1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতিও খনি-বিরোধীদের টলাতে পারছে না

২০ আগস্ট ২০২১

স্পেনের কাসেরেস অঞ্চলের প্রস্তাবিত লিথিয়াম খনি প্রকৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে হুমকির মুখে ফেলবে বলে চলছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ৷ অন্যদিকে ইউরোপের স্বনির্ভরতার ক্ষেত্রে এই প্রকল্পের অসীম গুরুত্ব রয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3zCcT
Spanien | Streit um Lithium-Mine in Extremadura
ছবি: Markus Böhnisch/DW

লিথিয়াম খনি তৈরি করতে ইচ্ছুক কোম্পানি স্পেনের কাসেরেস অঞ্চলে স্থানীয় পর্যায়ে এক হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে৷ তার মধ্যে ২১৮টি চাকুরি সরাসরি খনিতেই সৃষ্টি হবে৷ কাসেরেস অঞ্চলে বেকারত্বের হার বেশি হওয়া সত্ত্বেও বেশিরভাগ মানুষ সেই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে সন্দিহান৷ পাহাড় বাঁচাও আন্দোলনের প্রতিনিধি খুস্তিনা পেরেস বলেন, ‘‘এখানে যন্ত্রপাতি, লরি বা বিস্ফোরক ব্যবহার জানে এমন বিশেষজ্ঞ নেই৷ রসায়ন বিশেষজ্ঞেরও অভাব রয়েছে৷ তাহলে কে কাজ করবে? বর্তমানে যারা বেকার, তারা তো সেখানে কাজ করবে না৷ বাইরে থেকেই শ্রমিক-কর্মী আসবে৷''

এই প্রকল্পের কারণে সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি অনেক স্থানীয় মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে৷

মানোলো সানচেস নিজের জমিতে মাইনিং কোম্পানির কর্মীদের গাছ কাটার সময় হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলেন৷ ৪০০ ইউরো দিয়ে তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা হয়েছিল৷ অনুমতি ছাড়াই তারা পাথরের নমুনা চাইছিল৷ মানোলো বলেন, তিনি তাদের চলে যেতে বলেছিলেন৷ চাইলে তিনি পুলিশে রিপোর্ট করতে পারতেন৷

মানোলোসানচেসের বাড়ি একেবারে প্রসেসিং প্লান্টের পাশে থাকার কথা৷ তিনি এই বাড়িতেই ছেলেবেলা কাটিয়েছেন৷ কেউ তাঁকে খনির পরিকল্পনা সম্পর্কে জানায় নি৷ তাঁর কাছে এই উদ্যোগ বড় হুমকি৷ সানচেস বলেন, ‘‘এর ফলে আমিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি৷ হয়তো তারা আমাকে উচ্ছেদ করবে৷ সহজ অথবা কঠিন পথে ওরা আমাকে তাড়িয়ে দেবে৷ না যেতে চাইলে হয়তো পুলিশ বাহিনী কাজে লাগিয়ে আমাকে তাড়িয়ে দেবে৷ তারপর যন্ত্র এসে আমার বাড়ি ভেঙে দেবে৷''

লিথিয়াম খনিকে ঘিরে বিভক্ত স্পেনের জনতা

মানোলো সানচেস পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ঝুঁকি নিয়েও উদ্বিগ্ন৷ মাইনিং বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরোপুরি মাটির নীচে খনির পরিকল্পনা করলে ধুলা নির্গমন অথবা ভূগর্ভস্থ পানির ঝুঁকি আরও এড়ানো সম্ভব৷ এই মুহূর্তে সেই পরিকল্পনা নেই৷ তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইউরোপে লিথিয়াম উত্তোলন করলে বিশাল সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে৷ মাইনিং বিশেষজ্ঞ মার্টিন ব্যার্টাউ বলেন, ‘‘পরিবেশ ও জলবায়ুর জন্য কিছু করতে চাই, অথচ ইউরোপে সবকিছু পরিষ্কার রেখে চিলির মতো দেশের প্রকৃতি নষ্ট করে দেবো – এমনটা বললে চলবে না৷ সেটা মোটেই ন্যায় এবং সততার পরিচয় নয়৷ এভাবে পরিবেশ সংরক্ষণ বা আন্তর্জাতিক দায়িত্ববোধ পালন করা সম্ভব নয়৷ ইউরোপে অনেক বিশেষজ্ঞ আছেন৷ আমরা মাইনিংয়ের নতুন প্রক্রিয়া তৈরি করতে পারি৷ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এমন সম্পদ প্রক্রিয়াজাতকরণ করতে পারি, যাতে পরিবেশের ক্ষতি না হয়৷ সে রকম প্রযুক্তি রপ্তানিও করতে পারি৷''

কাসেরেসের মানুষ নিজেদের দোরগড়ায় সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে মোটেই আগ্রহী নন৷ গনসালো পালোমো বলেন, ‘‘যে শিল্প জমা পানি বা বায়ুমণ্ডল দূষিত করতে পারে, বিকট শব্দ করে, আমাদের ঐতিহ্য ও এই নিসর্গ নষ্ট করতে পারে, সেটি আমাদের জীবনযাত্রার সঙ্গে মোটেই খাপ খায় না৷''

সম্প্রতি প্রাদেশিক সরকার সেখানে সম্পদ উত্তোলনের অনুমতি দিতে অস্বীকার করেছে৷ কিন্তু এক্সত্রেমাদুরা মাইনিং কোম্পানি প্রয়োজনে আদালতে সেই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে প্রস্তুত৷

গনসালো পালোমো ও কাসেরেসের অন্যান্য বাসিন্দা আইনি সংগ্রমে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে অত্যন্ত সন্দিহান৷

ইওয়ানা গটশাল্ক/এসবি