1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উদ্বাস্তুদের বহিষ্কারের পন্থা

বেন নাইট/এসি১১ জানুয়ারি ২০১৬

কোলোন শহরে মহিলাদের ব্যাপক যৌন হয়রানির পর জার্মান রাজনীতিকরা বিদেশি অপরাধীদের বহিষ্কার করার সপক্ষে মতপ্রকাশ করেছেন৷ কিন্তু জার্মান – এবং আন্তর্জাতিক – আইন কী বলে?

https://p.dw.com/p/1Ha8g
Deutschland Hauptbahnhof Vorplatz in Köln
ছবি: Reuters/W. Rattay

নববর্ষের রাত্রিতে কোলোনের মুখ্য রেলওয়ে স্টেশনের সামনের চত্বরে কারা দঙ্গল বেঁধে মহিলাদের যৌন হয়রানি করেছিল ও মোবাইল ফোন ইত্যাদি চুরি করেছিল, তা নির্ধারিত হতে এখনও অনেক বাকি৷ প্রত্যক্ষদর্শিরা আরব কিংবা উত্তর আফ্রিকা থেকে আগত চেহারার মানুষদের কথা বলেছেন৷ অকুস্থলে যে সব পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন, তাদের বিবরণ অনুযায়ী ঐ দঙ্গলে সিরিয়া থেকে আসা উদ্বাস্তুরাও ছিলেন৷ এ সবই তদন্তসাপেক্ষ৷

জার্মান রাজনীতিক মহল কিন্তু গোড়া থেকেই সোচ্চার৷ বাভারিয়ার খ্রিষ্টীয় সামাজিক ইউনিয়ন বা সিএসইউ দলের সাধারণ সম্পাদক আন্ড্রেয়াস শয়ার বলেছেন, ‘‘রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী বা উদ্বাস্তুরা যদি আতিথেয়তার এরকম নির্লজ্জ অপব্যবহার করেন, তার একমাত্র ফলশ্রুতি হতে পারে এই যে, অবিলম্বে তাদের জার্মানিতে বসবাসের অধিকারের অবসান ঘটবে৷''

পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী ইউনিয়ন বা সিডিইউ দলের টোমাস ডেমেজিয়ের একই কথা বলেছেন৷ তিনি চান যে, বর্তমান আইনগত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হোক, কেননা বর্তমান আইনে কোনো উদ্বাস্তু বা রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী তিন বছর বা তার বেশি মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে, একমাত্র সেক্ষেত্রেই তার ‘রেসিডেন্সি স্ট্যাটাস' প্রভাবিত হবে৷

Infografik Angst wegen Flüchtlinge Umfrage Englisch

ডেমেজিয়ের-এর আগেই কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী, সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের হাইকো মাস অনুরূপ মনোভাব প্রকাশ করেছেন৷ তিনি বলেন যে, কোলোনের আক্রমণকারীরা যদি বাস্তবিক রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হয়, তবে তাদের বহিষ্কার করার কথা ভাবাই যেতে পারে৷ মাস বলেন, ‘‘এমনকি রাজনৈতিক আশ্রয় প্রাপ্তির প্রক্রিয়া চলাকালীনই আবেদনকারীকে বহিষ্কার করা চলে, যদি তার এক বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড হয়ে থাকে৷''

আইন কী বলে

ডেমেজিয়ের বলছেন তিন বছর, মাস বলছেন এক বছরের কারাদণ্ডের কথা৷ এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, আইনগত পরিস্থিতি জটিলতর৷ বস্তুত রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের বহিষ্কার করার জন্য এক বছরের কারাদণ্ডই যথেষ্ট৷ কিন্তু যারা উদ্বাস্তু হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন, তিন বছরের কম কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে তাদের বহিষ্কার করা সম্ভব নয়৷

সংশ্লিষ্ট আইনটি পাওয়া যাবে ‘জার্মান রেসিডেন্সি অ্যাক্ট'-এর ৬০ নং ধারায়: ‘‘(উদ্বাস্তু হিসেবে স্বীকৃতি) প্রযোজ্য হবে না, যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ কারণে সংশ্লিষ্ট বিদেশি/বহিরাগতকে ফেডারাল জার্মান প্রজাতন্ত্রের নিরাপত্তার পক্ষে একটি হুমকি বলে গণ্য করা হয়; অথবা সংশ্লিষ্ট বিদেশি যদি আপামর জনসাধারণের পক্ষে একটি ঝুঁকি হয়, কেননা তাকে কোনো অপরাধ বা গুরুতর আইনভঙ্গের দরুণ অন্তত তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে৷''

আইনের এই সূত্রটি পরিবর্তন করার কথা ভাবতে হবে, বলেছেন ডেমেজিয়ের৷ সমস্যা হলো এই যে, বহিষ্কার তো করা হবে; কিন্তু কোথায়? ‘জার্মান রেসিডেন্সি অ্যাক্ট' বলে, যেখানে বহিষ্কৃত ব্যক্তির গুরুতর হানি, মৃত্যুদণ্ড বা অপরাপর মানবাধিকার ভঙ্গের সম্ভাবনা আছে, তেমন সব দেশে কারুকে বহিষ্কার করা চলবে না৷ এখানেও একটা ফাঁক বা ফাঁকি আছে, বলছেন আইন বিশেষজ্ঞরা৷ বিদেশিকে তার স্বদেশে ফেরৎ না পাঠানো গেলে, অন্য কোনো দেশে পাঠানো যেতে পারে, যে দেশ তাকে নিতে প্রস্তুত – উত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে যা প্রযোজ্য৷

বহিষ্কার বিরোধীরা একদিকে জার্মান সংবিধান, অন্যদিকে জেনেভা চুক্তির দোহাই দিচ্ছেন৷ তাদের আরো একটি যুক্তি হলো: এক বছর না তিন বছরের কারাদণ্ড, সেটা প্রশ্ন নয়৷ প্রশ্ন হলো, সংশ্লিষ্ট পকেটমার বা নারী নির্যাতনকারী কি সেই কারাদণ্ড ভোগ করার পরেও ভবিষ্যতের জন্য একটা ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে? নয়ত জেনেভা চুক্তি অনুযায়ী উদ্বাস্তু হিসেবে তার যে সুরক্ষা পাওয়ার কথা, তা প্রত্যাহার করার কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না৷

উদ্বাস্তুদের বহিষ্কার করলেই কি সমস্যার সমাধান হবে? আপনার মতামত জানান নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান