1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কঠিন সময়ে ত্যাগের ঈদ

ফয়সাল শোভন
১ আগস্ট ২০২০

অর্থনীতি, প্রকৃতি আর স্বাস্থ্যগত সংকটের কঠিন এক সময়ে ঈদ উদযাপন করছেন বাংলাদেশের মানুষ৷ কোরবানির ত্যাগের শিক্ষা হোক এই পরিস্থিতি মোকাবিলার অনুপ্রেরণা৷ 

https://p.dw.com/p/3gF0u
Bangladesch | Muslimisches Opferfest Eid al-Adha 2020
ছবি: picture-alliance/Xinhua News Agency

করোনার কঠিন বাস্তবতায় রোযার ঈদপালন করেছেন বাংলাদেশের মানুষ৷ অর্থনৈতিক সংকটটা তখনও ততটা প্রকট হয়ে উঠেনি, যতটা হয়েছে এখন৷ শহর ছেড়ে কর্মহীন বহু মানুষ গ্রামে পাড়ি জমিয়েছেন৷ কিন্তু সেখানেও তারা ভালো নেই৷ মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে বন্যা৷

সবশেষ সরকারি হিসাবে দেশের প্রায় এক চতুর্থাংশ পানিতে তলিয়ে গেছে৷ ৪৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন৷ মৃত্যু অর্ধশত পেরিয়েছে৷ এমন এক পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে মানুষ কোরবানির ঈদ পালন করছেন৷

আরবি ঈদুল আজহা শব্দের অর্থ কোরবানি বা ত্যাগের উৎসব৷ মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, হযরত ইবরাহীম (আ.) সৃষ্টিকর্তার আদেশ পালনের উদ্দেশ্যে প্রাণপ্রিয় পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ.)-কে তার সম্মতিতে কোরবানি করতে উদ্যত হন৷ কিন্তু আল্লাহ তার সংকল্পে সন্তুষ্ট হয়ে হযরত ইবরাহীম (আ.)-কে পুত্রের স্থলে একটি পশু কোরবানির আদেশ দেন৷ এরপর থেকে মুসলিমরা প্রতি বছর আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে প্রতিবছর পশু কোরবানি দিয়ে আসছেন৷

বাংলাদেশে কোরবানির ধর্মীয় মহিমার পাশাপাশি আছে অর্থনৈতিক গুরুত্বও৷ সরকারি হিসাবে এখন প্রতিবছর এক কোটির বেশি পশু কোরবানি হয়৷ কোরবানিকে কেন্দ্র করে সঞ্চালিত হয় গ্রামীণ অর্থনীতি৷ লেনদেন হয় কয়েক হাজার কোটি টাকা৷ আবার কোরবানির পশুর চামড়াকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশে ট্যানারি শিল্প বিকশিত হয়েছে৷ গড়ে উঠেছে চামড়াজাত পণ্য তৈরির কারখানা, যা কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা আয়েরও অন্যতম খাত৷

শঙ্কার বিষয় হলো, অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে এ বছর অনেকেই কোরবানি দিতে পারছেন না৷ আবার করোনা এবং বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়ায় চামড়া শিল্প আগে থেকেই ধুঁকছে৷ ট্যানারিগুলোতেও তাই আগের মতো চামড়ার চাহিদা নেই৷ সব মিলিয়ে এই বছর কোরবানি যে অন্যবারের মতো অর্থনীতিকে চাঙা করবে না তা বলা বাহুল্য৷

তারপরও কোরবানিরত্যাগের শিক্ষা সংকটময় এই সময় পার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে৷ ইসলামের বিধান অনুযায়ী, কোরবানিকৃত পশুর তিন ভাগের একভাগই আত্মীয়-স্বজন আর দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে হয়৷ চামড়া থেকে বিক্রিত অর্থও শুধু গরিবরাই পাবে৷ ত্যাগের এই শিক্ষা এখন গুরুত্বপূর্ণ অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে৷ কাজ হারানো, দারিদ্র্যসীমার নীচে নেমে আসা মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো আমাদের সবার কর্তব্য হয়ে উঠেছে৷ উৎসবের মাঝে বন্যায় নিঃস্ব হওয়া মানুষগুলোকেও ভুলে গেলে চলবে না৷

কোরবানির ত্যাগের থেকে শিক্ষা নিক রাষ্ট্রও৷ সমাজে সুষম বণ্টন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সরকারেরও দায়িত্ব৷

DW Mitarbeiterportrait | Faisal Ahmed
ফয়সাল শোভন ডয়চে ভেলের মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক৷@FaisalShovon14