1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইসরায়েলে সিরীয়দের চিকিৎসা

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৩

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে একটি হাসপাতালে সিরিয়ায় সংঘর্ষে আহতদের চিকিৎসা চলছে৷ সীমান্তবর্তী এলাকায় চিকিৎসা এবং অস্ত্রোপচার বেশ ঝুঁকিপূর্ণ৷ কেননা, দুই দেশের মধ্যে এখন যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে৷

https://p.dw.com/p/19kgD
ছবি: Menahem Kahana/AFP/Getty Images

জিভ হাসপাতাল৷ ১৯৭৩ সালে ইসরায়েলে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালটি যুদ্ধাহতদের চিকিৎসা দিয়ে আসছে প্রথম থেকেই৷ ইসরায়েল-সিরীয় সীমান্তে অবস্থিত হাসপাতালটি এখন প্রতিবেশী দেশে সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে৷ এখানকার একজন চিকিৎসক ডাক্তার শোখরি কাসিস, যিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন তাঁর রোগীদের সম্পূর্ণ করে সুস্থ করে তুলতে৷ বেশিরভাগ রোগীই বোমা হামলায় আহত৷ কারো পেটে, কারো পায়ে, কারো বা মাথায় বোমার আঘাত লেগেছে৷

চিকিৎসকরা জানেন না এই রোগীরা সিরিয়ার কোন অঞ্চল থেকে এসেছে৷ কিভাবে তারা সীমান্ত পার হয়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে, তাও তাদের জানা নেই৷ তবে তাঁরা এটুকু জানেন যে, বেশিরভাগ রোগীকে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী অথবা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা সীমান্ত থেকে তুলে নিয়ে এসেছে৷ এরপর তাদের জায়গা হয়েছে এই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে৷

গোলান পর্বত চূড়াতেও একটি সেনা হাসপাতাল আছে, যেখানে গোপনে চলছে আহত সিরীয়দের চিকিৎসা৷ যেহেতু সিরিয়া এবং ইসরায়েলের মধ্যে এখন যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে, তাই মানবিক সাহায্যের বিষয়টি এখানে বেশ স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে৷

Israel ZIV Medical Center in Safed
ইসরায়েলের একটি হাসপাতাল যুদ্ধাহতদের চিকিৎসা দিয়ে আসছে ১৯৭৩ সাল থেকেছবি: Menahem Kahana/AFP/Getty Images

সবার জন্য সাহায্য

হাসপাতালের উপ-পরিচালক কেলিন শাপিরা জানালেন, তাদের জন্য এরা সবাই রোগী এবং এদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে কিভাবে বাঁচানো যায় সেটাই তাদের প্রধান লক্ষ্য৷ সেক্ষেত্রে তারা কোথা থেকে এসেছে বা তারা কে – এটা কোনো মূখ্য বিষয় না৷ জিভ হাসপাতালে যুদ্ধাহতদের চিকিৎসা করা হয়েছে এর আগেও৷ এই যেমন, ইয়োম কিপ্পুর যুদ্ধ এবং ২০০৬ সালে লেবানন ও ইসরায়েল যুদ্ধের সময় কাজ করেছে হাসপাতালটি৷ এমনকি সেসময় লেবাননের হেজবুল্লাহ-র রকেট হামলার শিকারও হয়েছিল হাসপাতালটি৷

তবে এবার পরিস্থিতিটা একটু ভিন্ন৷ নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের বাইরে সব সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে, যাতে রোগীর পরিচয় কেউ জানতে না পারে এবং কোনো সাংবাদিক যাতে সেখানে প্রবেশ করতে না পারে, রোগীদের সাথে কথা বলতে না পারে৷

প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো রোগী আসে এবং এদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি বলে মন্তব্য করেন কেলিন শাপিরা৷

Syrien Flüchtlinge Aleppo
যুদ্ধ দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে অনেক সিরীয় নাগরিককেছবি: Dimitar Dilkoff/AFP/Getty Images

শত্রুরা দিচ্ছে চিকিৎসা সেবা

বেশিরভাগ রোগীই এক কাপড়ে চলে আসে এখানে৷ তাদের সাথে কোনো কিছুই থাকে না৷ তাই টুথব্রাশ থেকে কাপড় – সব কিছুই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দিতে হয়৷ কাসিস জানান, জ্ঞান হওয়ার পর বেশিরভাগ রোগীই নিজেরা কোথায় আছেন জেনে অবাক হয়৷ কারণ তাদের কাছে ইসরায়েল শত্রু দেশ৷ তারা ভাবতেই পারে না যে, ইসরায়েল তাদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে৷ তবে ধীরে ধীরে তারা বিশ্বাস করতে শুরু করে৷

প্রায় সময়ই রোগীরা নিজেদের ঘর-বাড়ি এবং আত্মীয় স্বজনের কথা ভেবে কান্নায় ভেঙে পড়ে৷ কেননা কবে এই পরিস্থিতি শান্ত হবে এবং স্বজনেরা বেঁচে আছে কিনা – তাও তাদের জানা নেই৷

চিকিৎসকদেরও এসব কথা ভাবায়৷ তবে একটা বিষয়ে চিকিৎসকরা নিশ্চিত৷ কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর এসব রোগীদের সেনাবাহিনী অ্যাম্বুলেন্সে করে পৌঁছে দেবে সিরিয়ায়৷ সাথে হয়ত দেয়া হবে কয়েক সপ্তাহের জন্য ওষুধ৷ তাই আর যাই হোক, চিকিৎসকদের একমাত্র আশা সেখানে যেন তারা সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে৷

তানিয়া ক্রেমার/এপিবি

দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য