1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রতিবাদের নামে সহিংসতা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৩ ডিসেম্বর ২০১৩

জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর সহিংসতায় এ পর্যন্ত পাঁচ জন নিহত হয়েছেন৷ দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক অবরোধ করে, সেতু ভেঙে, গাড়ি পুড়িয়ে চালানো হচ্ছে নাশকতা৷ আতঙ্কে আছেন সংখ্যালঘুরা৷

https://p.dw.com/p/1AYmW
Bangladesch Abdul Quader Mollah Hinrichtung Unruhen in Dhaka 13.12.2013
ছবি: DW/M. Mamun

দেশের দক্ষিণের জেলা সাতক্ষীরায় প্রশাসনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই৷ পুরো জেলাকে বিচ্ছিন্ন করে সেখানকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে জামায়াত-শিবির৷ কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেয়ার পর সেখানে দু'জন আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে৷ একইভাবে সিলেট, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, বগুড়াসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক-মহাসড়কে কাছ কেটে অবরোধ তৈরি করা হয়েছে৷ আর গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার সংখ্যালঘুরা আতঙ্কে আছেন৷ কেউ কেউ বাড়ি ঘর ছেড়ে চলে গেছেন৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিৃবতিতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার আশঙ্কা করে তাদের নিরাপত্তা দেয়ার দাবি জানিয়েছে৷ আর ঢাকার মতিঝিল, ফকিরাপুল ও কমলাপুর এলাকায় হঠাত্‍ নাশকতা চালিয়ে গাড়ি ও দোকানপাট পোড়ানো হয়েছে শুক্রবার দুপুরের পর৷

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহেদুল আনাম খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জামায়াত একটি প্রকাশ্য রাজনৈতিক দল হলেও তারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে প্রতিবাদ করছে৷ আর এটা তারা করছে বেশ কিছুদিন ধরেই৷ সাঈদীর ফাঁসির রায় হওয়ার পরও তারা সারাদেশে ব্যাপক সহিংসতা চালায়৷ এটা বাংলাদেশ এবং সরকারের জন্য এক নতুন পরিস্থিতি৷''

তিনি জানান, সন্ত্রাসী সংগঠন সুনির্দিষ্ট টার্গেটে হামলা চালায়৷ কিন্তু জামায়াত-শিবিরের এই হামলা সবখানে৷ যা আরো ভয়ংকর৷ এজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দাদের আরো সতর্ক এবং সক্রিয় হওয়া দরকার৷ কারণ তাদের হামলার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ৷

কাদের মোল্লার ফাঁসির কারণে বাংলাদেশে জঙ্গি তত্‍পরতা বাড়তে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘জামায়াত ইতিমধ্যেই জঙ্গি আচরণ করছে৷ এখন তারা যদি পুরোপুরি জঙ্গি হয়ে যায় সেটা তাদের ব্যাপার৷ তাই বলে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদেরতো আর ছেড়ে দেয়া যায় না৷ সরকারকেই সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা যেমন নিশ্চিত করতে হবে তেমনি অপশক্তিকে রুখতে হবে৷''

জঙ্গি বিষয়ক গবেষক শরীফ এ কাফি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনি অঙ্গীকার৷ দেশের মানুষ এজন্য তাদের ভোট দিয়েছে৷ কিন্তু বিচারের ব্যাপারে রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়তে পারেনি সরকার৷ বিএনপি যুদ্ধাপরাধের বিচারের কথা প্রকাশ্যে বললেও নানা শর্ত জুড়ে দিয়ে তারা আসলে এটাকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে৷ এর কারণ জামায়াত৷ বিএনপির পক্ষে জামাতের চাপ এড়ানো সম্ভব নয়৷''

তিনি বলেন, ‘‘সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মাঠে না থাকলেও জামায়াত-শিবির সহিংসতা চালাচ্ছে দেশজুড়ে৷ আর এখন তাদের নেতার ফাঁসির প্রতিবাদে তারা আরো বেশি সহিংসতা চালাবে এটাই স্বাভাবিক৷ জামায়াত তার ১২ হাজার কোটি টাকার সম্পদ এবং জনবল নিয়ে চরম প্রতিশোধ নিতে চাইবে৷''

Bangladesch Abdul Quader Mollah Hinrichtung Unruhen in Dhaka 13.12.2013
জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর সহিংসতায় শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পাঁচ জন নিহত হয়েছেনছবি: DW/M. Mamun

সরকারের এই বিষয়টি জানা থাকলেও সরকারের পুলিশ, প্রশাসন বা গোয়েন্দারা সাধারণ মানুষকে রক্ষায় এখনো কার্যকর ভূমিকা নিতে পারছে না বলে মনে করেন এই গবেষক৷ তবে তিনি বলেন, ‘‘কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার মধ্য দিয়ে সরকার সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে৷''

শরীফ এ কাফি বলেন, ‘‘জামায়াত-শিবির সন্ত্রাস করবে তাই যুদ্ধাপরাধের বিচার করা যাবে না এটা কোনো যুক্তি নয়৷ জামায়াত নেতার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় একাত্তরে যেসব দেশ বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তাদের আঁতে ঘা লেগেছে৷ তাই স্বাভাবিক কারণেই তারা বিষয়টিকে সহজভাবে নেবে না৷ এই বিষয়টি সরকারকে মনে রাখতে হবে৷''

শাহেদুল আনাম খান এবং শরীফ এ কাফি দুজনই মনে করেন, জামায়াত তার সহিংস তত্‍পরতা নিয়ে কতদূর এগোতে পারবে তাও দেখার বিষয় আছে৷ কারণ সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর তারা যে মাত্রায় সহিংসতা চালাতে সক্ষম হয়েছিল এবার এখন পর্যন্ত তারা সেই মাত্রায় যেতে পারেনি৷ এর কারণ আগের অভিজ্ঞতা থেকে সরকার পূর্ব-প্রস্তুতি নিয়েছে৷ কিন্তু যা নিয়েছে তা যথেষ্ট নয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য