1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলদস্যু আতঙ্কে বন্ধ ইলিশ ধরা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৫ জুন ২০১৩

বাংলাদেশে ইলিশ ধরার মৌসুম শুরু হলেও জলদস্যুদের ভয়ে সাগরে যেতে পারছেন না জেলেরা৷ তাঁরা এবার নিজেদের বিনিয়োগের টাকা তুলতে পারবেন কিনা – তা নিয়ে সন্দিহান৷ দাদন নিয়ে নৌকা এবং জালসহ ইলিশ ধরার সরঞ্জাম কেনাদের মাথায় হাত৷

https://p.dw.com/p/18vdH
Fishing boats are tied up in the harbour of Chittagong on May 15, 2013 during preparations for the expected arrival of Cyclone Mahasen. Cyclone Mahasen is moving northeastwards over the Bay of Bengal and expected to make landfall on May 17 morning north of the Bangladeshi city of Chittagong, sparing Myanmar's restive Rakhine state from its full fury, the UN said. AFP PHOTO/ Munir uz ZAMAN (Photo credit should read MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images)
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images

বাংলাদেশে পয়লা আষাঢ় থেকে শুরু হয়েছে ইলিশের মৌসুম৷ তাই জেলেরা সেভাবেই প্রস্তুত ছিলেন৷ এই যেমন, ২রা আষাঢ় ভোলার সিদ্দিক মাঝি জেলেদের বঙ্গোপসাগরে পাঠান ইলিশ ধরতে৷ কিন্তু ইলিশ ধরার সাধ তাঁরা পূরণ পারেন নি৷ বরং তাঁরা সাগরে গিয়ে পড়েন জলদস্যুদের কবলে৷ জলদস্যু কালাম বাহিনী নৌকা এবং জালসহ ১৯ জন জেলেকে অপহরণ করে৷ পরে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তাঁদের উদ্ধার করা হয় বলে জানান সিদ্দিক মাঝি৷ কিন্তু তিনি তাঁর মোট চারটি নৌকা এবং জাল ফেরত পাননি৷ ফলে তিনি আরো কমপক্ষে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন৷ তাই এখন জেলেরা আর সাগরে ইলিশ ধরতে যেতে সাহস পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি৷ বলা বাহুল্য, এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশে এবার ইলিশ মাছের আকাল দেখা দিতে পারে৷

একই অবস্থা চলছে বরগুণাসহ উপকূলীয় এলাকায়৷ বরগুণার সাংবাদিক জয়দেব রায় ডয়চে ভেলেকে জানান, জলদস্যুরা জেলেদের কাছে আগাম টাকা চেয়ে বার্তা পাঠাচ্ছে৷ টাকা না পেলে তারা জেলেদের অপহরণের হুমকি দিচ্ছে৷ তাই বরগুণার ৫০ হাজার জেলে এবার হাত-পা ঝেড়ে বসে আছেন৷ তাঁদের কথা, নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে এবার তাঁরা আর ইলিশ ধরতে যাবেন না৷

Wikipedia: Hilsa (Bengali: ইিলশ Ilish) is the national fish of Bangladesh, also popular in India's Assamese-, Bengali- Oriya-speaking regions and in Telugu-speaking regions (Telugu: పులస Pulasa or Polasa) and in Pakistan *** Fishermen bring in their day's catch of Hilsa fish from the mouth of the Ganges River Tuesday, September 2, 1997. This year's catch has been good, as high Monsoon tides have brought in more Hilsa than usual to spawn in the Ganges' fresh water.(AP Photo/Bikas Das)
বাংলাদেশে পয়লা আষাঢ় থেকে শুরু হয়েছে ইলিশের মৌসুম (ফাইল ফটো)ছবি: AP

ভোলার সাংবাদিক মেজবাহউদ্দিন শিপু ডয়চে ভেলেকে জানান, উপকূলীয় এলাকায় জলদস্যুদের অন্তত ১০টি সশস্ত্র দল আছে৷ তাদের আছে আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র এবং দ্রুত গতির ইঞ্জিন বোট৷ ফলে নিরীহ জেলেরা তাদের কাছে পুরোপুরি জিম্মি৷ এই ভরা মৌসুমে প্রায় পাঁচ লাখ জেলে তাদের হুমকির মুখে রয়েছে৷ তাঁরা যদি ইলিশ ধরতে না পারেন তাহলে পরিবার নিয়ে তাঁদের উপোস যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না৷ যাঁরা দাদন নিয়ে জাল ও নৌকা কিনেছেন তাঁরা পড়েছেন ঋণের ফাঁদে৷ লোকমান হোসেনসহ কয়েকজন জেলে ডয়চে ভেলেকে জানান যে, তাঁরা এখন কিভাবে ঋণ শোধ করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা৷ পুলিশ ও কোস্ট গার্ডেরও তেমন সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না, জানান তাঁরা৷ এছাড়া, এবার জলদস্যুরা টোকেন প্রথা চালু করেছে৷ তাদের যারা আগাম চাঁদা দেয় তাদের বিশেষ ধরণের টোকেন দেয়া হয়৷ সাগরে ইলিশ ধরার সময় সেই টোকেন যাদের কাছে থাকে, তারা নিরপদ৷ কিন্তু না থাকলে জলদস্যুরা নৌকা এবং জালসহ জেলেদের ধরে নিয়ে মুক্তিপন আদায় করে৷ আর মুক্তিপন না পেলে তারা জেলেদের হত্যা করতেও পিছপা হয় না৷

ভোলা জেলার এসপি মো. মনিরুজ্জামান ডয়চে ভেলের কাছে জলদস্যুদের এই তত্‍পরতার কথা স্বীকার করেন৷ তিনি জানান, জলদস্যুরা মূলত নোয়াখালির হাতিয়া এবং সুন্দরবন কেন্দ্রিক৷ তারা বিরান চর এবং গভীর বনে আস্তানা বানিয়ে পুরো উপকূলীয় এলাকাতেই দস্যুতা করে৷ জেলেদের অপরহরণ করে নিয়ে গিয়ে চরাঞ্চলে তাদের আস্তানায় রাখে৷ তিনি জানান, এই জলদস্যুদের আধুনিক নৌযান এবং আগ্নেয়াস্ত্র আছে৷ শুধু পুলিশের একার পক্ষে তাদের দমন করা সম্ভব নয়৷ তাই ব়্যাবের মহাপরিচালককে প্রধান করে পুলিশ, ব়্যাব এবং কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে৷ এই টাস্কফোর্স জলদস্যু দমনে যৌথ অভিযান চালাবে৷ সেই অভিযান নিয়ে খুলনায় ইতিমধ্যেই প্রাথমিক বৈঠক করেছেন তাঁরা৷ শীঘ্রই অভিযানটি শুরু হবে আর চলবে পুরো বর্ষা মৌসুম ধরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য