1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপে বিমান পরিবহন এখনো অচল

১৯ এপ্রিল ২০১০

গত প্রায় ৫ দিন ধরে ইউরোপের আকাশে বিমান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা চালু আছে৷ পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, সেবিষয়ে কোনো আগাম ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না৷

https://p.dw.com/p/N0Td
দীর্ঘ প্রতীক্ষা – অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

আইসল্যান্ডের একটি আগ্নেয়গিরি যেভাবে গত প্রায় ৫ দিন ধরে ইউরোপের আকাশে বিমান চলাচল কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে, এমন অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মুখে ইউরোপের নীতি নির্ধারকরা পড়েছেন বিড়ম্বনায়৷ বিমানযাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েও কীভাবে পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক করে তোলা যায়, তা নিয়েই এখন ভাবনা চিন্তা চলছে৷ জার্মানির আকাশসীমা এখনো যাত্রী পরিবহনের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হয় নি৷ সর্বশেষ নির্দেশিকা অনুযায়ী মঙ্গলবার ভোর ২টো পর্যন্ত বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে৷ তবে কিছু এলাকায় নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে৷ কিছু যাত্রীবাহী বিমান নির্দিষ্ট কিছু গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে৷

Island Vulkan Natur Landschaft
আইসল্যান্ড’এর এইইয়াফিয়ল আগ্নেয়গিরিছবি: picture-alliance/dpa

এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয় কেউ কখনো দেখে নি৷ ইউরোপের প্রত্যন্ত আইসল্যান্ড দ্বীপে এইইয়াফিয়ল আগ্নেয়গিরির তাণ্ডবের ফলে কোনো মানুষ হতাহত হয় নি৷ ক্ষতি হয় নি কোন জনপদের৷ দ্বীপের আশেপাশে ছাড়া খালি চোখে অগ্নুৎপাতের কালো ধোঁয়া আশেপাশে দেখা যাচ্ছে না৷ উল্টো বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় ইউরোপের মানুষ এমন নীল আকাশ দেখতে পাচ্ছেন, যা সত্যি বিরল৷ প্রায় অদৃশ্য এমন বিপর্যয়ের অভিজ্ঞতা সত্যি অভূতপূর্ব৷

এই বিপর্যয়ের নানা দিক রয়েছে৷ অদৃশ্য ছাইমেঘ বিমানের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে – এই আশঙ্কায় বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে৷ অনেক বিমান সংস্থা ইতিমধ্যে একাধিক খালি বিমান চালিয়ে পরীক্ষা করে সামান্যতম ক্ষতির চিহ্ন খুঁজে পায় নি৷ ফলে তারা অভিযোগ করছে, যে প্রয়োজনীয় পরিমাপ ছাড়াই কম্পিউটারের হিসেবের ভিত্তিতে আকাশ বন্ধ রাখা হয়েছে৷ সোমবার অবশ্য ন্যাটোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে একটি এফ-সিক্সটিন বোমারু বিমান ছায়ামেঘের মধ্য দিয়ে উড়ে যাবার সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ সোমবার জার্মানির একটি বিশেষ বিমান পরিমাপের বিশেষ যন্ত্রপাতি সহ তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে৷ উড়ন্ত এই গবেষণাগার ৩ ঘণ্টা ধরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে ফিরে আসবে এবং আকাশে ছায়ামেঘের ক্ষতিকর বস্তুগুলি সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা দেবার চেষ্টা করবে৷

বৈজ্ঞানিক এই উদ্যোগের পাশাপাশি রাজনৈতিক স্তরেও সঙ্কটের মোকাবিলার উদ্যোগ চলছে৷ অন্যান্য যাত্রীদের মত ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিবহনমন্ত্রীরাও আপাতত ভ্রমণ করতে পারছেন না৷ ফলে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে তাঁরা পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করছেন৷ আলোচনার আগেই ইউরোপীয় পরিবহন কমিশনার সিইম কালাস বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যায় না৷ কবে ছাইমেঘ কেটে যাবে, তার জন্য আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অপেক্ষা করতে পারি না৷''

তবে ইউরোপের বিমান সংস্থাগুলি রাজনৈতিক নেতৃত্বের কড়া সমালোচনা করছে৷ গত প্রায় ৫ দিন ধরে সরকার, প্রশাসন ও ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানগুলি নিষ্ক্রিয় ছিল বলে তাদের অভিযোগ৷ জার্মানির পরিবহনমন্ত্রী পেটার রামসাউয়ার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছেন, যে তাঁর কাছে যাত্রীদের নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি জরুরি৷ অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও কোন ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত নন তিনি৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: জাহিদুল হক