1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দিতে মাঠে নামবেন প্রিয়াঙ্কা?

অনিল চট্টোপাধ্যায় নতুন দিল্লি
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কংগ্রেস সুপ্রিমো সোনিয়া গান্ধীর ছেলে রাহুলের হাতে দলের ব্যাটন তুলে দেবার পরও উল্লেখযোগ্য উন্নতি না হওয়ায় আবার জেগে উঠেছে দলে সোনিয়া-কন্যা প্রিয়াঙ্কা ভদ্রার ভবিষ্যৎ ভূমিকার প্রশ্ন৷ তবে ধোঁয়াশা আগে যেমন ছিল, এখনো আছে৷

https://p.dw.com/p/34HGQ
Priyanka Gandhi
ছবি: Imago/Xinhua

স্বাস্থ্যের কারণে সোনিয়া গান্ধী বর্তমানে দলের কাজকর্ম ঠিকমতো দেখাশোনা করতে অপারগ৷ ২০১৯ সালের সংসদীয় নির্বাচনে সোনিয়া গান্ধী আদৌ দাঁড়াবেন কিনা, তা নিয়েই চলছে জল্পনা৷ রাজনৈতিক অঙ্গনে পা রাখার পর থেকেই কংগ্রেসের অন্দরমহলের ধারণা, দলের সাংগঠনিক সাফল্যের প্রেক্ষিতে প্রিয়াঙ্কা মায়ের নির্বাচনি কেন্দ্র উত্তর প্রদেশের রায়বেরিলি কেন্দ্রের সবথেকে উপযুক্ত প্রার্থী৷ কংগ্রেস থেকেও বলা হয়েছিল সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের আঁতাত গড়ে তুলতে প্রিয়াঙ্কার অগ্রণী ভূমিকা অনস্বীকার্য৷ দ্বিতীয়ত, ১৯৯৯ সাল থেকে উত্তর প্রদেশের আমেথি এবং রায়বেরিলী সংসদীয় আসন দুটি ধরে রাখতে প্রিয়াঙ্কার ভূমিকা সন্দেহাতীত৷ সোনিয়া গান্ধী ১৯৯৯ সালে প্রথমে ভোটে জিতেছিলেন আমেথি থেকে৷ ২০০৪ সালে আমেথি সংসদীয় আসনটি ছেলে রাহুলের হাতে দিয়ে সোনিয়া দাঁড়ালেন রায়বেরিলী কেন্দ্র থেকে৷ দুটি আসনই তখন থেকে গান্ধী পরিবারের ঝুলিতে৷ তার আগে অবশ্য দাঁড়িয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী৷ সেদিক থেকে ঠাকুরমা এবং মায়ের কেন্দ্র হিসেবে রায়বেরিলী আসনটি প্রিয়াঙ্কার জন্য উপযুক্ত৷ রাহুলকে দলীয় কাজকর্মে সাহায্য করছেন প্রিয়াঙ্কা, যেগুলি আগে সামলাতেন সোনিয়া নিজে৷

২০১৪ সালের ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর থেকেই শ্লোগান উঠেছে দলের হাল ধরুক প্রিয়াঙ্কা৷ পোস্টারও পড়েছে এখানে-সেখানে৷ প্রিয়াঙ্কা আসুক, দেশ বাঁচুক৷রাহুলের ওপর অনেকেরই তখন আস্থা ছিল না৷ রাহুল স্বভাবে ছিলেন অন্তর্মুখী৷ অন্যদিকে প্রিয়াঙ্কার মধ্যে সবার সঙ্গে মেলামেশা করার একটা স্বাভাবিক প্রবণতা আছে, যেটা দলের পক্ষে ইতিবাচক৷ কিন্তু প্রিয়াঙ্কা চাননি পরিবারে এই নিয়ে ফাটল ধরুক৷ তাই তাতে সাড়া দেননি তিনি৷ পড়েছিলেন আমেথি এবং রায়বেরিলী আসন দুটি আঁকড়ে৷ বরং চেয়ে এসেছেন সোনিয়া, রাহুল এবং নিজের পারিবারিক বন্ধনে দলকে মজবুত করতে৷

দলে প্রিয়াঙ্কার ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি৷ আগেও যেমন ছিল, এখনো আছে৷ সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটি এআইসিসির জেনারেল সেক্রেটারি শাকিল আহমেদের কথায়, প্রিয়াঙ্কা নিজেই ঠিক করবেন আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন কিনা৷ কাজেই ধন্দটা রয়েই গেছে৷

Rahul Gandhi Priyanka Gandhi Robert Vadra
রাহুল গান্ধী, প্রায়াঙ্কা গান্ধী ও তাঁর স্বামী রবার্ট ভদরাছবি: AP

এবিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অমূল্য গাঙ্গুলির কাছে ডয়চে ভেলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের দুর্দিন কেটে গেছে. এখন অবস্থাটা আগের চেয়ে ভালো৷  প্রিয়াঙ্কার আসার কোনো কারণ নেই৷  প্রিয়াঙ্কা ফিরে আসুক শ্লোগান সম্পর্কে বলা যায়, দলের মধ্যে অনেকে প্রিয়াঙ্কার সমর্থক৷ প্রিয়াঙ্কা ভোটে দাঁড়ালেও দাঁড়াতে পারেন৷ তবে রাহুল শীর্ষ নেতা হয়েই থাকবেন৷ রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে গান্ধী পরিবারের কেন্দ্রগুলি প্রিয়াঙ্কা যেমন দেখাশুনা করছিলেন, তা তেমনি চলবে৷ সামনেই চারটি রাজ্যে বিধানসভা ভোট৷ তাতে কংগ্রেস ভালো ফল করবে বলে মনে হয়৷ তারপরই ছবিটা পরিষ্কার হবে৷ আগে রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে যত সন্দেহ ছিল, এখন আর তা নেই৷ রাহুল আগের চেয়ে এখন অনেক পরিণত৷ মিডিয়াতেও তা বলছে৷ আর প্রিয়াঙ্কার স্বামী রবার্ট ভদ্রার বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির অভিযোগ তো  অনেক পুরানো৷ এখনও পর্যন্ত তা প্রমাণিত হয়নি, ডয়চে ভেলেকে বললেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষক অমূল্য গাঙ্গুলি৷

‘প্রিয়াঙ্কার স্বামী রবার্ট ভদ্রার বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির অভিযোগ পুরানো যা প্রমাণিত হয়নি’

 অনেক দিন ধরেই সোনিয়া গান্ধীর জামাই রবার্ট ভদ্রা কংগ্রেস দল থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতেন৷ সম্প্রতি দিল্লি লাগোয়া হরিয়ানা রাজ্যে গুরুগ্রামে জমি বেচাকেনায় দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত জনৈক সুরেন্দ্র শর্মার অভিযোগের ভিত্তিতে হরিয়ানা পুলিস রবার্ট ভদ্রা এবং রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিং হুডার বিরুদ্ধে এফআইআর করার পর কংগ্রেস আর চুপ কোরে থাকতে না পেরে রবার্টের সমর্থনে এগিয়ে আসে৷ দলের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ফরাসি যুদ্ধ বিমান রাফাল থেকে বিমূদ্রাকরণ,পেট্রল-ডিজেলে ১২ লক্ষ কোটি টাকা লুট, বছরে দুই কোটি কর্মসংস্থানে ব্যর্থতা ঢাকতে মোদী সরকার জনগণের দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হুডার মন্তব্য, নির্বাচনি জয়ের সম্ভাবনা যত ম্লান হচ্ছে, বিজেপি সরকার তত বেশি কোরে অযৌক্তিক মামলা খাড়া করছে৷ জমি দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্তকারী ধিংড়া কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ না করেই এফআইআর হয়েছে, এ আর নতুন কি ? রবার্ট ভদ্রার নিজের মন্তব্য, ভোটের মরশুমে অন্যদিকে দৃষ্টি ঘোরানো ছাড়া আর কি ? তদন্তের মুখোমুখি হতে আমি ভয় পাইনা৷  জমি দুর্নীতি সম্পর্কে কংগ্রসের বক্তব্য, ২০০৮ সালে গুরুগ্রামের বাণিজ্যিক এলাকায় যাবতীয় ট্যাক্স দিয়ে সাড়ে তিন একর জমি কিনেছিলেন ভদ্রার স্কাইলাইট কোম্পানি৷ পাঁচ বছর পর যাবতীয় কর মিটিয়ে সেটি বিক্রি করা হয় রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ডিএলএফকে৷ গোটা লেনদেনে কোথায় দুর্নীতি ? এই ধরণের জমি বেচাকেনা বহু হয়েছে৷ শুধু রবার্টের সাড়ে তিন একরেই শুধু দুর্নীতি খুঁজে পাচ্ছে মোদী সরকার ৷ নিজেকে এক সমাজকর্মী বলে দাবি কোরে সুরেন্দ্র শর্মার অভিযোগে কি ছিল ? তৎকালীন কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ভূপেন্দ্র সিং হুডা৷  তিনি সোনিয়া গান্ধীর জামাই হিসেবে রবার্ট ভদ্রাকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন৷ তাতে ভদ্রার লাভ হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান