1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাতিসংঘের ‘শেষ উদ্যোগ’

সমীর কুমার দে, ঢাকা৭ ডিসেম্বর ২০১৩

রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতিসংঘ আগেই উদ্যোগ নিয়েছে৷ মহাসচিব বান কি-মুন টেলিফোন ও চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই নেত্রীর সঙ্গে৷ এবার পাঠিয়েছেন প্রতিনিধি৷

https://p.dw.com/p/1AUj9
UN Logo
ছবি: picture-alliance/dpa

জাতিসংঘের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো এই নিয়ে তৃতীয়বার বাংলাদেশে গেলেন৷ শুক্রবার রাতে ঢাকায় পৌঁছার পর শনিবার সকাল থেকেই দিনব্যাপী সিরিজ বৈঠক করছেন৷ পাঁচ দিন ঢাকায় অবস্থান করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে অন্তত চার দফা করে বৈঠক করবেন তিনি৷ প্রধান দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার সঙ্গে অন্তত দুই দফা বৈঠক করার কথা তাঁর৷ এর ফলে শেষ পর্যন্ত বরফ গলবে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয় বলে মনে করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷ তাঁরা বলছেন, এটাই হয়তো সংকট নিরসনে জাতিসংঘের শেষ উদ্যোগ৷

শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে তারানকো জার্মান রাষ্ট্রদূতের বাসায় একটি বৈঠকে বসেন৷ এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে তিনি সিরিজ বৈঠক শুরু করেন৷ এরপর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রথমে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক ও পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করেন৷ তবে এসব বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি৷ অবশ্য বৈঠক সূত্র জানায়, তারানকো বৈঠকগুলোতে বলেছেন, জাতিসংঘ চায় সবার অংশগ্রহণে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক৷ এ পরিবেশের জন্য সংলাপ দরকার৷ সংলাপের জন্য সব ধরনের উদ্যোগের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে৷ চলমান পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ উদ্বিগ্ন বলেও জানান তিনি৷

Kombobild Khaleda Zia und Sheikh Hasina
ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ফিরে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনার সঙ্গে বৈঠক করেন তারানকো৷ এরপর সোনারগাঁও হোটেলে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ তারপর চলে যান গণভবনে৷ সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন৷ সন্ধ্যায় বৈঠক করেন বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে৷

এবারকার ঢাকা সফরে তারানকো পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ ১০ ডিসেম্বর তাঁর ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে৷

তারানকোর সঙ্গে বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের দূতের এই সফর সফল হবে, বলে তিনি আশা করছেন৷ দেড় ঘণ্টার বৈঠকে সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়নি জানিয়ে আশরাফ বলেন, এটা ছিল প্রাথমিক আলোচনা৷ তারানকোর সঙ্গে তাদের আরো বৈঠক হবে৷ বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী, সাবেক রাষ্ট্রদূত শাহেদ রেজা, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ফারুক খান৷ তারানকো রবিবার বিএনপির প্রতিনিধি দল ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করবেন৷

নির্বাচনকে ঘিরে রাজপথে সংঘাত-সহিংসতার মধ্যে তারানকোর এই সফরকে দেখা হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মধ্যস্থতার শেষ উদ্যোগ হিসেবে৷ তারানকোর এবারের সফর নিয়ে ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক নেইল ওয়াকার এর আগে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘আগামী ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সহায়ক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে সংলাপে বসতে রাজনৈতিক দলগুলোকে উৎসাহিত করবেন তিনি৷''

গত মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে বান কি-মুনের দু'টি চিঠিও তাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব৷ এরপরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় প্রধান দুই নেত্রীকে কয়েকদিন আগেও চিঠি লেখেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন৷ ওই চিঠিতে সংকট সমাধানে সংলাপের আহ্বান জানান তিনি৷

এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারানকোর এই সফরের কর্মসূচি ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধের বাইরে থাকবে৷ প্রাথমিকভাবে তারানকোর সফরকালে কর্মসূচি না দেয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও পরবর্তীতে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিরোধী দলীয় জোট৷ এর কারণ হিসেবে তারা বলেছে, গত ৪ ডিসেম্বর যেভাবে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিং অবরোধ চলাকালে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিনা বাধায় বৈঠক করেছেন ঠিক সেভাবেই তারানকো তাঁর কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য