1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইরানের সঙ্গে সত্যি যুদ্ধ চান না ট্রাম্প?

১৭ মে ২০১৯

একদিকে ইরানকে উচিত শিক্ষা দেবার রণংদেহী হুঙ্কার, অন্যদিকে সম্ভাব্য যুদ্ধের পরিণতি সম্পর্কে দুশ্চিন্তা – প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিষয়টি নিয়ে বেশ দোটানায় পড়েছেন৷ ইরাক যুদ্ধের ভয়াবহ স্মৃতিও তাঁকে ভাবাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3IdNo
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Vucci

ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক পদক্ষেপের মাধ্যমে ইরানের উপর চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ সম্প্রতি বাড়তি নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে ইরানকে আরও কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছেন তিনি৷ মার্কিন রণতরি ও যুদ্ধবিমানও সব রকম পরিস্থিতির প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ কিন্তু পারস্য উপসাগর অঞ্চলে চরম উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে তিনি বলছেন, ‘আশা করি যুদ্ধ হবে না'৷ এমনকি ইরানের নেতৃত্বের সঙ্গে সংলাপের বিষয়েও তিনি আশাবাদী৷ এমন পরস্পরবিরোধী আচরণের কারণ কী?

ট্রাম্প প্রশাসনের ইরান নীতি নিয়ে হোয়াইট হাউসের মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করছে৷ বিশেষ করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন যেভাবে ইরানকে শায়েস্তা করতে উঠেপড়ে লেগেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সে বিষয়ে নাকি চরম বিরক্তি প্রকাশ করেছেন৷ ভবিষ্যৎ প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে তিনি বলেছেন, ইরানের সঙ্গে তিনি যুদ্ধ চান না৷

নির্বাচনি প্রচারের সময় থেকেই ট্রাম্প বিদেশের মাটিতে মার্কিন সৈন্য পাঠানোর চরম বিরোধী৷ ক্ষমতায় আসার পর তিনি বিশাল সংখ্যক মার্কিন সৈন্যদের দেশে ফিরিয়ে এনেছেন৷ অথচ ইরানের সঙ্গে সত্যি যুদ্ধ বেঁধে গেলে কমপক্ষে এক লক্ষ মার্কিন সৈন্য মোতায়েন করতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷ তার উপর ১৬ বছর পর ইরাক যুদ্ধের ভয়াবহ স্মৃতি অ্যামেরিকায় আবার বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠেছে৷ সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা না নিয়ে ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে তার পরিণাম আরও মারাত্মক হয়ে উঠবে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে দিচ্ছেন৷ ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্প এমন কোনো ঝুঁকি নিতে চান না৷

ইরাকে হামলা চালানোর সময় তৎকালীন মার্কিন প্রশাসন সাদ্দাম হুসেনের হাতে মারণাত্মক অস্ত্র আছে বলে দাবি করেছিল, পরে যা ভুল প্রমাণিত হয়৷ জার্মানির মতো সহযোগী দেশ সে যাত্রায় অ্যামেরিকার সঙ্গ দেয় নি৷ ফলে বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে যেভাবে চরম হুমকি হিসেবে তুলে ধরছে, তার সপক্ষে প্রমাণ দেখতে চাইছেন রিপাব্লিকান ও ডেমোক্র্যাটিক দলের অনেক সংসদ সদস্য৷ ব্রিটেনের এক জেনারেল এই হুমকি সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করায় তাঁদের সন্দেহ বাড়ছে৷

মার্কিন কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন সদস্যকে গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য দেখানো হলেও এ বিষয়ে যথেষ্ট তথ্যের অভাবে দুই দলের অনেক নেতা হোয়াইট হাউসের সমালোচনা করেছেন৷ সেনেটের কিছু সদস্যকে আগামী মঙ্গলবার ‘ইন্টেলিজেন্স ব্রিফিং' দেওয়া হবে৷ নিম্ন কক্ষের স্পিকার ও বিরোধী নেতা ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে সংসদ সদস্যদের অবগত না রাখা বর্তমান প্রশাসনের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ অথচ একমাত্র কংগ্রেসেরই যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা রয়েছে৷

ইরান নীতির ক্ষেত্রে কিছুটা পিছু হটতে বাধ্য হলেও ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের কর্তৃত্ব নিয়ে কোনো সংশয়ের অবকাশ রাখতে প্রস্তুত নন৷ সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ইরানের প্রশ্নে তাঁর প্রশাসনে জন বোল্টন-এর মতো কট্টরপন্থির পাশাপাশি শান্তিপ্রিয় ব্যক্তিরাও রয়েছেন৷ সব পক্ষের বক্তব্য শুনেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন বলে দাবি করেন ট্রাম্প৷

ইরানের নেতৃত্ব মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে এই বিভাজনের ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বলে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷ ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির অন্যতম উপদেষ্টা হেসামোদ্দিন আশেনা সম্প্রতি এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প-এর উদ্দেশ্যে লেখেন, ‘‘আপনি ইরানের সঙ্গে আরও ভালো চুক্তি চেয়েছিলেন৷ তার বদলে একটা যুদ্ধ পাচ্ছেন৷ গোঁফের কথা শুনলে এমনটাই হয়৷'' উল্লেখ্য, সাদা ও পুরু গোঁফের কারণে জন বোল্টন চোখে পড়ার মতো ব্যক্তি৷

এসবি/এসিবি (এপি, রয়টার্স)