ইউরো'কে বাঁচানোর পথ সুগম করলো জার্মানি
২১ মে ২০১০গ্রিসের আর্থিক সঙ্কটের পর থেকেই সঙ্কটে পড়েছে অভিন্ন মুদ্রা ইউরো৷ কারণ স্পেন ও পর্তুগালের মতো দেশের বিপুল বাজেট ঘাটতির ফলে গোটা ইউরো এলাকার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাই প্রশ্নের মুখে পড়েছে৷ অভূতপূর্ব এই সঙ্কটের মোকাবিলা কীভাবে করা উচিত, সেবিষয়ে যথেষ্ট মতভেদ থাকলেও একেবারে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার উপায় যে নেই, এবিষয়ে সব পক্ষই মোটামুটি একমত৷ কারণ বাজারে ইউরো'র বিনিময় মূল্য পড়ে যাচ্ছে, সেইসঙ্গে ইউরো এলাকার অর্থনীতি নিয়েও নানা সংশয় দেখা দিচ্ছে৷ একারণেই ইউরো সুরক্ষা প্যাকেজ-এর কথা ভাবা হচ্ছে৷ তবে মনে রাখতে হবে, এই প্যাকেজ-এর অর্থ এই নয় যে ইউরো এলাকার দেশগুলি এখনই নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ একটি তহবিলে জমা দেবে৷ কোনো সদস্য দেশের ঋণের প্রয়োজন পড়লে শুধু তার গ্যারেন্টি দিতে প্রস্তুত থাকবে জার্মানি সহ বাকি দেশগুলি৷ অবশ্যই তার আগে সেই দেশকে একঝাঁক কড়া শর্ত মেনে নিতে হবে৷ ৭৫,০০০ কোটি ইউরোর এই তহবিলের সিংহভাগ অর্থাৎ ১৪,৮০০ কোটি ইউরো জার্মানির ভাগে পড়েছে৷ তবে ২৫,০০০ কোটি ইউরো আসবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে৷
গ্রিসের জন্য সাহায্যের কর্মসূচির সময় থেকেই টের পাওয়া গেছে, যে এমন পদক্ষেপ আর যাই হোক, জনপ্রিয় হতে পারে না৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল শুরু থেকেই যেভাবে গোটা সঙ্কটের মোকাবিলা করা চেষ্টা করছেন, সেই নীতি এমনকি তাঁর নিজের ক্ষমতাসীন জোটের মধ্যেই প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে৷ বিরোধীরাও ম্যার্কেল'কে প্রবলভাবে আক্রমণ করেছে৷ ফলে শুক্রবার সংসদে এই প্রস্তাব অনুমোদন করা সম্ভব হবে, এবিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছিল না৷ অবশেষে বুন্ডেসটাগ ও বুন্ডেসরাট এই প্রস্তাব অনুমোদন করলো – যদিও ক্ষমতাসীন জোটের ১০ জন সাংসদ প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন জানান নি৷
কেউ কেউ এই সঙ্কটকে এক সুবর্ণ সুযোগ হিসেবেও দেখছেন৷ এতকাল বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ কারণ দেখিয়ে সদস্য দেশগুলি যেভাবে বাজেট ঘাটতির উর্দ্ধসীমা সহ ইউরো এলাকার নিয়মগুলিকে তোয়াক্কা করার প্রয়োজন বোধ করে নি, এবার সেই চিত্র আমূল বদলে যেতে পারে৷ ইউরো স্থিতিশীলতা চুক্তি আরও কড়া করে তোলার তোড়জোড় চলছে৷ নিয়ম লঙ্ঘন করলে কড়া শাস্তির বিধানও রাখার পরিকল্পনা রয়েছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী