1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কারামুক্তি উদযাপনের অনুষ্ঠানে থাকছেন না ম্যান্ডেলা

১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০

২০ বছর আগে ঠিক এই দিনেই দীর্ঘ কারাবাসের পর মুক্তি পেয়েছিলেন বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা৷

https://p.dw.com/p/LyYY
বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলাছবি: AP

ম্যান্ডেলার কারামুক্তি দিবসটি দক্ষিণ আফ্রিকায় রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয় এবং সেই অনুষ্ঠানমালায় যোগ দিয়ে ভক্ত-অনুসারীদের অনুপ্রাণিত করে থাকেন তিনি৷ কিন্তু দেশটির সরকার জানিয়েছে, এবার দুই দশক পূর্তির অনুষ্ঠানে থাকছেন না ম্যান্ডেলা৷

দীর্ঘ ২৭ বছর কারাবাসের পর ১৯৯০ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি কারামুক্ত হয়ে ঐতিহাসিক স্বাধীনতার পদযাত্রায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ম্যান্ডেলা৷ শুধু দক্ষিণ আফ্রিকাই নয় সেসময়ে তাঁর ওই দৃপ্ত প্রত্যয় কাঁপিয়ে দিয়েছিল পুরো বিশ্বকে৷ দুই দশক পরও এই সংগ্রামী নেতা স্মরণীয় বিশ্বজুড়ে৷ কিন্তু, ৯১ বছর বয়সি এই প্রবীণ রাজনীতিক এখন নিভৃতে অবসর কাটাতেই ভালবাসেন৷

Flash-Galerie Nelson Mandela
১৯৯০ সালে কেপ টাউন-এর কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর, প্রাক্তন স্ত্রী উইনি ম্যান্ডেলা’র সঙ্গে নেলসনছবি: AP

দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) জানিয়েছে, পার্ল শহরের কাছে ভিক্টর ভার্সটার কারাগারে কারামুক্তি দিবসের অনুষ্ঠানে এবার যোগ দিচ্ছেন না ‘মাদিবা'৷ ম্যান্ডেলা দেশের মানুষদের কাছে তাঁর গোত্র-নাম ‘মাদিবা' হিসেবেই পরিচিত৷

এক বিবৃতিতে দলটি জানায়, ‘‘মাদিবা একমাত্র যে কর্মসূচিতে অংশ নেবেন তা হল ‘স্টেট অফ দ্য নেশন' বক্তৃতা দেওয়া, যা সন্ধ্যায় পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত হবে৷'' বিবৃতিতে আরও জানানো হয় একইদিনে পার্লামেন্ট অধিবেশনের শুরুতে ভাষণ দেবেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা৷

Flash-Galerie 20. Jubiläum der Freilassung Nelson Mandelas
জেলখানার এই ঘরটিতে দীর্ঘ দিন কাটিয়েছিলেন ম্যান্ডেলাছবি: cc-by-sa- Paul Mannix

তবে, ম্যান্ডেলা না থাকলেও ঐতিহাসিক ওই পদযাত্রাকে স্মরণ করতে আধ কিলোমিটারের একটি প্রতীকী পদযাত্রায় অংশ নেবেন তাঁর সাবেক স্ত্রী উইনি মাদিকিজেলা ম্যান্ডেলা৷ কারামুক্তির সময়ে উইনির হাতে হাত ধরেই ম্যান্ডেলা ওই পদযাত্রায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন৷

বর্ণবাদ বিরোধী সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৯৯৪ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ম্যান্ডেলা৷ এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে বর্ণবাদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠার অবসান ঘটে৷ অত্যন্ত বিচক্ষণতা এবং সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়ে তখনকার ৭১ বছর বয়সি এই নেতা জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে পুরো দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষদের প্রাণপুরুষ হিসেবে আবির্ভূত হন৷ কিন্তু ১৯৯৯ সালেই প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরে দাঁড়ান ম্যান্ডেলা৷

Südafrika Mandela Mbeki
নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট থাবো এমবেকি ও আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস-এর প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা৷ছবি: AP

১৯৯৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার সহ চারদশক ধরে প্রায় ২৫০টিরও বেশি সম্মাননা ও পদকে ভূষিত হন ম্যান্ডেলা৷ প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও দীর্ঘদিন রাজনীতি ও জনজীবেন সক্রিয় ছিলেন তিনি৷ বারবারই বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন তিনি৷ কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে জনজীবনের অন্তরালে চলে যেতে শুরু করেন এই সংগ্রামী নেতা৷ তাঁর শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে খবর প্রকাশিত হতে থাকে৷

তবে, নেলসন ম্যান্ডেলা ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, চলাফেরার জন্য একটি হুইল চেয়ার ব্যবহার করলেও ম্যান্ডেলার শারীরিক অবস্থা এখনও বেশ ভাল৷ পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক খবরাখবর এবং হালহকিকত সম্পর্কেও নিয়মিতই খোঁজখবর রাখেন এবং প্রতিদিনই প্রায় চারটি পত্রিকা পড়েন ম্যান্ডেলা৷

প্রতিবেদন : মুনীর উদ্দিন আহমেদ

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক