এক নজরে ক্ষমতার অপব্যবহারের তিন দশক
চিলিতে চলমান প্রতিবাদ বর্তমানে আক্রমণ করছে গত তিন দশক ধরে চলে আসা ক্ষমতার অপব্যবহারকে৷ বিস্তারিত ছবিঘরে...
প্রতিবাদের উৎস
দুই সপ্তাহ আগে চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোতে শুরু হয় প্রতিবাদ৷ কারণ, সাবওয়ের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ৩০ পেসো৷ প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেয় শিক্ষার্থীরা৷ বর্তমানে, সেই প্রতিবাদ বড় আকার ধারন করে নতুন করে প্রশ্ন করছে গত ৩০ বছর ধরে সেখানে চলে আসা ক্ষমতার অপব্যবহার, সামাজিক বৈষম্য ও নয়াউদার অর্থনীতিকে৷
যেখান থেকে শুরু..
১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত চিলির শাসনভার ছিল স্বৈরশাসক আউগুস্তো পিনোচেটের হাতে৷ সেই সময়েই চিলিতে শুরু হয় নয়া উদার অর্থনীতির রাজনীতি৷ একে একে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও জলের মতো পরিষেবার বেসরকারিকরণ ঘটে৷ বাড়তে থাকে দেশে আর্থিক ও সামাজিক অসমতা৷ পিনোচেটের আমলের পর থেকে বদলায়নি এই নীতি৷ ফলে, ক্রমশ বেড়েছে জনগণের মনে ক্ষোভ৷
বাস্তব পরিস্থিতি
সান্তিয়াগোর একটি সরকারি হাসপাতালের সার্জন রিকার্ডো কাসেরেস বলেন, ‘‘এখানের সরকারি হাসপাতালে ওষুধ নেই৷ সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অর্থায়নের বদলে সরকার টাকা ঢালছে বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায়৷ চিলিতে মূল সমস্যা এখন গরীব ও বিত্তবানের মধ্যের ব্যাপক ফারাক, যা অন্যায় ছাড়া কিছুই নয়৷’’
প্রতিবাদ নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট সেবাস্টিয়ান পিনেরার অপসারণের দাবিতেই উত্তাল চিলির একাধিক শহর৷ সেই পিনেরার নির্দেশেই প্রতিবাদী জনতাকে সামলাতে নামানো হয় ১০ হাজার সেনাসদস্য৷ জনতার সাথে সেনার সংঘর্ষের কারণে ইতিমধ্যে মারা গেছেন ২০ জন, এক হাজারেরও বেশি মানুষ আহত ও সাড়ে তিন হাজার প্রতিবাদী ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে জানা গেছে৷
প্রশ্ন আসলেই কি ৩০ পেসোর?
চিত্রশিল্পের শিক্ষক আরিয়েলা কন্টেরাস বলছেন, ‘‘আমাদের সমাজের মাত্র এক শতাংশ মানুষের হাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা৷ তারাই সবচেয়ে বিত্তশালী৷ এই মানুষদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে বর্তমান সরকার৷ আমরা ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছি৷ তাই এই প্রতিবাদ এখন আর শুধু মানুষের ওপর বাড়তি ৩০ পেসোর বিষয়ে আটকে নেই৷ প্রশ্ন এখন ৩০ বছরের ক্রমাগত অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর৷’’
জরুরি অবস্থায় চিলি, সরবেন কি পিনেরা?
মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সার্বিক বিশৃঙ্খলায় চিলিতে এখন জরুরি পরিস্থিতি৷ চলতি সপ্তাহেই জাতিসংঘের একটি দল রওয়ানা দেবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে৷ ইতিমধ্যে, বিরোধী দলগুলি থেকে শুরু হয়েছে প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করার প্রক্রিয়া৷ কিন্তু সেনেটে ভোটাভুটির পালা এখনও বাকি৷ প্রতিবাদীরা বলছেন যে পিনেরা না সরা পর্যন্ত রাস্তায় থাকবেন তারা৷ স্বৈরাচার, গণতন্ত্রের পর এবার কোন পথে যাবে চিলি?