1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তর প্রদেশ ও বিহারে গঙ্গায় আরো মৃতদেহ

১২ মে ২০২১

গঙ্গায় ভেসে এলো আরো অনেক মৃতদেহ। বিহার এবং উত্তর প্রদেশে। সন্দেহ করা হচ্ছে, করোনায় মৃতদের দেহ ভাসানো হয়েছে।

https://p.dw.com/p/3tGyl
বিহারে গঙ্গায় ভেসে এসেছে প্রচুর মৃতদেহ। আশঙ্কা, করোনায় মৃতদের ভাসানো হয়েছে। ছবি: IANS

বিহারের চৌসায় দুইদিন আগেই প্রচুর মৃতদেহ গঙ্গায় ভেসে তীরে এসে পড়েছিল। প্রথমে গোটা চল্লিশ মৃতদেহ এইভাবে আসে। মঙ্গলবার দিনভর আরো অনেক মৃতদেহ গঙ্গায় ভেসে বিহারে এসে পৌঁছায়। সংখ্যাটা সবমিলিয়ে ৭১। আশঙ্কা, করোনায় মৃতদের দেহ ভাসানো হচ্ছে গঙ্গায়।

শুধু বিহার নয়, উত্তর প্রদেশের গাজিপুরেও গঙ্গায় প্রচুর মৃতদেহ ভেসে এসেছে। গাজিপুর বিহারের চৌসা থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে। এখানে অন্তত ২৫টি দেহ ভেসে আসে। জেলাশাসক এম পি সিং জানিয়েছেন, ''আমরা খবর পেয়েছি। আমাদের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।''

কীভাবে এলো এই দেহগুলি

বিহার সরাসরি উত্তর প্রদেশের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিয়েছে। বিহারের দাবি, তাদের রাজ্যে কখনোই গঙ্গায় এইভাবে মৃতদেহ ফেলা হয় না। বিহারের সরকারি কর্মকর্তাদের সন্দেহ, গাজিপুর থেকেই মৃতদেহগুলি চৌসায় এসেছে।

কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে যে সব ভিডিও রয়েছে তা সাংঘাতিক। সেখানে দেখা যাচ্ছে, অ্যাম্বুলেন্সে করে মৃতদেহ নিয়ে এসে ব্রিজের উপর থেকে তা গঙ্গায় ফেলা হচ্ছে।

বিহারের বিজেপি সাংসদ জনার্দন সিং সিগরিওয়াল জানিয়েছেন, উত্তর প্রদেশের বালিয়া ও বিহারের সারনের কাছে জয়প্রভা সেতু থেকে মৃতদেহ গঙ্গায় ফেলা হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স করে মৃতদেহ আনা হচ্ছে। তিনি সারনের জেলা প্রশাসনকে বলেছেন, এভাবে যেন মৃতদেহ গঙ্গায় ফেলা না হয়।

তবে স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ, উত্তর প্রদেশ ও বিহার দুই রাজ্যই একই কাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দা অরবিন্দ সিং বলেছেন, উত্তর প্রদেশ ও বিহারের অ্যাম্বুলেন্স চালকরা এসে গঙ্গায় মৃতদেহ ফেলছে।

আবার উত্তর প্রদেশের কর্মকর্তারা বলেছেন, কিছু সম্প্রদায়ের মধ্যে জলসমাধি দেয়ার প্রবণতা আছে। তারাও এই কাজ করতে পারে।

বিহার প্রশাসনের বক্তব্য

বিহারের বক্সারের জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গোটা রাত তারা দেহগুলি পোস্ট মর্টেম করেছে। মৃতদেহগুলি ফুলে, পচে গেছিল। কীভাবে তারা মারা গেছিলেন তা বূোঝা যাচ্ছিল না। ডিএনএ তারা সংগ্রহ করে রেখে দিয়েছেন। যাতে ভবিষ্যতে তা চিহ্নিত করা যায়। তারপর সব দেহগুলিকে পোড়ানো হচ্ছে।

বিহারের মন্ত্রী সঞ্জয় ঝা জানিয়েছেন, ''এই দেহগুলি উত্তর প্রদেশ থেকে এসেছে। উত্তর প্রদেশ ও বিহারের সীমানায় গঙ্গায় জাল বিছিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে আর দেহ না আসতে পারে।'' তার দাবি ''মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার খুবই ব্যথিত। এইভাবে গঙ্গায় দেহ ফেলে মৃত মানুষকে অসম্মান করা হয়েছে এবহং গঙ্গার ভয়াবহ ক্ষতি করা হয়েছে বলে তিনি ব্যথিত।'' 

কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত বলেছেন, ''এটা খুবই খারাপ ঘটনা। তবে কেন এটা হয়েছে তা তদন্ত করে দেখতে হবে। বিহার এবং উত্তর প্রদেশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।''

উত্তর প্রদেশের বক্তব্য

উত্তর প্রদেশের পুলিশের এডিজি প্রশান্ত কুমার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ''মৃতদেহগুলি বিহারে পাওয়া গেছে। তাই তদন্ত করে দেখা ও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দায় বিহারের। উত্তর প্রদেশের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে দেয়া ঠিক নয়।''

তিনি জানিয়েছেন, ''উত্তর প্রদেশ সরকার নির্দেশ দিয়েছে, জলসমাধি করা যাবে না। এই নির্দেশ কঠোরভাবে পালন করা হচ্ছে।''

বারাণসীর আইজি এস কে ভগত বলেছেন, ''দুই ধরনের দেহ এসেছে। কিছু দেহ জলসমাধির। কিছু দেহ অর্ধেক পোড়া। গঙ্গার ধারে প্রহরা বাড়ানো হয়েছে। মানুষকে বলা হচ্ছে, কেউ যেন গঙ্গায় দেহ না ফেলেন।''

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি)