1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইরানের পরমাণু প্রস্তাবে পশ্চিমের সতর্ক প্রতিক্রিয়া

৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ বলেছেন, ‘আইএইএ’র প্রস্তাব অনুসারে দেশের বাইরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে রাজি তারা৷ জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো একে স্বাগত জানিয়ে সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে৷

https://p.dw.com/p/LrX6
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদছবি: AP

নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি স্যাটেলাইটে করে প্রথমবারের মতো মহাশূন্যে ইঁদুর, কচ্ছপ ও ছোটো ছোটো অমেরুদণ্ডী প্রাণী পাঠাতে সক্ষম হয়েছে ইরান৷ওদিকে বুধবার মহাকাশ প্রযুক্তিতে ইরানের এই সাফল্যের আগেই এই কথা জানিযেছেন তিনি৷

পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বশক্তিগুলোর সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধে কিছুটা নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ বলেছেন, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রস্তাব অনুসারে একটি বহুজাতিক পরমাণু জ্বালানি চুক্তি করতে কোনো সমস্যা নেই৷

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আহমাদিনেজাদ বলেন, ‘‘এতে সত্যিই কোনো সমস্যা নেই৷ কেউ কেউ অযথাই জটিলতা তৈরি করে৷ এতে কোনো সমস্যা নেই৷ আমরা পশ্চিমা শক্তিগুলোকে ‘সাড়ে তিনভাগ' সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম দেবো এবং চার থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে তারা আমাদেরকে তা ‘বিশ ভাগ' সমৃদ্ধ করে ফেরৎ পাঠাবে৷''

সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ইরানি প্রেসিডেন্টের এই বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটির পরমাণু সংকট নিরসনে কাজ করতে থাকা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য এবং জার্মানির ছয়জাতি জোট৷

জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বললেন, ‘‘কার্যক্ষেত্রে কী ঘটে, আমরা তা দেখতে চাই৷ দেশের বাইরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের বিষয়ে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা অতীতে যে সব প্রস্তাব রেখেছে, ইরান তা পুরোপুরি মেনে নিচ্ছে কি না, তা স্পষ্ট করে দেখতে হবে৷ শুধু একটা ভাষণের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া যায় না৷''

একইদিনে জার্মান সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘ইরানকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার কাছে সুনির্দষ্ট অঙ্গীকার করতে হবে এবং ভিয়েনায় সংস্থাটির সদর দপ্তরকে বিশদভাবে তা অবহিত করতে হবে৷ তা করলেই কেবল এই পরিস্থিতির মূল্যায়ন করা যেতে পারে৷''

ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদের বিবৃতিতে যদি পরমাণু ইস্যুতে ইরানের পরিবর্তিত অবস্থানের প্রতিফলন থাকে তাহলে অবশ্যই তা আইএইএ-কে অবহিত করা উচিৎ৷ যুক্তরাষ্ট্র তা দেখার অপেক্ষায় থাকবে৷''

চীন এবং রাশিয়াও ইরানের এ মনোভাবকে স্বাগত জানিয়েছে৷ রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, আহমাদিনেজাদের এই বিবৃতিকে স্বাগত জানাচ্ছেন তিনি৷ তবে, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স একে স্বাগত জানালেও বলেছে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও ‘আইএইএ'-কে এ বিষয়ে অবহিত করেনি৷

ইরানের সঙ্গে একটি বহুজাতিক পরমাণু চুক্তির বিষয়ে ‘আইএইএ'র ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইরান থেকে স্বল্পমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রাশিয়ায় পাঠানো হবে৷ রাশিয়ার পরমাণু চুল্লিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সমৃদ্ধ করার পর সেসব ফ্রান্সে পাঠানো হবে এবং ফ্রান্স সেগুলোকে ইরানের পরমাণু শক্তিকেন্দ্রগুলোতে ব্যবহারের উপযোগী করে জ্বালানিতে রূপান্তর করবে৷

ওদিকে, ‘কাভোসগার-৩' নামের নিজস্ব স্যাটেলাইটের ক্যাপসুলে করে প্রথমবারের মতো মহাশুন্যে ইঁদুর, কচ্ছপ ও ছোটো ছোটো অমেরুদণ্ডী প্রাণী পাঠাতে সক্ষম হয়েছে ইরান৷ টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে ১০০ কিলোগ্রাম ওজন বহন করে ৫০০ কিলোমিটার দূরত্বে কক্ষপথ পরিভ্রমণ শেষে স্যাটেলাইটটি সফলভাবে যথাস্থানে ফিরে এসেছে৷ ইরানি প্রেসিডেন্ট এই প্রযুক্তির পরবর্তী দুটি স্যাটেলাইটের মডেলও উদ্বোধন করেন৷ যা যথাক্রমে কক্ষপথে ৭০০ এবং ১,০০০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে সক্ষম হবে বলে আশা করছে ইরানিরা৷

পশ্চিমের ধারণা স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে এগিয়ে গেলে ইরান তাকে রকেট ক্যাপসুলের পরিবর্তে পরমাণু যুদ্ধাস্ত্র বহনে সক্ষম করে তুলতে পারে এবং সে লক্ষ্যেই দেশটি যুগপৎভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণও চালিয়ে যাচ্ছে৷

প্রতিবেদন : মুনীর উদ্দিন আহমেদ

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক