1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কর্নেল তাহের ‘হত্যাকাণ্ড’

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২১ মে ২০১৩

কর্নেল তাহেরের ভাই ড. আনোয়ার হোসেন একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে ইতিহাসের কালো অধ্যায় উন্মেচনের দাবি জানিয়েছেন৷ বলেছেন, তাহেরের মতো আর কাউকে যেন গোপন সামরিক ট্রাইব্যুনালে বিচারের নামে হত্যার সুযোগ না থাকে৷

https://p.dw.com/p/18b63
Ein nachgebauter Galgen steht am Freitag (19.02.2010) im Eingangsbereich des Neanderthal Museums in Mettmann. Er gehört zu der Sonderaustellung "Galgen, Rad und Scheiterhaufen", die bis zum 27. Juni 2010 Einblicke in den gruseligen Leistungskatalog der Strafen und seine Orte im 17. Jahrhundert gibt. Foto: Roland Weihrauch dpa/lnw (zu KORR:" Henker, Beil und Galgen - Museum zeigt das Grauen")
ছবি: picture-alliance/dpa

সেক্টর কমান্ডার লে. কর্নেল আবু তাহেরের গোপন বিচার অবৈধ এবং বেআইনি ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে সোমবার৷ তাতে বলা হয়েছে জিয়াউর রহমান আগেই তাহেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ব্যাপরে মনস্থির করেছিলেন৷ অর্থাৎ, তাহেরকে ট্রাইব্যুনালে বিচারের নামে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়৷

১৯৭৬ সালের ১৪ই জুন সেই ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়৷ আর ১৭ই জুলাই দেয়া হয় মৃত্যুদণ্ডের রায়৷ যা কার্যকর করা হয় ২১শে জুলাই৷ অবাক করা ব্যাপার হলো, ট্রাইব্যুনালের আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংযোজন করা হয় ৩১শে জুলাই, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর৷ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর, সামরিক বাহিনীতে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থান হয়৷ এরই এক পর্যায়ে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের ক্ষমতাগ্রহণের পর, তাহেরসহ ১৭ জনকে শাস্তি দেয়া হয়৷ প্রসঙ্গত, জিয়াউর রহমানকে কর্নেল তাহেরই বন্দিদশা থেকে উদ্ধার করেছিলেন৷

Abu Taher Colonel Bangladesh
সেক্টর কমান্ডার লে. কর্নেল আবু তাহেরছবি: public domain

একই ট্রাইব্যুনাল তাহেরের ছোট ভাই অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেকেও ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়৷ তার মধ্যে আনোয়ার হোসেনকে প্রায় ১০ বছর জেল খাটতে হয়৷ তিনি এখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, তাহেরকে যিনি হত্যা করেছেন তার বিচার এখন আর সম্ভব নয়৷ কারণ এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান এখন আর বেঁচে নেই৷ বাংলাদেশের আইনে মৃত ব্যক্তির বিচার চলে না৷ তবে সেই ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুল আলি এখনও বেঁচে আছেন৷ আদালত তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে তাকে বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন৷

ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর, জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে সমারিক বেসামরিক শত শত লোককে হত্যা করা হয়েছে৷ অনেক সেনা সদস্যকে খুঁজেও পাওয়া যায়নি৷ এই কালো অধ্যায় জাতির সামনে পুরোপুরি উন্মোচন করা প্রয়োজন৷ এ জন্য তিনি একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানান৷ এই কমিশন ঐ সময়কালের সব ঘটনার তদন্ত করলে জাতি নির্মম হত্যাকাণ্ড, সামরিক কর্মকর্তা ও সেনা নিধনের কালো অধ্যায়ের কথা জানতে পারবে৷ স্বজন হারনো অনেক পরিবার আইনের আশ্রয় নিতে পারবে৷ জানা যাবে কারা দেশদ্রোহী আর কারা দেশ প্রেমিক৷ তিনি বলেন, কোনো গোপন বা সামরিক ট্রাইব্যুনালের বিচার সর্বোচ্চ আদালতের অনুমোদন ছাড়া কার্যকর করা যাবে না বিধান রেখে এই আইন প্রণয়ন করতে হবে৷ বিশেষ করে মৃত্যুদণ্ডের ক্ষেত্রে এই ‘রক্ষা কবচ' রাখতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কাউকে এহেন প্রহসনধর্মী বিচারের মাধ্যমে হত্যা করা না যায়৷

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং বিচারপতি শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ তাহেরের পরিবারের রিট আবেদনের পর, গোপন বিচারকে অবৈধ বলে রায় দেয় ২০১১ সালের ২২শে মার্চ৷ সোমবার প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে তাহেরসহ সেই আদালতে দণ্ডপ্রাপ্তদের দেশদ্রোহী নয়, দেশপ্রেমিক ঘোষণার আদেশ দেয়া হয়েছে৷ আর পরিবারের সদস্যদের সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথাও বলা হয়েছে ৷ অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো কারা ইতিহাসের নায়ক আর কারা খলনায়ক৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য