1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনাকালেও সবাইকে ‘সম্মানজনক' জীবন দিয়েছে জার্মানি

১০ জুলাই ২০২০

জার্মানিতে বসবাসরত প্রতিটি মানুষের সম্মানজনক জীবনযাপন নিশ্চিত করাকে দায়িত্ব মনে করে সরকার৷ আর করোনাকালেও সেই দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকেনি রাষ্ট্রটি৷ বরং করোনার প্রভাবে কেউ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটা নিশ্চিত করেছে৷

https://p.dw.com/p/3f5m8
Ein Spendenzaun in Berlin-Kreuzberg (Foto vom 24.03.2020). In ganz Deutschland entstehen derzeit sogenannte Spenden- ode
ছবি: imago images/epd

ইউরোপের ধনী দেশ জার্মানি৷ কতটা ধনী সেটা বোঝানো যেতে পারে ছোট্ট এক হিসেব দিয়ে৷ করোনা মহামারির শুরুর দিকেই জার্মান সরকার এই ভাইরাসের ক্ষতি মোকাবিলায় এক ট্রিলিয়ন ইউরো বরাদ্দের ঘোষণা দিয়ে দিলো৷ এক ট্রিলিয়ন ইউরো মানে ৯৫ লাখ কোটি টাকা! বাংলাদেশের বেশ কয়েক বছরের বাৎসরিক বাজেটের সমান এই অর্থ জার্মানরা শুধু করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যবহার করছে৷

এবার জানাই,সাধারণ মানুষকে কিভাবে রাষ্ট্রটি রক্ষা করছে৷ জার্মান সরকার শুরু থেকেই করোনার কারণে বেকারত্বের হার যাতে না বাড়ে সেদিকটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে৷ এজন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ সহায়তা করা হয়েছে, যাতে সেসব প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই না করে৷ একইসঙ্গে যেসব কাজ ঘরে থেকে করা সম্ভব, সেগুলো যাতে ঘরে বসে করা হয়, সেটাও নানাভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে৷ পাশাপাশি, যারা এই ভাইরাসের কারণে চাকুরি হারিয়েছেন, তাদের দ্রুত রাষ্ট্রীয় সামাজিক সুযোগ-সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে৷ ফলে, আয় কমে গেলেও কেউ ‘অসম্মানজনক' পরিস্থিতিতে পড়ে যাননি৷

মূলত, আর্থিক সহায়তা, অর্থনীতির চাকা সচল রাখার মাধ্যমে জার্মান সরকার দেশটিতে বসবাসরত প্রতিটি মানুষকে করোনাকালে রক্ষা করে গেছে৷ এবং সেটা একক ব্যক্তির ক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য, তেমনি প্রযোজ্য পরিবারেরক্ষেত্রে৷ খ্রিষ্টানপ্রধান রাষ্ট্রটি পরিবারকে বাড়তি গুরুত্ব দেয় এবং মানুষকে পারিবারিক সম্পর্কে আবদ্ধ হতে উৎসাহী করে৷ তাই করোনাকালে পরিবারগুলো যাতে টিকে থাকতে পারে সেক্ষেত্রেও আলাদা গুরুত্ব দেয়া হয়েছে৷ এক্ষেত্রে শিশুদের স্কুলের বেতন কয়েক মাসের জন্য মওকুফ করা হয়েছে, শিশুদের জন্য রাষ্ট্রের তরফ থেকে বাড়তি টাকা দেয়া হয়েছে, যাতে তারা প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পারে৷ সামগ্রিকভাবে কয়েক মাসের জন্য কেনাকাটার উপর করের হার আগের চেয়ে কমানো হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষের অর্থ খরচ কম হয়৷

মোটা দাগে বলা যেতে পারে, জার্মানি করোনাকালে দেশটিতে বসবাসরত প্রতিটি মানুষকে সুরক্ষা দিতে যথেষ্ট সক্ষম হয়েছে৷ এক্ষেত্রে অভিবাসী বা দেশটির নিজের নাগরিককে আলাদাভাবে বিবেচনা করা হয়নি৷ এমনকি দেশটিতে অবস্থানরত বিদেশি শিক্ষার্থীদেরও নানাভাবে সহায়তা করা হয়েছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ জার্মানির শিল্পকারাখানাগুলোকেও টিকিয়ে রাখা হয়েছে আর্থিক প্রণোদনার মাধ্যমে৷

এতটুকু পড়ে কেউ কেউ হয়ত ভাবতে পারেন, জার্মানি যে এত অর্থ খরচ করে সেটা আসে কোথা থেকে? ইউরোপের দেশটিতে বসবাসরত সক্ষমদের প্রায় সবাই আসলে চাকুরি বা ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ কর প্রদান করা এদেশে বাধ্যতামূলক এবং কর্তৃপক্ষ একেবারে পাই পাই হিসেব করে চাকুরিজীবী বা ব্যবসায়ী - যার ক্ষেত্রে যতটা কর প্রযোজ্য, তা আদায় করে৷ পাশাপাশি শিল্পখাতে জার্মানি অনেক সমৃদ্ধ৷ উঁচু মানের পণ্য রপ্তানিতে দেশটি বিশ্বের একেবারে উপরের সারির দেশগুলোর একটি৷ ফলে জার্মানির অর্থনীতি বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় মজবুত৷ আর সেই মজবুত অর্থনীতি দেশটির সাধারণ মানুষকে করোনার ক্ষতি বুঝতে দেয়নি৷ বরং কেউ কেউ টেরই পায়নি কত বড় এক ঝড় বয়ে গেছে তাদের উপর দিয়ে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য