1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এসএমএস করেই তালাক দেওয়া যাচ্ছে জর্ডানে, শঙ্কিত সমাজ

৯ এপ্রিল ২০১০

সম্প্রতি জর্ডানে বেড়ে চলেছে এসএমএস এর মাধ্যমে তালাক দেওয়ার প্রবণতা৷ আর ব্যাপারটা সেখানে ‘ইলেক্ট্রনিক ডির্ভোস’ নামে বেশ পরিচিত৷ গত বছরে এইভাবে প্রায় ৪৫০ টি তালাকের ঘটনা ঘটেছে৷

https://p.dw.com/p/MrQm
এসএমএস করে তালাক দেওয়া হচ্ছে হামেশাইছবি: AP

এসএমএস করে তালাক দেওয়া বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে মুখ খুলেছেন ‘ইসলামিক অ্যাকশন ফ্রন্ট' এর ফতোয়া বিভাগের প্রধান এবং জর্ডনের প্রাক্তন ধর্ম বিভাগের মন্ত্রী ইব্রাহিম কিলানি৷ কিলানি জর্ডান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক আইন বিভাগের ডিন বা প্রধান পদে রয়েছেন৷ জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএকে তিনি জানান, ‘‘তালাকের অবশ্যই কাগজপত্র থাকা উচিৎ যা নিশ্চিত করবে কোন স্বামী কেন তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিচ্ছেন৷ এবং তিনি যখন তালাক দিচ্ছেন সেই মুহূর্তে তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছেন কিনা৷'' কিলানির দৃঢ় বিশ্বাস, এই ধরণের তালাক সামাজিক সন্ত্রাসের পর্যায়েই পড়ে৷ আর সৃষ্টিকর্তা কোন অবস্থাতেই এই ধরণের অপ-পদ্ধতি মেনে নেবেন না৷

আধুনিক প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে আধুনিক, কল্যাণকর এবং গতিময় করে তোলার জন্য, তবে আধুনিকতার নামে প্রযুক্তির অপব্যবহার হতে থাকলে তা সত্যিই চিন্তারই বিষয়৷ তবে সৌদি আরব সহ কিছু ইসলামি দেশে তালাকের বিষয়ে নারীদের কথা বলার কোন সুযোগ রাখা হয়নি৷ সম্পূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র পুরুষকেই৷ ফলে আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নতুন এক তালাক পদ্ধতি ব্যবহার করে চলেছে পুরুষরা৷ যা শুধু একটি মোবাইল ফোন হাতে থাকলেই করা সম্ভব৷

মোবাইলের সাহায্যে ‘ইলেক্ট্রনিক ডির্ভোস' এর কড়া সমালোচনা করেছে জর্ডানের সুশীল সমাজ এবং জর্ডান নারী ইউনিয়ন (জেডাব্লিউইউ)৷ জেডাব্লিউইউ এর চেয়ারপার্সন নাদিরা সামরোখ ডিপিএকে বলেছেন, এই পদ্ধতিতে যেসব তালাকের ঘটনা ঘটেছে তা বাতিল এবং অকার্যকর করতে হবে৷ তিনি বলেন, জর্ডানের আইনে কোন বিয়ে আদালতে রেজিস্ট্রেশন করার সময় স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই উপস্থিত থাকতে হয়৷ আর তাই এই একই আইন অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদও একইভাবে সম্পন্ন হওয়ার কথা৷ অর্থাৎ, এই ইলেক্ট্রনিক ডির্ভোস-এর আসলে কোন আইনগত ভিত্তিই নেই৷

জর্ডানের মহিলা সমাজের প্রতিনিধি নাদিরা সামরোখের মতে, অনেক সময় পারিবারিক বা অন্য কোনরকম চাপের মুখে পড়ে কিংবা রাগের বশে কেউ কেউ তাঁর স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার মত গুরুতর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন৷ আর তখনই তাঁরা এসএমএস এর মাধ্যমে তাঁদের স্ত্রীদের তালাক দিয়ে দেন৷ এক্ষেত্রে বোঝাই যাচ্ছে যে, ওই স্বামী ভদ্রলোক পুরো ব্যাপারটা নিয়ে একবার অন্তত ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করার সুযোগ থেকে তাঁর স্ত্রীকে যেমন বঞ্চনা করছেন, তেমনই বঞ্চিত করছেন তিনি নিজেকেও৷ এবং হঠকারী এই সিদ্ধান্তে বঞ্চিত হচ্ছে একটি সম্পূর্ণ পরিবারও৷

এই সমস্ত কারণেই এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে, যাঁরা এইসব এসএমএস পাঠিয়ে তালাক দিয়েছেন, সেই সময় সত্যিই কোনরকম মানসিক চাপের সম্মুখীন তাঁরা ছিলেন কিনা৷ তাছাড়া আইনের মাধ্যমেও এই পদ্ধতিতে তালাক দেওয়ার প্রচলন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷

প্রতিবেদক : আসফারা হক

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক