1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাস্ত্রোর কিউবায় ইকোটুরিজম

১১ ডিসেম্বর ২০১৬

কিউবার মানুষ যখন ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যুতে শোকাহত, তখন একটি পথিকৃৎ পুনর্বনানীকরণ প্রকল্প দেশটির সমাজতান্ত্রিক ঐতিহ্য ও অজানা ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ, দু'টোই তুলে ধরেছে৷

https://p.dw.com/p/2TxOS
কিউবা
ছবি: Greg Norman

কিউবার শহরটিকে দেখলে বিগত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকের কথা মনে পড়তে পারে৷ সারি বাঁধা সাদা সাদা কাঠের বাড়ি দু'পাশে সবুজ পাহাড়ে ঢালে উঠে গেছে৷ ঘোড়ার টানা টাঙ্গা গাড়ি, ভিনটেজ মার্কিন মোটরকার আর রাশিয়ান লাডা গাড়ি চলেছে আধভাঙা রাস্তা দিয়ে৷

রাজধানী হাভানা থেকে গাড়িতে মাত্র ৪০ মিনিটের পথ, অথচ যেন সম্পূর্ণ আলাদা একটা জগৎ৷ গাড়ির আওয়াজ, ডিজেলের ধোঁয়া কিংবা গানবাজনার উৎপাত নেই৷ কিন্তু লাস টেরাজাস চিরকাল এরকম পিকচার পোস্টকার্ডের মতো ছিল না৷ ১৯৫৯ সালের কমিউনিস্ট বিপ্লবের পর এলাকার হতদরিদ্র অবস্থা ছিল; চতুর্দ্দিকের গাছপালা কেটে ফেলে কফি বিনের চাষ করা হচ্ছিল

তার দশ বছরের মধ্যেই লাস টেরাজাস-এ একটি আনকোরা সামাজিক তথা পরিবেশগত এক্সপেরিমেন্ট শুরু হয়৷ সরকারি আবাসন, হ্রদ ও আপামর জনতার নিজের হাতে করা একটি পুনর্বনানীকরণ প্রকল্প এলাকাটির চেহারাই বদলে দেয়৷ হাজার হাজার হেক্টার জুড়ে ৬০ লাখ গাছ লাগানো হয়৷ ন্যাড়া পাহাড়ের ঢালগুলি ইউনেস্কোর পৃষ্ঠপোষকতা-ধন্য একটি সুরক্ষিত বায়োস্ফিয়ারে পরিণত হয়৷

সবুজের সঙ্গে ফিরে আসে বন্য পশুপাখি৷ আজ শকুনরা আকাশে চক্কর দেয়, মাটিতে ফুরুৎ ফুরুৎ করে ওড়ে সবুজ ফ্লাইক্যাচার, শোনা যায় কিউবার জাতীয় পক্ষী টোকোরোকোর ডাক সেডার গাছ আর জবাফুলের ঝোপ থেকে৷ এ সবই সম্ভব হয়েছে পরিকল্পনা, যোজনা আর শৃঙ্খলা থেকে৷ এখানে নতুন বাড়ি তৈরি করতে গেলে অথবা বাড়ি বাড়াতে গেলে কেন্দ্রীয় প্ল্যানিং কমিটির কাছে যেতে হয়৷ তাই ৮০টি বাড়ি ও ১২৭টি ফ্ল্যাটে মোট ১,০০০ মানুষ বাস করেন, ভাগাভাগি না করলে যা সম্ভব নয়৷

বাড়ি বানানোর উপর নিষেধাজ্ঞা যাতে জঙ্গল না কাটা হয়৷ লাস টেরাজাসের বাসিন্দারা জঙ্গলকে টেকসই ভাবে ব্যবহার করেন৷ গাছ থেকে আসে ফল ও ওষধি৷ জঙ্গলের একটা বিশেষ এলাকা থেকে কাঠ কাটা হয়৷ কিন্তু কোনো একটি গাছ কাটলে আবার একটি গাছ লাগানো হয়৷ এভাবেই চলে ১৯৯১ সাল অবধি, যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ে৷ তার পরে পর্যটকদের টানার চেষ্টা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না৷

সেযাবৎ শুধু হোটেল, রেস্টুরেন্ট বা কফিশপ নয়, যুক্ত হয়েছে একটি জিপ লাইন, লেকের জলে বোটিং, শিল্পী ও শিল্পকলা, কিউবার সেরা নিরামিষ খাবার – অন্তত লোকে তাই বলে৷ কিন্তু টুরিস্টরা আসেন প্রধানত ওয়াইল্ডলাইফ, অর্থাৎ জঙ্গলের প্রাণীদের দেখতে৷ লাস টেরাজাসের জঙ্গলে মোট ১৩১ ধরনের পাখি দেখতে পাওয়া যায়৷ ওদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের অধিকাংশ আজ প্রকৃতি সংরক্ষণের পরিবর্তে ইকো টুরিজমেই কাজ করেন৷

এভাবেই লাস টেরাজাসে আধুনিক পর্যটন শিল্প আর কিউবার চিরাচরিত জীবনধারাকে পাশাপাশি দেখতে পাওয়া যাবে৷ কিন্তু ফিদেল আর নেই, ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন৷ লাস টেরাজাসকে এবার কি ধরনের পরিবর্তনের মুখোমুখি হতে হবে, কে জানে৷

গ্রেগ নর্মান/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য