1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনার মতো ভাইরাস প্রতিরোধ করতে প্রকৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ

১২ জানুয়ারি ২০২১

প্যারিসে ‘ওয়ান প্ল্যানেট' শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বনেতারা প্রকৃতি ও জীবজগত সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ব্যাপক উদ্যোগের ঘোষণা করছেন৷ পৃথিবীর প্রায় ৩০ শতাংশ জমি ও মহাসাগরকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3noLL
Frankreich Klimagipfel «One Planet Summit» in Paris
ছবি: Ludovic Marin/AFP/AP/dpa/picture alliance

করোনা ভাইরাসকে ঘিরে গোটা বিশ্বে সংকটের মাঝে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত হলো ‘ওয়ান প্ল্যানেট' আন্তর্জাতিক সম্মেলন৷ ভারচুয়াল প্রক্রিয়ায় তাতে অংশ নিলেন অনেক বিশ্বনেতা ও বড় কোম্পানির শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা৷ ভবিষ্যতে এমন মহামারি এড়াতে জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষা কতটা জরুরি, সে বিষয়ে তাঁরা একমত হলেন৷ মানুষ যেভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করে চলেছে, তা অবিলম্বে বন্ধ না করলে কোভিডের মতো বিপজ্জনক ভাইরাস যে সহজেই মানুষের শরীরে প্রবেশ করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে, সে বিষয়ে বিজ্ঞানীদের সতর্কবাণীকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিলেন তাঁরা৷

জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের সমর্থন নিয়ে প্যারিসে এই সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ৷ ৫০টিরও বেশি দেশ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় তাঁর পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে৷ এই পরিকল্পনার আওতায় জমি ও মহাসাগর মিলিয়ে পৃথিবীর প্রায় ৩০ শতাংশ অঞ্চলকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হবে৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ২০৩০ সালের মধ্যেই সে দেশের জমি ও সমুদ্র এলাকার ৩০ শতাংশ সংরক্ষণের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন৷ সেইসঙ্গে তিনি জীববৈচিত্র্য, প্রাণিজগতের স্বাস্থ্য, নতুন রোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য আগামী চার বছর জুড়ে বিশাল অঙ্কের অর্থ বরাদ্দের ঘোষণা করেন৷

তথাকথিত ‘থার্টি-থার্টি' উদ্যোগ গত বছর চীনের কুনমিং শহরে শুরু হবার কথা ছিল, কিন্তু করোনা সংকটের কারণে সেই সম্মেলন পিছিয়ে দিতে হয়৷ চীন এখনো সেই সম্মেলনের দিনক্ষণ স্থির করতে পারে নি৷ জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেশ নিউ ইয়র্ক থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে প্যারিসের সম্মেলনে অংশ নেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এখনো পর্যন্ত আমরা আমাদের গ্রহ ধ্বংস করে চলেছি৷ এমনভাবে আমরা সবকিছু নষ্ট করছি, যেন আমাদের হাতে বিকল্প এক গ্রহ রয়েছে৷ আমরা বায়ু, জমি ও পানি বিষাক্ত করে তুলছি এবং মহাসাগরে প্লাস্টিক ভরিয়ে দিচ্ছি৷ এবার প্রকৃতিও পালটা আঘাত করছে৷''

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে প্রকাশিত জাতিসংঘের এক রিপোর্ট অনুযায়ী মানুষের কার্যকলাপের কারণে গোটা বিশ্বের প্রায় দশ লাখ প্রজাতির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে৷ মানুষ যেভাবে নিজস্ব বাসস্থান বাড়িয়ে চলেছে এবং সর্বগ্রাসী খিদে মেটাতে প্রকৃতি ধ্বংস করে চলেছে, তার ফলে এমন সর্বনাশা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷

এতকাল এমন সাবধানবাণী সত্ত্বেও পৃথিবীর সুরক্ষার লক্ষ্যে তেমন রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখা না গেলেও করোনা সংকটের জের ধরে অনেক দেশ নড়েচড়ে বসছে৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ প্রসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার উপর জোর দেন৷ তবে সেইসঙ্গে প্রকৃতি সংরক্ষণ না করলে লক্ষ্য পূরণ করা যাবে না বলে তিনি সম্মেলনে মন্তব্য করেন৷

সম্মেলনে অংশ নিয়ে শীর্ষ নেতারা জলবায়ু সংকট মোকাবিলাও পরিবেশের ক্ষয় রুখতে প্রায় ১,৪৩০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ের অঙ্গীকার করেন৷ যেমন ‘গ্রেট গ্রিন ওয়াল' প্রকল্পের আওতায় আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে কয়েক হাজার কিলোমিটার জুড়ে বিশাল আকারে বৃক্ষরোপণ করা হবে৷ আগামী নভেম্বর মাসে গ্লাসগো শহরে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে এই উদ্যোগের খতিয়ান নেওয়া হবে৷

এসবি/কেএম (এএফপি, ডিপিএ)