1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনার তাণ্ডবেও ভোট প্রচারে রাশ টানছে না বিজেপি

১৯ এপ্রিল ২০২১

পশ্চিমবঙ্গেও করোনা দ্রুত ছড়াচ্ছে। প্রায় সব রাজনৈতিক দলই এখন প্রচারে রাশ টেনেছে। ব্যতিক্রম এখনো বিজেপি।

https://p.dw.com/p/3sD6s
পশ্চিমবঙ্গে ভোটের লাইনেও সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। ছবি: Dibyangshu Sarkar/AFP

সারা দেশের মতো পশ্চিমবঙ্গেও করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছেছে। প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। আনন্দবাজারের রিপোর্ট বলছে, গত ১৮ দিনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৫৬০ গুণ। এই অবস্থাতেও ভোট হচ্ছে। হচ্ছে রোড শো, জনসভা। লোকে ভিড় করে, করোনার তোয়াক্কা না করে, অনেক সময়ই মাস্ক ছাড়াই সেখানে জড়ো হচ্ছেন। সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই।

এই অবস্থায় বামেরা আগেই ঘোষণা করেছিল, তারা আর কোনো বড় জনসভা করবে না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারে জোর দেবে। কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, করোনা বাড়ছে দেখে তিনি আর পশ্চিমবঙ্গে জনসভা করবেন না। রোববার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কলকাতায় কোনো বড় জনসভা করবেন না। রোড শো-ও নয়। জেলায় ছোট সভা করবেন। সেখানে মিনিট পনেরো ভাষণ দেবেন।

তবে বিজেপি এরকম কোনো ঘোষণা করেনি। সোমবার ষষ্ঠ দফার ভোটের প্রচার শেষ হচ্ছে। সোমবারই পশ্চিমবঙ্গে চারটি জনসভা করছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা জনসভা ছাড়াও রোড শো করবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও জনসভা করবেন। কংগ্রেসেরও জনসভা হবে।

ঘটনা হলো, সারা দেশে করোনা পরিস্থিতি অভূতপূর্ব জায়গায় চলে গেছে। দিল্লিতে ছয়দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। মহারাষ্ট্রেও কার্যত লকডাউন চালু আছে। তাহলে মানুষের স্বাস্থ্যের সঙ্গে সমঝোতা করে কেন এভাবে প্রচার করা হচ্ছে? কেনই বা নির্বাচন কমিশন তা হতে দিচ্ছে? প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''নির্বাচন কমিশন সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল। সেখানে বিজেপি-র যুক্তি ছিল, প্রথম পাঁচ পর্বে যেভাবে প্রচার হয়েছে, বাকি পর্বেও তা হওয়া উচিত। তৃণমূল ও অন্যরা বাকি তিনটি পর্বের ভোট একসঙ্গে একদিনে করার দাবি করেছিল। সেই দাবি মানা হয়নি। কিন্তু কেউই সেখানে এভাবে প্রচার থামিয়ে পুরোপুরি ডিজিটালি প্রচার করার কথা বলেনি। বরং সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত প্রচার করা এবং তিনদিন আগে প্রচার বন্ধের প্রস্তাব সকলে সমর্থন করেছে। এখন পরে তারা কী করল তাতে কিছু যায় আসে না।''

আরেক প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত ভট্টাচার্য মনে করেন এখন একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চলছে। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ''এই অবস্থায় অবিলম্বে প্রচার বন্ধ করে দিয়ে বাকি সব পর্ব একসঙ্গে করা উচিত। কারণ, মানুষের সুরক্ষা সব চেয়ে আগে দেখা উচিত।''

জয়ন্তের মতে, রাহুল জনসভা বাতিল করেছেন ঠিকই, কিন্তু কংগ্রেসের বাকি নেতারা তো করছেন। শরদ প্রশ্ন তুলেছেন, ''মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় জনসভা করবেন না, খুবই ভালো সিদ্ধান্ত। কলকাতায় এখন বড় জনসভা কটাই বা হতো? কিন্তু তিনি জেলায় কেন এই নীতি অনুসরণ করছেন না? জেলার মানুষের কি সুরক্ষার প্রয়োজন নেই?'' তার প্রশ্ন, ''বিজেপি-ই বা আগের মতো প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে কী করে? সারা দেশে যেখানে একের পর এক রাজ্যে কড়াকড়ি হচ্ছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে এভাবে জনসভা ও রোড শো করে মানুষকে বিপদের মুখে কেন ঠেলে দেয়া হবে?''

এমন নয়, রাজ্যে করোনা হচ্ছে না। এদিনই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সব স্কুল বন্ধ করে দেয়া হবে। শিক্ষক বা ছাত্র কেউই স্কুলে যাবেন না। আরো একগুচ্ছ ব্যবস্থার কথাও ঘোষণা করতে চলেছে রাজ্য সরকার। শুধু রাশ টানা হচ্ছে না ভোটের প্রচারে, যেখান থেকে করোনা ছড়াবার ভয় খুবই বেশি।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, আনন্দবাজার)