীরিক অবস্থা যেমন ছিল, তা থেকে একটুও অবনতি হয়নি৷

‘খালেদা জিয়ার কোনও অসুস্থতা নেই’

তিনি জানান, খালেদা জিয়ার কোনও অসুস্থতা নেই৷ তাঁর সবকিছুই স্বাভাবিক রয়েছে৷

‘‘আমরা নিয়মিত চেকআপ করে তাঁর কোনও অসুস্থতা পাইনি৷ তবে তাঁর বয়স ৭৩ বছর৷ পায়ে একটি অপারেশন আগে করা হয়েছে৷ তাই হাঁটতে একটু সমস্যা হয়৷ এর বাইরে কিছু নয়৷''

জানা গেছে, খালেদা জিয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা কারাগারে একজন চিকিৎসক থাকেন৷ রাতে কেবল তাঁর জন্যই একজন চিকিৎসক কারা ফটকের একটি কক্ষে ঘুমান৷ তাঁর পাশের রুমেই থাকেন একজন নার্স৷ কারাগারের ভেতর নিয়মিত তিনি হাঁটাচলাও করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী৷

আগের দিন বিএনপির তরফ থেকে চেয়ারপার্সনকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবি করা হলেও শনিবার ডয়চে ভেলের কাছে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন যে, বিদেশে নেয়া নয়, বরং তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা যেন বেগম জিয়াকে দেখতে পান সেটিই তাঁদের মূল দাবি৷

‘আমরা তো জানিই না, উনি কেমন আছেন’

‘‘আমরা তো জানিই না, উনি কেমন আছেন৷ কারা কর্তৃপক্ষ গতকাল পর্যন্ত আমাদের কাছে বিষয়টি পরিস্কার করে কিছু বলেনি৷ তারা আদালতে প্রতিবেদন পাঠিয়ে বলেছে, খালেদা জিয়া অসুস্থ এ কারণে তাঁকে আদালতে নেয়া হয়নি৷ সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করি তিনি অসুস্থ৷ আমরা তাঁর চিকিৎসার কথা বলেছি৷'' ডয়চে ভেলেকে বলছিলেন ফখরুল৷

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা বলেছি, আগে তাঁকে মুক্তি দিতে হবে এবং এরপর তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি কোথায় চিকিৎসা করাবেন৷ এর আগে তাঁকে যারা নিয়মিত পরীক্ষা করতেন সেই ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তাঁকে দেখানোর সুযোগ দেয়ার দাবি করেছি আমরা৷''

এদিকে, আগের দিন খালেদা জিয়াকে ‘বিদেশ নেয়া'র জন্য মির্জা ফখরুলের প্রস্তাব লুফে নিয়েছিল আওয়ামী লীগ৷ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টি সত্য হলে, তার (অসুস্থতার) মাত্রা বুঝে তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী সব ব্যবস্থাই সরকার নেবে৷ সুচিকিৎসা যদি দেশে হয় তাহলে দেশে, আর বিদেশে নেয়ার দরকার হলে তাই হবে৷ চিকিৎসকরা যদি বোর্ড বসিয়ে বলেন যে, বিদেশে পাঠাতে হবে, তাহলে পাঠাবো৷''

‘তাঁর চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করা হবে’

এ বিষয়ে শনিবার আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের পার্টির সাধারণ সম্পাদক তো বলেই দিয়েছেন প্রয়োজন হলে তাকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা করানো হবে৷ আমরা তো জানি না তিনি আসলে অসুস্থ্য কি-না৷ এখন তিনি কারাগারে, তাই কারা কর্তৃপক্ষই সিদ্ধান্ত নেবে তাঁর চিকিৎসা আসলে কোথায় করা প্রয়োজন৷ আমরা শুধু বলেছি, তাঁর চিকিৎসার জন্য যে ধরনের সহযোগিতা আমাদের দেয়া দরকার তার সবই আমরা করব৷ এ নিয়ে কোন দ্বিমত নেই৷''

এদিকে, বিদেশে পাঠাতে হলে দুই প্রক্রিয়ায় পাঠানো সম্ভব বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী মনসুর হাবিব৷

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘উনি সাজাপ্রাপ্ত হলেও উনার আপিল এখন উচ্চ আদালতে রয়েছে৷ তাই বিএনপি চাইলে উচ্চ আদালতে এই ধরনের আবেদন করতে পারে৷ আদালত বিবেচনা করে দেখবেন আসলে উনার বিদেশে পাঠানোর প্রয়োজন আছে কি-না?''

‘দুই প্রক্রিয়ায় বিদেশে পাঠানো সম্ভব’

মনসুর বলেন, ‘‘আর সরকার যদি মনে করে, দেশে তাঁর ভালো চিকিৎসা সম্ভব নয়, তাহলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উনাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে৷ সেক্ষেত্রেও আদালতে একটা আবেদন জমা দিয়ে উদ্যোগ নিতে হবে৷''

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট দুর্নীতির মামলার রায়ে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর সাজা হয়েছে৷ গত ৮ ফেব্রুয়ারি ওই রায় ঘোষণার দিন বিকেল থেকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন তিনি৷

 

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও বিদেশ যাত্রা নিয়ে আপনার কী মত? লিখুন নিচের ঘরে৷

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য