1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুর্বিষহ জীবন

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা ২১ আগস্ট ২০১৩

২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আহত অনেকেই সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছেন৷ নিহতদের পরিবারে এখানো দুর্যোগ কাটেনি৷ আহত অনেকের বিদেশে চিকিত্‍সার প্রয়োজন, তাঁরা তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন৷ বিচার হলে শান্তনা পেতেন৷

https://p.dw.com/p/19U79
Krankenschwestern arbeitet am Donnerstag (23.06.2011) in einer Krankenstation in Tongi, einem Vorort von Dhakar in Bangladesh, die von der Bundesregierung unterstützt wird. Das ehemalige Ost-Pakistan, das 1971 seine Unabhängigkeit von Pakistan erkämpfte, gehört zu den ärmsten Ländern der Welt. Foto: Tim Brakemeier dpa
ছবি: picture-alliance/dpa

২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে তখনকার বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হয়েছিলেন৷ আহত হয়েছিলেন তিন শতাধিক৷ আহতদের একজন আওয়ামী মহিলা লীগের মাহবুবা পারভীনকে তখন মৃত ভেবে উদ্ধার করা হয়েছিল৷ তাঁর দেহ পড়েছিল রক্তাক্ত অবস্থায়৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি প্রাণে বেঁচে যান৷

তবে তিনি বেঁচে আছেন মৃত্যুযন্ত্রণা নিয়ে৷ মাহবুবা ডয়চে ভেলেকে জানান, তাঁর শরীরে গ্রেনেডের ১,৮০০টি স্প্লিন্টার রয়েছে৷ এই স্প্লিন্টার নিয়েই গত নয় বছর তিনি অসহ্য যন্ত্রণায় কাতর৷ তাঁর মতে, এই যন্ত্রণা মৃত্যুযন্ত্রণার চেয়েও ভয়ঙ্কর৷ তিনি রাতে ঘুমাতে পারেন না৷ অন্যের সহায়তা ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না৷ তাঁর স্বামী এবং দুই সন্তানের জীবনও তাঁর জন্য দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে৷ ভারতে কয়েকবার গিয়েছেন চিকিত্‍সার জন্য, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি৷ চিকিত্‍সকরা বলেছেন তাঁকে ব্যাংককে নেয়া প্রয়োজন উন্নত চিকিত্‍সার জন্য৷ মাহবুবা জানান, শেষ পর্যন্ত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর তাঁকে চিকিত্‍সার জন্য ১০ লাখ টাকার চেক দেয়া হয়েছে৷

Rioting Bangladesh Jamaat-e-Islami activists vandalise a bus following a verdict banning the party from contesting next year's elections in Bogra, some 120kms north of Dhaka, on August 1, 2013. Bangladesh's main Islamist party was banned from contesting next year's election when the high court ruled that Jamaat-e-Islami's charter breached the country's secular constitution. AFP PHOTO/STR (Photo credit should read STRDEL/AFP/Getty Images)
সেদিনের হামলার ঘটনার বিচার হয়নি এখনও...ছবি: Strdel/AFP/Getty Images

মাহবুবার কথায়, তাঁর দুটি সন্তানের চিকিত্‍সার ভার সরকারের নেয়ার কথা থাকলেও তা নেয়া হয়নি৷ ফলে তাঁর জীবনে এখন আর অন্ধকার ছাড়া কিছুই নেই৷ ঢাকার অদূরে সাভারে নিজ বাড়িতে এখন তিনি যেন শেষ দিনের অপেক্ষায় আছেন৷

গ্রেনেড হামলায় নিহতদের মধ্যে একজন হলেন পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার কলেজ ছাত্র মামুন মৃধা৷ কৃষক পরিবারের সন্তান মামুন ঢাকার সরকারি কবি নজরুল কলেজে এইচএসসি-র ছাত্র ছিলেন৷ ছাত্রলীগ করার সুবাদে তিনি ২১ আগস্টের সমাবেশে যান৷ কিন্তু তাঁকে বাড়ি ফিরে যেতে হয় লাশ হয়ে৷ মামুনের মৃত্যুর পর তাঁদের পরিবারে নিমে এসেছে বিপর্যয়৷ সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবা মোতালেব মৃধা পুত্র হারানোর শোকে নিজেও অসুস্থ হয়ে পরেছেন৷ কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না৷ মামুনের মা মোর্শেদা বেগম ডয়চে ভেলেকে জানান যে, এখন তাঁরা চরম অভাব-অনটনের মধ্যে আছেন৷ তাঁদের দেখার কেউ নেই৷ সরকারের কাছ থেকে দুই লাখ টাকার সহযোগিতা ছাড়া আর কিছুই পাননি৷ তবুও যদি তাঁর ছেলে হত্যার বিচার হতো, তাহলে কিছুটা শান্তনা পেতেন৷ কিন্তু তাও যে হয়নি৷

সাভারের মাহবুবও বলেন একই কথা৷ তিনি বলেন, নয় বছর হয়ে গেলেও এখনো পৈশাচিক হামলার বিচার হয়নি৷

নানা চড়াই-উত্‍রাই আর নাটকের পর গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার চলছে এখন৷ তবে এই সরকারের মেয়াদে এই মামলার বিচার শেষ হবে না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, বিএনপি-র আমলে এই হামলার ঘটনার পর তত্‍কালীন সরকার মালাটি ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল৷ জজ মিয়া নাটকসহ নানা নাটক সাজিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে চেয়েছিল তারা৷ ফলে নতুন তদন্ত করে মামলাটিকে সঠিক পথে আনতে এবং প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করতে সময় লেগেছে৷ এই মামলায় তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্‍ফুজ্জামান বাবর এবং মুফতি হান্নানসহ মোট আসামি ৫২ জন৷ আর সাক্ষী মোট ৪৯১ জন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য