‘ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩ জন মারা গেলেও কথা হয় না, বাংলাদেশে দু'জন মারা যাওয়া নিয়ে এত কথা কেন?' বক্তব্যটি নৌ-পরিবহণ মন্ত্রী শাহজাহান খানের৷এর প্রেক্ষিতে ডয়চে ভেলের অসংখ্য পাঠক মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন, দিয়েছেন ধিক্কার৷
সড়ক দুর্ঘনায় দু'জন ছাত্রের মৃত্যুর খবরে দেশের একজন মন্ত্রীর এমন বক্তব্যে পাঠক গোলাম ফারুক লিখেছেন, ‘‘এ তো ভয়ংকর, নিষ্ঠুর একজন ভিলেনের প্রতিচ্ছবি৷ কি লজ্জা! অবশ্য মন্ত্রীর কোনো লজ্জা আছে বলে মনে হয় না৷''
‘‘তবে দায়বদ্ধতা ও জনসম্পৃক্ততা ‘না' থাকলে এমন বেফাঁস মন্তব্য যে কেউ করতে পারে৷ দেশ এবং দেশের মানুষের প্রতি এদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই৷ এমন অথর্ব লোক আমাদের দেশে মন্ত্রীত্ব করে, যা ভাবতেই কষ্ট হয়৷ আজব দেশ...!'' বাংলাদেশের নৌ-পরিবহণ মন্ত্রী সম্পর্কে এই মন্তব্যটি করেছেন ডয়চে ভেলের পাঠক রহুল আমীন সজীব৷
সালেক মোহাম্মদ লিখেছেন, এই রোড অ্যাক্সিডেন্টের পুরো দায় সরকারের ওপরেই বর্তায়৷ তবে সালেক মোহাম্মদের কথায়, ‘‘এদের বিচারের সম্মুখীন করাটা খুবই জরুরি৷ এরা দেশের ‘রোড কালচার' চিরতরে ধ্বংস করে ফেলেছে৷ শুধু ইন্ডিয়ার কারণেই এরা ক্ষমতায় আছে, অথচ বিএনপি এটাকে ইস্যু করে একটা কথাও বলেনি৷ ‘শেম টু বিএনপি'৷''
অন্যদিকে পাঠক নজরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘স্বাধীন দেশে ন্যায় দাবি করতে গেলে রাজাকারের বাচ্চা উপাধি পেতে হয়, অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে জামাত-শিবির হতে হয় ৷আর এখানে মন্তব্য করলে কী উপাধি পেতে হয় তার ভয়েই থাকতে হবে৷''
পাঠক শাহ নেওয়াজ দুঃখ করে লিখছেন, বাংলাদেশে সাধারণ জনগণের মতামতের কোনো মূল্যই নেই৷
পাঠক মহিউদ্দিন শিবলিরও নূর হোসেনের সাথে একমত৷ শিবলির ধারণা, যতদিন এ ধরনের কুলাঙ্গার মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদ এ দেশে থাকবে, ততদিন এ ধরনের দুর্ঘটনা, দূর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাট, চুরি চলতেই থাকবে৷
নূর হোসেন লিখেছেন, ‘‘একজন স্বশিক্ষিত ব্যক্তির থেকে ভালো কিছু আশা করা যায়৷ কিন্তু আমরা তো স্বশিক্ষিত জাতি হতে পারিনি৷ আমরা সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত৷ আমাদের জ্ঞানের পরিধি অনুযায়ী আমরা কথা বলি, কাজ করি৷ সুতরাং এতে মূল্যায়ন করার মতো সুযোগ নেই৷''
‘‘আমরা অত্যান্ত লজ্জিত যে ওনার মতো এমন একজন ব্যক্তি বাংলাদেশের মন্ত্রী!ভারতে ৩৩ জন মারা গেলেও কোনো কথা হয় না৷ আর এখানে দু'জন মারা যাওয়াতে এত কথা হচ্ছে....এই কথার মাধ্যমে উনি আসলে কী বোঝাতে চাইছেন? তাছাড়া এই দু'টো ঘটনার মাঝে তুলনা করার কোনো কারণও আমি দেখছি না৷ ভারতের জনগণ যদি ৩৩ জনের মৃত্যু নিয়ে কোনো কথা না বলে তাতে আমাদের কী? তাই ওনার এই কথাকে হাজার বার ছি: দিলাম!!'' – এমনটাই মনে করেন পাঠক মিজানুর রহমান শাহীন৷
‘‘ভারতে যা হয় হোক, আমাদের দেশে এমনটা চলবে না৷ আপনাদের জবাবদিহি করতে হবে....কারণ মন্ত্রী মহোদয়, আপনি আমাদের সেবক, বস নন৷ নিজ ইচ্ছায় পদত্যাগ করুন, তা না হলে জনগণ টেনে নিয়ে আপনাকে নামাবে৷'' এই সতর্ক বাণী পাঠক এআর রহমানের৷
‘‘মন্ত্রীর পদত্যাগ নয়, তাকে বরখাস্ত করা হোক'' – এভাবেই জোর দাবি জানিয়েছেন বন্ধু সুজন গুপ্ত৷
‘‘মন্ত্রী এই কথা বলেন কীভাবে?' – আনন্দ চন্দ্র দাসের প্রশ্ন৷
‘‘এই মন্ত্রী মানুষ নামের হায়েনা'', মনে করেন আবদুল্লাহ আল নোমান পলাশ৷
‘‘আমার কথা হচ্ছে ভারতের সাথে কেন আমরা আমাদের তুলনা করব?'' প্রশ্ন করেছেন ডয়চে ভেলের পাঠক তানভির৷
‘‘অমানুষ না হলে এই কথা বলতে পারত না৷ দুঃখিত এরাই আমাদের মন্ত্রী'' – মন্তব্য ওবায়দুল্লাহ মিজানের৷
সংকলন: নুরুননাহারসাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ