1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তেজনা বাড়ানোর ‘কৌশলে' ইরান

২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সৌদি আরবের তেলক্ষেত্রে ড্রোন হামলায় জড়িত থাকার কথা ইরান অস্বীকার করলেও এ ঘটনার মধ্য দিয়ে তারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে পর্যবেক্ষকরা মত দিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/3PzgK
ছবি: Reuters

তারা বলছেন, হুতিসহ অন্য শিয়াবাহিনীর সহায়তা নিয়ে তেহরান ওয়াশিংটনকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছে৷ ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা ১৪ সেপ্টেম্বর ভোররাতে সৌদি আরবের তেল শিল্পের কেন্দ্রস্থলের  দুটি প্ল্যান্টে ড্রোন হামলাচালানোর কথা স্বীকার করেছে৷

সাংবাদিক ও উপসাগরীয় সামরিক ইস্যু বিশেষজ্ঞ ফারজানেহ রুস্তায়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, "ইরানের কৌশল হলো- তারা সামরিক আক্রমণের স্বীকার হলে পুরো অঞ্চলকেই এই ব্যাপক যুদ্ধে টেনে আনতে চাইবে৷ তেহরান এখন আমেরিকা ও তার মিত্রদের সঙ্গে সংঘাতের ব্যয় নির্ধারণ করতে চায়৷''

সৌদির তেলক্ষেত্রে হামলা নিয়ে ইরানের কিছু করার নেই এটা বিশ্বাস করেন না জানিয়ে ফারজানেহ রুস্তায়ে বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে, ইরান হুতিসহ অন্য শিয়া বাহিনীর সহায়তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছে৷’’

সৌদি আরব বিশ্বের বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারী দেশ৷ দেশটি প্রতিদিন ৭০ লাখ ব্যারেলেরও বেশি তেল রপ্তানি করে থাকে৷ তবে দুটি প্ল্যান্টে ড্রোন হামলার পর দেশটির তেল উৎপাদন অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে৷

হুতিরা এই হামলার দায় স্বীকার করলেও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এ হামলায় দায় পুরোপুরি ইরানের ওপর চাপিয়েছেন৷ হামলাটি ইয়েমেন থেকে হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেই বলে এক টুইটে দাবি করেছেন তিনি৷

অন্যদিকে সৌদি সরকার বলেছে, তাদের তেলক্ষেত্রে হামলার পেছনে সন্দেহাতীতভাবে ইরান ছিল৷ তদন্তে দেখা গেছে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো দক্ষিণ-পশ্চিম ইয়েমেন থেকে চালানো হয়নি, সেগুলো উত্তর থেকে এসেছে৷

যুক্তরাষ্ট্রও এর মধ্যে জানিয়েছে, এই ড্রোন হামলার জন্য  ইরান দায়ী৷ তবে এই হামলায় ইরানের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত করার মত কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি তারা৷ 

 Abdrabbuh Mansur Hadi Präsident des Jemen
আবেদ রাব্বো মনসুর হাদি, ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতিছবি: picture-alliance/AA/Y. Gaidi

ইরানের সঙ্গে জোটবদ্ধ ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা নিজ দেশ দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷ দেশটিতে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে রয়েছেন আবেদ রাব্বো মনসুর হাদি৷ 

হাদি সরকারের সমর্থনে রিয়াদ ২০১৫ সালের মার্চ মাসে হুতিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালায়৷ সৌদি আরব অভিযোগ করেছিল, ইরান হুতি বিদ্রোহীদের সমর্থন করায় দিন দিন তারা মধ্য প্রাচ্যের দরিদ্র অঞ্চলগুলোতে বিস্তার লাভ করেছে৷

ওয়াশিংটনের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠিতে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সৌদি তেলক্ষেত্রের হামলায় সঙ্গে তারা কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নয়৷

তেহরানের সুইস দূতাবাসের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, "এই হামলার সাথে ইরানের কোনো সম্পর্ক নেই৷ এরপরেও যদি ইরানের বিরুদ্ধে  কোনো (সামরিক) পদক্ষেপনেওয়া হয় তবে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিশোধ নেব৷’’

২০১৮ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, এর ফলে তেহরানের আঞ্চলিক রাজনীতি ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে বিবেচনায় নিয়ে ইরানকে একটি  নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য করবে৷

মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ মাইকেল লর্ডার ডয়চে ভেলেকে বলেন, "সৌদি আরব আমেরিকান অস্ত্রের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ক্রেতা৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যত অস্ত্র রপ্তানি করে তার ১০ শতাংশ সৌদি আরবে যায়৷'' 

শবনম ফন হেইন/এসআই/কেএম