1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজইউক্রেন

ইউক্রেনীয় বন্দিদের রাশিয়ায় নেওয়ার প্রস্তুতি

৮ জুন ২০২২

রাশিয়ায় ওই বন্দিদের বিচার হতে পারে। খাদ্য সংকট নিয়ে ইউক্রেনকে দায়ী করতে চাইছে রাশিয়া।

https://p.dw.com/p/4COTA
ইউক্রেন
ছবি: Stringer/REUTERS

গত কয়েকমাসে বেশ কিছু ইউক্রেনীয় সেনাকে আটক করেছে রাশিয়ার সেনা। পূর্ব ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চলে রাশিয়ার সেনার কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল ইউক্রেনের সেনা। রাশিয়া তাদের আটক করে রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় বন্দি করে রেখেছিল। সবচেয়ে বেশি ইউক্রেনীয় সেনাকে আটক করা হয়েছিল মারিউপলের কারখানা থেকে। প্রায় এক হাজার সেনাকে সেখান থেকে আটক করা হয়। রাশিয়ার এক সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, সব মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার সেনাকে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন। সেখানে তাদের বিচার হতে পারে।

ইউক্রেন অবশ্য চুপ করে বসে নেই। দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার এই পদক্ষেপ কোনোভাবেই ইউক্রেন সমর্থন করে না। তাদের আশঙ্কা, আটক সেনাদের রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করা হবে। তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি। বস্তুত, মারিউপলের সেনাদের আটক করার পরে রাশিয়া বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, তারা ওই সেনাদের বন্দি প্রত্যার্পণ চুক্তি হলেও ইউক্রেনের হাতে তুলে দেবে না। কারণ, রাশিয়া মনে করে ওই সেনারা নব্য নাৎসি। তাদের বিচার করা হবে। ইউক্রেন তখনো এর ঘোর বিরোধিতা করেছিল।

জেলেনস্কির দাবি

জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধের বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করতে চলেছে ইউক্রেন। আগামী সপ্তাহেই 'বুক অফ টর্চার' নামের একটি বই প্রকাশ করা হবে। কীভাবে রাশিয়ার সেনা ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ করেছে তার বিস্তারিত রিপোর্ট সেখানে থাকবে। ইউক্রেনের দাবি, অন্তত ১২ হাজার এমন যুদ্ধাপরাধের বর্ণনা সেখানে থাকবে। এখনো পর্যন্ত এর জন্য ৬০০ রাশিয়ার সেনাকে তারা চিহ্নিত করেছে। আন্তর্জাতিক বিশ্বের হাতে এই বইটি তুলে দেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

মস্কোর অভিযোগ

খাদ্যশস্যের সরবরাহ বন্ধ নিয়ে সম্প্রতি বৈঠকে বসেছিল ইউক্রেন এবং রাশিয়া। তুরস্কে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সেই বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে কোনো সমাধানসূত্র মেলেনি। ডিডাব্লিউয়ের সংবাদদাতা জানিয়েছেন, বৈঠকে ইউক্রেনকে দায়ী করেছে রাশিয়া। তাদের অভিযোগ, ইউক্রেন ইচ্ছাকৃতভাবে খাদ্য শস্যের সরবরাহ বন্ধ করে রেখেছে। যদিও রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় খাদ্যশস্যের বন্দর ধ্বংস করে দিয়েছে।

ইউক্রেনের অভিযোগ, রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে অবরোধ তৈরি করে রেখেছে বলেই এই সংকট তৈরি হয়েছে। গোটা আফ্রিকা খাদ্য সংকটে ভুগছে। কিন্তু রাশিয়া তা মানতে চায়নি। রাশিয়ার বক্তব্য, যুদ্ধের কারণে জাহাজগুলি যাতে ধ্বংস না হয়, সে কারণে সব জাহাজকে ওই রাস্তায় যাতায়াত করতে দেয়া হচ্ছে না।

আফ্রিকার দেশগুলিও খাদ্য সংকট নিয়ে আশঙ্কিত হতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে বরাবরই তারা রাশিয়ার মুখাপেক্ষী।

বিশ্ব ব্যাংকের সাহায্য

ইউক্রেনকে এক দশমিক চার নয় বিলিয়ন ডলার অর্থ সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে বিশ্ব ব্যাংক। প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহরগুলির নির্মাণ এবং সরকারি খরচ তুলতে এই অর্থ ব্যয় হবে। ইউক্রেন অবশ্য জানিয়েছে, ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য মাসে তাদের পাঁচ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন।

প্রতিদিন ৩০০ সেনার মৃত্যু

মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন, ডনবাস অঞ্চলে রাশিয়া প্রাথমিকভাবে কিছু সুবিধা করতে পারলেও এখন ফের তারা পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে। ডনবাস অঞ্চলের ফ্রন্টলাইন এখন ইউক্রেনের দখলে। শুধু তা-ই নয়, ইউক্রেনের দাবি, প্রতিদিন গড়ে রাশিয়ার ৩০০ সেনার মৃত্যু হচ্ছে। রাশিয়ার কাছেও এ তথ্য আছে বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি। যদিও এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)