1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উইগুর ইস্যুতে চীনের মিত্র জার্মানির উপর চাপ

২৬ নভেম্বর ২০১৯

ফাঁস হওয়া চীনা নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু মানুষকে আটকে রাখার ঘটনা ঘটছে চীনে৷ দেশটির সঙ্গে নানা খাতে ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকায় এই ইস্যুতে জার্মানিও চাপে রয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3Tli2
ছবি: picture-alliance/dpa/AP Photo/File

অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংঘ আইসিআইজে ফাঁস হওয়া চীনের কিছু নথিপত্র ঘেঁটে জানিয়েছে যে, দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ১০ লাখের মতো উইগুর মুসলমানকে পরিকল্পতিভাবে নজরদারিতে আটকে রাখা হয়েছে৷

সংখ্যালঘুদের অন্তরীণ রাখার এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান সম্পৃক্ত, তাদের সঙ্গে জার্মানির বহুজাতিক কোনো প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক আছে কিনা, থাকলে জার্মানি এক্ষেত্রে উইগুর ইস্যুতে মুখ খুলবে কিনা, সেসব বিষয়ও সামনে নিয়ে এসেছেন পর্যবেক্ষকরা৷ তারা চাচ্ছেন, জার্মানি চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হোক৷ 

আইসিআইজের অনুসন্ধান বলছে, ‘‘ইন্টিগ্রেটেড অপারেশন প্লাটফর্ম'' নামের এক কম্পিউটার সিস্টেম ব্যবহার করে উইগুর মুসলমানদের উপর নজরদারি করে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্য কাজে লাগিয়ে ২০১৭ সালের জুন মাসে শুধু এক সপ্তাহেই ১৫ হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে৷ সবমিলিয়ে ১০ লাখ সংখ্যালঘু উইগুরকে অন্তরীণ করতে এসব তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে৷

এই কম্পিউটার সিস্টেমটি তৈরি করেছে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সিইটিসি গ্রুপ, যাদের সঙ্গে জার্মানির সিমেন্স কোম্পানির ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে৷ ইউরোপের সবচেয়ে বড় এই উৎপাদন প্রতিষ্ঠানটি অবশ্য দাবি করেছে, সিইটিসি'র উৎপাদন কারাখানাগুলোতে শুধু সিমেন্সের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়৷ অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তিকে নজরদারির ক্ষেত্রে সিইটিসি যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেখানে সিমেন্সের অংশগ্রহণ নেই৷

প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই মুহুর্তে আমরা পরিস্থিতির দিকে নিবিড় নজর রাখছি৷''

চীনে জার্মান প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের মুখপাত্র স্টেফেন সাইব্যার্ট বলেছেন, কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই এমন অঞ্চলে কোনো প্রতিষ্ঠান কী করবে সেটা তাদের উপর নির্ভর করে৷

প্রসঙ্গত, শুধু সিমেন্সই চীনে ব্যবসা করছে না৷ জার্মানির শিল্পখাতসংক্রান্ত সংগঠন বিডিআই-এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ৫২০০ জার্মান কোম্পানির দশ লাখের মতো কর্মী চীনে সক্রিয় রয়েছেন৷ গত বছর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল দু'শ' বিলিয়ন ইউরো৷ 

কবরস্থান সরাচ্ছে চীন

এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক সত্ত্বেও সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে উইগুরদের আটকে রাখার সমালোচনা করেছে জার্মান সরকার৷ পাশাপাশি তাদেরকে যেখানে আটকে রাখা হয়েছে সেখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এবং ফাঁস হওয়া নথিপত্রে থাকা তথ্য যাচাইয়ের সুযোগ দিতে দেশটির সঙ্গে আলোচনার পক্ষেও মত দিয়েছে ইউরোপের দেশটি৷ 

চীন অবশ্য দাবি করেছে, উইগুরদের আটকে রাখা হয়নি, বরং দারিদ্র্য বিমোচন এবং উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়তে ‘পুনঃশিক্ষা কেন্দ্রে' স্বেচ্ছায় রয়েছেন উইগুর শিক্ষার্থীরা৷ তবে ফাঁস হওয়া নথিপত্র বলছে, তাদেরকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে৷

প্রতিবেদন: অস্টিন ডেভিস / এআই