কান্না দিয়ে শুরু, শেষ হাসিতে
৭ জুন ২০১৩জার্মানির বন শহরের এরিখ ক্যাস্টনার স্কুলের শিক্ষিকা গাব্রিয়েলা শেফারকে শুধু পলিনদের মিষ্টি কথায় মন ভোলালেই চলেনা, যে ছেলেটি ‘সানগ্লাসটা পচা' বলে এক সহপাঠীকে কাঁদিয়েছে, তাকেও বোঝাতে হয়, ‘‘এমন কথা বলতে হয় না৷ বন্ধু কষ্ট পায়৷''
‘থ্রি এ' ক্লাসে ১২টি দেশের ২৩টি পুঁচকে৷ ভাষা অনেক, সংস্কৃতির বৈচিত্র অনেক, সমস্যা অনেক, সব সমস্যা সমাধান করে কচিকাঁচাদের মুখে হাসি ফোটানোর আনন্দও অনেক৷ দিনশেষে গাব্রিয়েলা শেফারদের সেই হাসিটুকুই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি৷
‘‘আমি এসেছি ইংল্যান্ড থেকে৷ আমার বাবা নেদাল্যান্ডসের, মা দক্ষিণ আফ্রিকার আর বোন জার্মানির'' – ‘থ্রি এ' ক্লাসের লিওর কথা শুনলেই বুঝবেন জার্মানির স্কুলগুলোতে কত কাঠ-খর পুড়িয়ে ছেলে-মেয়েদের তৈরি করতে হয়৷ স্বকীয়তা ধরে রেখে সম্প্রীতির পথে পা বাড়ানোর জন্য দ্বিতীয় ভাষা শেখার ব্যবস্থা আছে, যার মূল কথা, ‘‘তোমার নিজের ভাষা থাকবে, সঙ্গে একটা নতুন ভাষাও শেখো৷'' আছে ‘জার্মান অ্যাজ আ সেকেন্ড ল্যাংগুয়েজ' (জিএসএল) শেখার ব্যবস্থা৷ ভাষা বৈচিত্রে হাবুডুবু খাওয়া এড়াতেই জার্মান শেখানো৷ তো এমন কঠিন সমন্বয়কে কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখে কাজ চালাতে হবে তা একটু দেখিয়ে দেন মার্কুস ভল্ফ৷ স্কুলে ঢোকার মুখেই একপাশে বিশাল এক ঘর৷ সেখানে নানা রকমের বই আর বই৷ শিক্ষক-শিক্ষিকারা কিছু বিষয় বুঝতে চাইলে আছেন মার্কুস আর তাঁর বই, ছেলে-মেয়েদের কোনো বিষয় খটমটো লাগলে কোনো চিন্তা নেই৷
ভিক্টর বেশ ভালো জার্মান শিখেছে৷ এখন শিখতে হচ্ছে চীনা ভাষা৷ কিছু দিনের মধ্যেই নিজের দেশে ফিরে যেতে হবে যে! ইরানি বাবা আর ইরাকি মায়ের সন্তান এমরে থাকছে জার্মানিতেই৷ তাই এলিয়াস আর লিওদের মতো ভালো জার্মান জানার গর্ব নিয়ে নতুন দেশে নতুন নতুন বিষয় শিখে যাচ্ছে মনের আনন্দে৷ জীবনে হাসি-আনন্দ তো থাকতেই হবে, তাই বলে ভালো কিছু করতে হলে লেখাপড়া শিখে বড় হওয়ার গুরুত্বও তো অস্বীকার করা যায়না!