1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইলেকট্রনিক বইয়ের ভবিষ্যৎ

২৯ মার্চ ২০১১

১৯৭১ সাল থেকে ইলেকট্রনিক বই বা ই-বুকের যাত্রা শুরু৷ তবে মাত্র কয়েক বছর ধরে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে প্রযুক্তির এই দিকটি৷ সম্প্রতি জার্মান পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতি ইলেকট্রনিক বইয়ের গুরুত্ব নিয়ে একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে৷

https://p.dw.com/p/10jQ5
ইলেকট্রনিক বই বা ই-বুকের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিনছবি: picture-alliance/ dpa

প্রযুক্তির ছোঁয়া এখন লেগেছে বইয়ের জগতেও৷ ইলেকট্রনিক বই বা ই-বুকের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন৷ সাধারণ বইয়ের মত পাতা উল্টে পড়তে হয়না এই সব বই৷ এ জন্য রয়েছে ই-রিডার নামে বিশেষ প্রযুক্তিযুক্ত এক ধরনের যন্ত্র৷ এগুলো ছোট ও হালকা বলে অনায়াসে হাতব্যাগে নিয়ে চলাচল করা যায়৷ অ্যামেরিকায় মুদ্রিত বইয়ের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক বইয়ের বাজারও মাথা তুলে উঠছে৷ তবে জার্মানি এক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে৷ অদূর ভবিষ্যতে জার্মানির বইয়ের বাজারেও ডিজিটালের গুরুত্ব বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা৷

জার্মান পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলেক্সান্ডার স্কিপিস এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে বই শুধু ডিজিটাল হবেনা৷ ছাপানো ও ইলেকট্রনিক দুটোই হবে৷ আমাদের বইয়ের বাজারের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তিকে একটা বিরাট সুযোগ হিসাবে নেওয়া হবে৷ ২০১১ সাল এক্ষেত্রে একটা ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে৷ পাঠকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে৷ বাজারে উন্নত মানের ই- রিডারও আনা হচ্ছে৷ বলা যায় ২০১১ সাল ই-বুকের অগ্রযাত্রার বছর৷''

Flash-Galerie IFA 2010 eBook Tablet-PC eLibary
অদূর ভবিষ্যতে জার্মানির বইয়ের বাজারেও ডিজিটালের গুরুত্ব বাড়বেছবি: DW / Manfred Böhm

কিন্তু জার্মানির বইয়ের বাজারের দিকে দৃষ্টি দিলে মনে হবে এই প্রযুক্তি থেকে বেশ খানিকটাই দূরে মানুষ৷ পাঠকদের এখনও তেমন করে টানতে পারছেনা ডিজিটাল বই৷ প্রকাশনা সংস্থা ও বইয়ের দোকানগুলিও সেভাবে এগিয়ে আসছেনা৷ মাত্র দুই শতাংশ পাঠক বিশেষ করে ই-বুক পড়েন৷ ৮২ শতাংশ শুধু মুদ্রিত বই কেনেন৷ ভবিষ্যতেও এই অভ্যাসের পরিবর্তন করবেন না বলে জানিয়েছেন তাঁরা৷ কিছু কিছু প্রকাশনা সংস্থা ইলেকট্রনিক বইয়ের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে৷ তবে বাকিরা বাজারের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে এবং তা অনেক বছর ধরেই৷ বিজ্ঞান ও বিষয়ভিত্তিক প্রকাশনা সংস্থাগুলিই ইলেকট্রনিক বইয়ের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে৷

যাই হোক, জার্মানিতে নতুন বইয়ের প্রকাশনার ক্ষেত্রে একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ মুদ্রিত বইয়ের পাশাপাশি ৪০ শতাংশ বই ই-বুক সংস্করণ হিসাবেও বের হচ্ছে৷ তবে পুরোনো গ্রন্থগুলিকে ইলেকট্রনিক বইতে রূপান্তর করার ব্যাপারটা শ্লথ গতিতে চলছে৷ সব মিলিয়ে বর্তমানে প্রকাশিত ১২ লাখ বইয়ের মধ্যে মাত্র ৭০ হাজার বই ইলেকট্রনিক আকারেও বের হয়েছে৷ ক্রেতারা এখনও ই-বুক কিনতে দ্বিধা করছেন৷ অনেকের মতে ছাপানো বইয়ের আবেদন পাওয়া যায়না ইলেকট্রনিক বইতে৷ চাহিদা কম বলে প্রকাশকরাও উৎসাহ পাচ্ছেননা৷

পাঠক ও প্রকাশকদের এক্ষেত্রে উদ্দীপিত করার ব্যাপারে আলেক্সান্ডার স্কিপিস বলেন, ‘‘আমাদের সমীক্ষার ফলাফলে লক্ষ্য করেছি, প্রকাশনা সংস্থাগুলি এক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী৷ বইয়ের দোকানগুলিও ই-বুকের সংখ্যা বাড়াতে ও আকর্ষণীয় করে তুলতে ইচ্ছুক৷ সহজ ব্যবহারযোগ্য ই- রিডারও আসছে বাজারে৷ তবে এক্ষেত্রে সবশেষ সিদ্ধান্তটা ক্রেতাদের হাতেই৷''

আলেক্সান্ডার স্কিপিস আশাবাদ ব্যক্ত করে আরো জানান, ‘‘বইয়ের দোকানগুলির উচিত হবে, ক্রেতাদের ই-বুক কেনার ব্যাপারে আগ্রহী করে তোলা৷ এমনকি ক্ষুদ্র দোকানগুলিও এক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে৷ তাদের ওয়েবসাইটে তুলে ধরতে পারে ইলেকট্রনিক বইয়ের সম্পূর্ণ তালিকা ও সুযোগ সুবিধা৷''

পরিশেষে বলা যায়, ভবিষ্যতে আমরা ইলেকট্রনিক বই আরো বেশি করে পড়তে পারব৷ প্রকাশকরাও ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছেন এদিকে৷ পাঠকদেরও আকৃষ্ট করা হচ্ছে৷ তবে আসল চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে আশে পাশের বইয়ের দোকানগুলিকে৷ লক্ষ্য রাখতে হবে ভবিষ্যতের প্রযুক্তি যেন তাদের পাশ কাটিয়ে যেতে না পারে৷

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন