1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনা টিকার মেধাসত্ত্ব প্রত্যাহার প্রশ্নে বাইডেন

৬ মে ২০২১

বিশ্বজুড়ে করোনা সংকটের আরও দ্রুত মোকাবিলা করতে করোনা টিকার মেধাসত্ত্ব প্রত্যাহারের দাবির প্রতি সমর্থন জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন৷ টিকা কোম্পানিগুলি অবশ্য এর বিরোধিতা করেছে৷

https://p.dw.com/p/3t1Tw
USA | COVID-19-Impfprogramm | Joe Biden Rede
ছবি: Evan Vucci/AP Photo/picture alliance

গত বছর বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার সময় একমাত্র টিকার মাধ্যমে এমন সংকট থেকে রেহাই পাবার আশা প্রকাশ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা৷ তারপর অভূতপূর্ব গতিতে একের পর এক কোম্পানি করোনা প্রতিষেধক আবিষ্কার করে জনজীবন স্বাভাবিক করার পথ সুগম করে দেয়৷ অনুমোদন, উৎপাদন, রপ্তানি, সত্ত্ব নিয়ে জটিলতার মতো নানা চ্যালেঞ্জের কারণে এখনো পর্যন্ত যথেষ্ট সংখ্যক মানুষ করোনা টিকা পান নি৷ মূলত ধনী দেশগুলিই দুর্লভ টিকার সিংহভাগ দখল করে বসে রয়েছে৷ অথচ মানবজাতি দ্রুত এই রক্ষাকবচ না পেলে ভাইরাস আরও রূপান্তর ঘটিয়ে প্রাথমিক সাফল্যকে ম্লান করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ এমনই প্রেক্ষাপটে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ একশোরও বেশি দেশ করোনা টিকার পেটেন্ট বা মেধাসত্ত্ব সাময়িক প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে৷ এমনটা সম্ভব হলে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যে কোনো কোম্পনি বিনা জটিলতায় সেই টিকা উৎপাদন করতে পারবে৷

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এবার এমন উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানালেন৷ অথচ  অতীতে প্রায় সব মার্কিন প্রশাসনই যে কোনো অবস্থায় মেধাসত্ত্ব শিথিল করার তীব্র বিরোধিতা করেছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ মধ্যস্থতাকারী ক্যাথারিন টাই এমন অবস্থানের ব্যাখ্যা করে বলেন, বিশ্বজুড়ে এমন স্বাস্থ্য সংকটের ফলে যে অসাধারণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার মোকাবিলা করতে অভূতপূর্ব পদক্ষেপ নিতে হবে৷ তার আশঙ্কা, ভারতে বর্তমানে বিশাল আকারে করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের ফলে মিউটেশনের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের এমন সংস্করণ সৃষ্টি হতে পারে, যেগুলি টিকা উপেক্ষা করে ছড়িয়ে পড়তে পারে৷

বলা বাহুল্য, টিকা প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলি এমন উদ্যোগের বিরোধিতা করছে৷ তাদের যুক্তি, টিকা আবিষ্কার এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী টিকার ক্রমাগত নবায়নের জন্য গবেষণায় বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়৷ একমাত্র বাণিজ্যিক স্বার্থেই এমন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা সম্ভব৷ মেধাসত্ত্বের উপর কোম্পানির অধিকার প্রত্যাহার করলে বাজার থেকে সেই অর্থ সংগ্রহের উপায় থাকবে না৷ তাছাড়া উন্নয়নশীল দেশগুলিতে টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যে দুশোরও বেশি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে৷ ফলে টিকা তৈরির কাঁচামালসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সমন্বয় নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে বলে ওষুধ কোম্পানিগুলি দাবি করছে৷ উল্লেখ্য, বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের খবর প্রকাশিত হবার পর পুঁজিবাজারে মডার্না ও নোভাভ্যাক্স কোম্পানির দরপতন ঘটেছে৷ অ্যামেরিকার ওষুধ কোম্পানিগুলি সম্মিলিতভাবে এমন সিদ্ধান্ত প্রতিরোধ করবে বলে জানিয়েছে৷

মার্কিন প্রশাসনের নীতিগত সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও এমন উদ্যোগ কার্যকর করতে অনেক মাস সময় লাগবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ তাছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৬৪টি সদস্য দেশের মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলাও সহজ কাজ নয়৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্রিটেন এখনো সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেয় নি৷ এমন মূল্যবান সময় নষ্ট না করতে বাইডেন প্রশাসন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে টিকা উৎপাদন বাড়ানো ও টিকা তৈরির কাঁচামাল সরবরাহ তরান্বিত করার উদ্যোগ নিচ্ছে৷

এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)