1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তুরস্ক থেকে জার্মান সৈন্য জর্ডানে

৬ জুন ২০১৭

তুরস্ক জার্মান সাংসদদের ইনচিরলিকে আসতে দিতে অস্বীকার করার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিগমার গাব্রিয়েল জার্মান সেনাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার কথা বলেছেন৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফন ডেয়ার লাইয়েনের মতে সৈন্যদের জর্ডানে সরিয়ে নেয়া হতে পারে৷

https://p.dw.com/p/2eBRP
ছবি: Reuters/U. Bektas

সোমবার তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চোভুশোলো বলেন যে, তুরস্ক পূর্বাপর জার্মান সাংসদদের ইনচিরলিক সামরিক ঘাঁটিতে নিয়োজিত জার্মান সৈন্যদের পরিদর্শন করতে দেবে না৷ ‘‘বর্তমানে কোনিয়ার ন্যাটো ঘাঁটি পরিদর্শন করা সম্ভব, কিন্তু ইনচিরলিক নয়,'' সোমবার আংকারায় গাব্রিয়েলের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন চোভুশোলো৷

সোমবারই জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী উর্সুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন জানান, জার্মান সৈন্যদের ইনচিরলিক থেকে জর্ডানের একটি ঘাঁটিতে সরিয়ে নেওয়া হবে৷ ‘‘আমাদের সাংসদরা যে আমাদের সৈন্যদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না, তা গ্রহণযোগ্য নয়,'' বলেন ফন ডেয়ার লাইয়েন৷ ‘‘আমরা স্থান বদল করতে প্রস্তুত,'' বলে ঘোষণা করেন তিনি এবং যোগ করেন যে, জর্ডানের আজরাক বিমানঘাঁটিকে একটি ‘তুলনীয় বিকল্প' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ও রাজা আবদুল্লাহ এই স্থানান্তর সমর্থন করেছেন৷

জার্মান মন্ত্রিসভা বুধবার বিষয়টি নিয়ে ‘‘আলোচনা করবে ও সিদ্ধান্ত নেবে'', বলেও ফন ডেয়ার লাইয়েন জানান৷ ‘‘ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইনচিরলিক ভালো একটি বিমানঘাঁটি, কিন্তু সৈন্যদের সঙ্গে দেখা করতে না পারাটা আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়,'' বলেন তিনি৷

ইনচিরলিকে জার্মান সেনাবাহিনীর ২৫০ জনের বেশি সদস্য নিয়োজিত৷ তাঁদের কাজ হলো সিরিয়ার আকাশে টর্নে জঙ্গিবিমান থেকে ভূ-পৃষ্ঠের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহযোগী দেশগুলির বিমানে উড়ন্ত অবস্থাতেই তেল ভরার ব্যবস্থা করা৷

সংশ্লিষ্ট তুর্কি সৈন্য ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গতবছর তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে আংকারার অভিযোগ
সংশ্লিষ্ট তুর্কি সৈন্য ও সেনা সদস্যরা তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে আংকারার অভিযোগ

আংকারা সৈন্য পরিদর্শন রুখল কেন?

গতমাসে আংকারা দ্বিতীয়বার জার্মান সংসদের একটি প্রতিনিধিদলকে ইনচিরলিকে যেতে দেয়নি৷ তুর্কি কর্মকর্তাদের বিবৃতি অনুযায়ী, জার্মানি যে তুর্কি সেনাবাহিনীর সদস্যদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে, তুরস্কের এই সিদ্ধান্ত তারই প্রতিক্রিয়া৷ সংশ্লিষ্ট তুর্কি সৈন্য ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গতবছর তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে আংকারার অভিযোগ৷

‘‘জার্মানি যদি আমাদের দিকে এক পা এগোয়, তো আমরা (জার্মানির দিকে) দু' পা এগোব,'' বলে চোভুশোলু মন্তব্য করেছেন৷ ‘‘‘ফেটো' (তুর্কি পরিভাষায় যুক্তরাষ্ট্র নিবাসী ফেহতু্ল্লাহ গুলেনের ‘সন্ত্রাসী সংগঠন') সদস্যরা যে বন্ধুদেশ জার্মানিতে আশ্রয় নিচ্ছে, তা আমরা দেখতে চাই না,'' বলেন চাভুশোলু৷

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েল চাভুসোগলুর সঙ্গে যুগ্ম সাংবাদিক সম্মেলনেই বলেন যে, বস্তুত তুরস্কের এই সিদ্ধান্তের অর্থ, বার্লিন সরকারকে ইনচিরলিক বিমানঘাঁটি থেকে জার্মান সেনাবাহিনীর সদস্যদের সরিয়ে নিতে হবে৷

‘‘তুরস্ক স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, অভ্যন্তরীণ কারণে তুরস্কের পক্ষে সব (জার্মান) সাংসদদের (সৈন্য) পরিদর্শন অনুমোদন করা সম্ভব নয়৷ আমি তা'তে দুঃখ বোধ করছি, কিন্তু তুরস্ককেও বুঝতে হবে যে, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কারণে আমাদের জার্মান সৈন্যদের ইনচিরলিক থেকে সরিয়ে নিতে হবে৷ এই পরিস্থিতিতে জার্মান সংসদ সরকারকে ইনচিরলিকের জার্মান সৈন্যদের জন্য অন্য কোনো অবস্থানের সন্ধান করতে বলবে,'' বলে গাব্রিয়েল মন্তব্য করেন৷ 

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সিগমার গাব্রিয়েলের প্রথম তুরস্ক সফরটি ছিল ইনচিরলিকে জার্মান সৈন্যদের পরিদর্শন সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির শেষ প্রচেষ্টা৷ সেই প্রচেষ্টা স্পষ্টত ও প্রকাশ্যভাবে ব্যর্থ হবার পর ডয়চে ভেলের সাবিন কিনকার্ৎসের মতো অনেক বিশ্লেষকই রাজনৈতিক ফলশ্রুতি দাবি করছেন৷

তাঁদের মতে, এর্দোয়ান অনেকদিন ধরেই জার্মানিকে ল্যাজে খেলাচ্ছেন, কখনো গরম, কখনো নরম পদ্ধতিতে তাঁর নিজের ও তুরস্কের স্বার্থ হাঁসিল করার চেষ্টা করছেন৷ ইউরোপ অভিমুখে উদ্বাস্তুদের স্রোত রোখা বা জার্মান সাংসদদের ইনচিরলিকে যেতে না দেওয়া– এ সবই এর্দোয়ানের দাবার চাল৷ এই ‘‘ব্ল্যাকমেলের'' কাছে নতিস্বীকার করার কোনো মানে হয় না৷ বার্লিনকে এখন শক্ত ও সক্রিয় হতে হবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন৷

এসি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য