1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে ঝুঁকি

১১ এপ্রিল ২০১৭

মার্কিন বিমানবাহী পোত চলেছে কোরিয়ার দিকে৷ এবার কি পিয়ংইয়াং-এর পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত বিরোধ সমাধানের আশা বাড়বে? বাড়বে পূর্ব এশিয়ায় পাওয়ার গেমের ঝুঁকি, বলেন ডয়চে ভেলের মাটিয়াস ফন হাইন৷

https://p.dw.com/p/2b1tK
US-Flugzeugträger USS Carl Vinson
ছবি: picture-alliance /dpa/ZUMA/U.S. Navy/DOD/M. Brown

মধ্যপ্রাচ্যের ‘বারুদের পিপের' চেয়েও কোরিয়ার বারুদের পিপে বেশি বিস্ফোরক৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার একটি সামরিক বিমানঘাঁটির উপর ৫৯টি টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়ার পর এবার পরমাণুশক্তি চালিত বিমানবাহী পোত ‘কার্ল ভিনসন'-কে কোরীয় উপকূলের দিকে পাঠাচ্ছেন৷ ‘কার্ল ভিনসন'-এ রয়েছেন প্রায় ৬,০০০ নাবিক ও ৮৫টি জঙ্গিজেট৷

‘কার্ল ভিনসন'-কে পাঠানো যদি সংকল্পের দৃঢ়তা প্রদর্শন করা হয়, তাহলেও প্রশ্ন থেকে যায়: কিন্তু কেন? ঠিক যেভাবে সিরিয়ায় টমাহক নিক্ষেপকেও কোনো বৃহত্তর মার্কিন স্ট্র্যাটেজির অঙ্গ বলে মনে হয়নি৷ যুক্তরাষ্ট্র কি সত্যিই একতরফা ভাবে ‘‘উত্তর কোরিয়া সমাধান'' করতে চলেছে, ট্রাম্প দিন কয়েক আগে যেরকম হুমকি দিয়েছেন?

বেইজিংয়ের উভয়সংকট

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আর ট্রাম্প ফ্লোরিডায় পরস্পরের সঙ্গে সাত ঘণ্টা কাটিয়েছেন – তা সত্ত্বেএ ট্রাম্প বেইজিংকে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে বাস্তবিক পদক্ষেপ নিতে রাজি করাতে পারেননি৷

উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে চীনের মূল সমস্যা হল, কোরীয় উপদ্বীপে স্থিতিহীনতা চীনের অর্থনীতির পক্ষে ভালো নয়৷ কিন্তু পিয়ংইয়াং-এর প্রশাসন ভেঙে পড়লে যে লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তু – এবং সম্ভবত মার্কিন সেনা – সরাসরি চীনের সীমান্তে এসে খাড়া হবে, তা নিয়েই বেইজিং-এর বিশেষ উদ্বেগ৷

US Navy carrier strike group moves to Korean Peninsula

অপরদিকে ওয়াশিংটনের চিন্তা উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ও রকেট কর্মসূচি নিয়ে – কেননা একদিন না একদিন উত্তর কোরিয়ার রকেট আণবিক সমরাস্ত্র মাথায় নিয়ে মার্কিন মুলুকে আঘাত হানার ক্ষমতা অর্জন করবে৷ কিন্তু তা বলে প্রাক-ট্রাম্প যুগের ‘‘রণকৌশলগত ধৈর্য্যের'' নীতি পরিত্যাগ করা – পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন যেমন ঘোষণা করেছেন – এবং সেই সঙ্গে ‘কার্ল ভিনসন'-কে পাঠিয়ে ভীতিপ্রদর্শন করা সঠিক পদ্ধতি হল কিনা, তা বলা শক্ত৷ দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সৈন্যদের উপস্থিতিই কি যথেষ্ট শাসানি ছিল না?

অ্যাডভানটেজ পিয়ংইয়াং

হুমকি দেখানোর ক্ষেত্রে, টেনিসের ভাষায়, ‘অ্যাডভানটেজ পিয়ংইয়াং'৷ উত্তর কোরিয়া ইতিমধ্যেই হুমকি দিয়েছে যে, যাবতীয় মার্কিন সামরিক পদক্ষেপের জন্য ওয়াশিংটনকে ‘‘পুরোপুরি দায়ী'' করা হবে এবং ‘ডিপিআরকে' ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের কাম্য যে কোনো ধরনের যুদ্ধের'' জন্য প্রস্তুত৷ এক্ষেত্রে পিয়ংইয়াং-এর সুবিধা হলো এই যে, উত্তর কোরিয়ার জনগণই তাদের দেশের শাসকবর্গের হাতে পণবন্দি৷ দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণও যে কোনো সম্ভাব্য যুদ্ধে একেবারে ফ্রন্টলাইনে গিয়ে পড়বে – অর্থাৎ তারাও পিয়ংইয়াং-এর হাতে পণবন্দি৷

von Hein Matthias Kommentarbild App
মাটিয়াস ফন হাইম, ডয়চে ভেলে

পূর্ব এশিয়ার নয়া নিরাপত্তা কাঠামো?

অপরদিকে পিয়ংইয়াং-কে কোনো একটা কিছু অফার করলে কেমন হয়? ট্রাম্প যে সে-কথা একেবারে ভাবেননি, এমন নয়৷ নির্বাচনি প্রচার অভিযানে তিনি গর্ব করে বলেছিলেন, রকেট সমস্যা সমাধানের জন্য যদি কিম-এর সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বসে হ্যামবার্গার খেতে হয়, তবে তিনি তাতেও রাজি৷ হ্যামবার্গারের বদলে উত্তর কোরিয়াকে একটি শান্তি চুক্তির প্রস্তাব দিলে কেমন হয়? ১৯৫৩ সালে কোরিয়া যুদ্ধ সমাপ্ত হয়েছে, কিন্তু একটি ক্ষণভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি ছাড়া আর বিশেষ কিছু সাধিত হয়নি৷ এর ফলে যে অনিশ্চয়তা ও আশঙ্কা, তার কারণেই তো উত্তর কোরিয়ার সমরসজ্জা, আণবিক বোমা ও রকেট পরীক্ষা৷

এবং সেই নতুন নিরাপত্তা কাঠামোয় যদি বেইজিংয়েরও স্বার্থরক্ষা হয়, তাহলে চীন স্বয়ং কিম-এর ওপর চাপ দিতে পারে৷ কিন্তু কিমকে বিতাড়নের দায়িত্ব শেষমেষ থাকবে উত্তর কোরিয়ার জনগণের হাতে, আর কারো হাতে নয়৷

মাটিয়াস ফন হাইন/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য